রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে চাপ অব্যাহত রাখতে হুন সেনকে স্পিকারের অনুরোধ

0
242

খুলনাটাইমস ডেস্ক: স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আসিয়ান পর্যায়ে চাপ অব্যাহত রাখতে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনকে অনুরোধ জানিয়েছেন। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী সামদেক হুন সেনের সাথে তাঁর নিজ কার্যালয় পিস প্যালেসে সাক্ষাত করে স্পিকার এ অনুরোধ করেন। পিস প্যালেসে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী হুন সেন স্পিকারকে উষ্ণ অর্ভ্যত্থনা জানান। তিনি এশিয়া প্যাসিফিক ফোরামে অংশশ্রহণ করায় স্পিকারকে ধন্যবাদ জানান। সাক্ষাতকালে তাঁরা সংসদীয় চর্চা, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি ও উন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুসহ দু’দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত ন্যাম সম্মেলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কম্বোডিয়ার প্রয়াত ফাদার প্রিন্স নরোদম সিহানুক এর সাক্ষাতের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সূচনা হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দু’দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বড় বোনের মতো উল্লেখ করে হুন সেন ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কম্বোডিয়া সফর ও ২০১৪ সালে তাঁর ঢাকা সফরের বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, এসব সফরে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত হয়। হুন সেন মেকং-গঙ্গা সহযোগিতা প্ল্যাটফর্মের আওতায় এতদ অঞ্চলে উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা জোরদার করার ক্ষেত্রে এশিয়া প্যাসিফিক ফোরাম খুবই সহায়ক ভূমিকা রাখে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদীয় অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে আঞ্চলিক সর্ম্পক জোরদার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আধুনিক কম্বোডিয়া বিনির্মাণে হুন সেনের অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতার সংশ্রামসহ ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা, তৎপরবর্তী গণতান্ত্রিক সংশ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন ধারাবাহিক উন্নয়নের মহাসড়কে। ধারাবাহিকভাবে ৮ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। দেশের ১৬ কোটি জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশে একশটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে সফরের মধ্য দিয়ে দু’দেশের সর্ম্পক জোরদার হয়েছে। স্পিকার নমপেনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি সড়কের নামকরণের উদ্যোগ নেয়ায় হুন সেনের প্রতি কৃজ্ঞতা জানান। তিনি জানান, ঢাকাতেও রাজা সিহানুকের নামে একটি রাস্তার নামকরণ করা হবে। স্পিকার মিয়ানমার কর্তৃক জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে শান্তি পূর্ণ প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে আসিয়ান পর্যায়ে চাপ অব্যাহত রাখার জন্য হুন সেনকে অনুরোধ জানান। এর আগে স্পিকার ন্যাশনাল এসেম্বলি অব কম্বোডিয়ার স্পিকার সামদেক চাকরেই হেঙ সামরিন এবং কম্বোডিয়ার সিনেটের প্রেসিডেন্ট সামদেক ফিকদেই সে চাম এর সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতকালে তাঁরা বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সংসদীয় পর্যায়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় সংসদীয় কূটনীতির মাধ্যমে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংযোগ বৃদ্ধির উপর তাগিদ দেয়া হয়। পরে স্পিকার নমপেনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রস্তাবিত সড়ক পরিদর্শন করেন। এ সময় কম্বোডিয়ার সরকার ও সংসদীয় পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।