হরিণটানা থানার প্রচেষ্টায় হারিয়ে যাওয়ার দেড় মাস পর পিতাকে ফিরে পেল ৭ বছরের শিশু

0
14

খবর বিজ্ঞপ্তি: গত ১৯ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন হতে ট্রেনে উঠে মোঃ ইয়ামিন(০৭) নামে একটি শিশু সন্ধ্যায় খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌছায়। এরপর সে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে ঘুরতে গত ১৯ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ রাত্র ০৯.০০ ঘটিকায় হরিণটানা থানাধীন গল্লামারী এলাকাতে এসে কান্না-কাটি করতে থাকলে পথচারীরা হরিণটানা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায় তারপর হরিণটানা থানার এসআই(নি:) মোঃ মাসুম বিল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্স-সহ সেখানে হাজির হয়ে শিশু মোঃ ইয়ামিন কে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে। অত:পর তার বাড়ি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের আশপাশে। তখন শিশুটি কে এসআই(নি:) মোঃ মাসুম বিল্লাহ হরিণটানা থানা নিয়ে আসে। পরবর্তীতে হরিণটানা থানা পুলিশ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের আশপাশের থানাসমূহে যোগাযোগ করেও শিশুটির কোন অভিভাবকের সন্ধান না পেয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, বটিয়াঘাটা, খুলনা কে বুঝিয়ে দেয়। তিনি শিশু মোঃ ইয়ামিন কে গত ২০ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, বটিয়াঘাটা, খুলনায় বালক হোস্টেলে হেফাজতে রাখেন। এরপর হরিণটানা থানা পুলিশ এবং উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, বটিয়াঘাটা, খুলনা শিশুটির অভিভাবকের সন্ধানে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে এবং কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের আশপাশসহ ডিএমপি’র বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। পরবর্তীতে শিশুটি জানায় তাকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে গেলে তার বাড়ি চিনিয়ে দিতে পারবে। সেই মোতাবেক কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম(বার), পিপিএম-সেবা মহোদয়ের নির্দেশ মোতাবেক হরিণটানা থানা পুলিশ, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এবং শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, বটিয়াঘাটা, খুলনা’র ০৫ (পাঁচ) সদস্যের একটি টিম গত ০৮ মে ২০২৪ খ্রিঃ সকাল ০৬.০০ ঘটিকার সময় শিশু মোঃ ইয়ামিন কে নিয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে। অত:পর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে শিশু মোঃ ইয়ামিন কে নিয়ে হরিণটানা থানার এসআই (নি:) মোঃ মাসুম বিল্লাহ এর নেতৃত্বে উক্ত টিমের সদস্যরা সকাল ১১.০০ ঘটিকার সময় বিভিন্ন ভাবে আশপাশের এলাকায় শিশুটির পরিবারের সন্ধান করতে থাকে। পরবর্তীতে দুপুর ০১.০০ ঘটিকার সময় শিশু মোঃ ইয়ামিন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দাড়িয়ে থাকা নারায়নগঞ্জ রুটের একটি ট্রেন দেখিয়ে জানায় যে, এই ট্রেন যেখান থেকে আসছে তাকে সেখানে নিয়ে গেলে সে তার বাড়ি চিনিয়ে দিতে পারবে। তখন উক্ত টিমের সদস্যরা শিশুটি কে নিয়ে নারায়নগঞ্জ রুটের উক্ত ট্রেনে করে নারায়নগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথিমধ্যে উক্ত ট্রেনের একজন যাত্রী শিশুটিকে দেখে তার বাড়ি নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন লালপুর গ্রাম এবং তার পিতার নাম মোঃ সাইফুল ইসলাম মর্মে জানায়। তখন উক্ত টিমের সদস্যরা শিশুটি কে নিয়ে ট্রেন হতে ফতুল্লা রেল স্টেশনে নেমে লালপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করে। এরপর উক্ত টিমের সদস্যরা শিশু মোঃ ইয়ামিন কে নিয়ে লালপুর গ্রামের তার বাড়িতে হাজির হলে মাতৃহীন শিশু মোঃ ইয়ামিন তার পিতাকে বাড়িতে পেয়ে বাবা তার বুকের ধন ইয়ামিন কে বুকে জড়িয়ে ধরলে একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তখন শিশুটির প্রতিবেশীরাসহ তার বাড়ির আশপাশের খেলার সাথীরা তাকে দীর্ঘদিন পর কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে। উক্ত টিমের সদস্যরা শিশু মোঃ ইয়ামিন কে তার পিতার জিম্মায় প্রদান করে খুলনায় ফিরে আসে। ভুমিষ্ট হওয়ার পর পরই শিশু মোঃ ইয়ামিন এর মা মারা যায়। তার বাবা মোঃ সাইফুল ইসলাম আর বিবাহ করেননি। মা বিহীন এই ভূবনে সে তার বাবাসহ চাচা ফুফুদের সাথে ঐ নিভৃত পল্লীতে থাকে। শিশুটির বাবা গরীব পরিবহন শ্রমিক হওয়ায় তার তেমন খোঁজ খবর রাখে না। শিশুটি তার মাকে খুঁজতে খুঁজতে সে না কি প্রায়ই বাড়ী হতে নিরুদ্দেশ হয়। কারণ তার শিশু সুলভ মন আজো বিশ্বাস করতে পারেনি যে তার মা পৃথিবীতে আর নেই। জানিনা কবে শেষ হবে তার মাকে খোঁজার এই প্রয়াস। মহান সৃষ্টিকর্তা তার সহায় হউন। তার জন্য রইল নিরন্তর শুভকামনা।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here