বঙ্গবন্ধু বিপিএল : রাজশাহীকে প্রথম হারের স্বাদ দিলেন সেঞ্চুরি বঞ্চিত মুশফিকুর

0
330

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ৫১ বলে ৯৬ রানের ইনিংসে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেটে রাজশাহী রয়্যালসকে প্রথম হারের স্বাদ দিলো খুলনা টাইগার্স। চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ও টুর্নামেন্টের নবম ম্যাচে খুলনা টাইগার্স ৫ উইকেটে হারিয়েছে রাজশাহীকে। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিকের ৫০ বলে ৮৭ রানের সুবাদে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৮৯ রান করে রাজশাহী। জবাবে মুশফিকের ব্যাটিং নৈপুন্যে ২ কল বাকী রেখেই টানা দ্বিতীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে খুলনা। বিপিএল এটি খুলনার দ্বিতীয় ম্যাচ ছিলো। ৩ খেলায় ২ জয় রয়েছে রাজশাহীর।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং-এর সিদ্বান্ত নেয় খুলনা টাইগার্স। ব্যাট হাতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় রাজশাহী। পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরের বলে ১ রান করে ফিরেন আফগানিস্তানের হযরতউল্লাহ জাজাই। এরপর শুরুর ধাক্কা দলকে ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন ওপেনার লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। কিন্তু ভালো শুরুর পরও দু’জনের কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। লিটন-আফিফ ১৯ রান করে থামেন। লিটন ১টি করে চার-ছক্কায় ১৬ বলে ও আফিফ ২টি ছক্কায় ১৭ বলে নিজেদের ছোট্ট ইনিংস দু’টি সাজান।
তবে চার নম্বরে বড় ইনিংস খেলেছেন রাজশাহীর মালিক। এক প্রান্ত আগলে দ্রুততার সাথেই দলের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে ক্রিজে মালিকের সঙ্গী হন ইংল্যান্ডের রবি বোপারা। ব্যাট হাতে মালিক ছিলেন বিধ্বংসী। বোপারা বিধ্বংসী না থাকলেও মারমুখী মেজাজেই ছিলেন। তাই দু’জনের ব্যাটিং নৈপুন্যে বড় সংগ্রহের পথ পেয়ে যায় রাজশাহী।
পাশাপাশি সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগে মালিকের। ৩৪ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া মালিক তিন অংকে পা দিতে ব্যর্থ হন। ইনিংসের ৯ বল বাকী থাকতে ব্যক্তিগত ৮৭ রানে থামেন মালিক। আমিরের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। তার ৫০ বলের ইনিংসে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিলো। বোপারার সাথে ৬১ বলে ১০৬ রানের জুটি গড়েন মালিক।
শেষ দিকে, ৬ বল খেলে ১টি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত ১৩ রান করেন রাজশাহীর অধিনায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল। ২টি করে চার-ছক্কায় ২৬ বলে অপরাজিত ৪০ রান করেন বোপারা। ফলে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৮৯ রানের বড় সংগ্রহ পায় রাজশাহী। এবারের বিপিএলে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। খুলনার আমির ৩৬ রানে ২টি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৯০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দ্রুতই দুই ওপেনারকে হারায় খুলনা। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে রাজশাহীর অধিনায়ক রাসেলের দুর্দান্ত ইর্য়কারে বোল্ড হন খুলনার ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। শুন্য হাতে ফিরেন তিনি। ৭ রানের বেশি করতে পারেননি আরেক ওপেনার আফগানিস্তানের রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার রিলি রুশোকে নিয়ে দলকে খেলায় ফেরান মুশফিক। তৃতীয় উইকেটে ৫৩ বলে ৭২ রানের জুটি গড়েন তারা। ৩৫ বলে ৪২ রান করে থামেন রুশো তবে শামসুর রহমানকে নিয়ে দলের জয়ের পথ তৈরি করতে থাকেন মুশফিক। মাত্র ৩৪ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন তারা। নিজের মুখোমুখি হওয়া ৩০তম বলে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন মুশফিক। এরপরও নিজেকে দমিয়ে রাখেননি তিনি। দলের জয় নিশ্চিত করার পণ করেন মুশফিক। ব্যাট হাতে রানের চাকা ঘুড়াতে থাকেন মুশফিক। ১৭তম ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ২৯ রানে থামেন শামসুর। তাকে ফিরিয়ে রাজশাহীকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন রাসেল।
শামসুর যখন ফিরেন তখন খুলনার দরকার ছিলো ১৮ বলে ৩২ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার রবি ফ্রাঙ্কলিনকে নিয়ে শেষ ওভারে সমীকরন ৪ রানে নামিয়ে আনেন মুশফিক। শেষ ওভারের আগে তার নামের পাশে ছিলো ৯৫ রান। ফলে সেঞ্চুরির সুযোগ তৈরি হয় তার। কিন্তু শেষ ওভারের তৃতীয় বলে আউট হন মুশি। ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫১ বলে ৯৬ রান করেন মুশফিক। তবে চতুর্থ বলে চার মেরে খুলনার জয় নিশ্চিত করেন ফ্রাঙ্কলিন। ৬ বলে অপরাজিত ১৪ রান করেন ফ্রাঙ্কলিন। রাজশাহীর রাসেল ৪১ রানে ২ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন খুলনার মুশফিক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
রাজশাহী রয়্যালস : ১৮৯/৪, ২০ ওভার (মালিক ৮৭, বোপারা ৪০*, আমির ২/৩৬)।
খুলনা টাইগার্স : ১৯২/৫, ১৯.৪ ওভার (মুশফিক ৯৬, রৌসু ৪২, রাসেল ২/৪১)।
ফল : খুলনা টাইগার্স ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মুশফিকুর রহিম (খুলনা টাইগার্স)।