বিদ্যুতে ভতুর্কির জন্য তিন মাস পর পর অর্থ চেয়ে বিউবি’কে আবেদন করতে হয়

0
218

টাইমস ডেস্ক:
বিদ্যুৎ খাতে সরকারের হাজার হাজার কোটি ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। আর ভতুর্কির টাকা পেতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিউবি) প্রতি তিন মাস অন্তর অর্থের জন্য আবেদন করতে হয়। তিন মাসে বিদ্যুতের ভর্তুকি ব্যয় ২৩ শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। মে, জুন ও জুলাই- ওই তিন মাসে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিউবি) ভর্তুকি বাবদ অর্থ মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ছাড় করেছে। মূলত বেসরকারি বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে তা গ্রাহক পর্যায়ে কম দামে বিক্রি করার কারণেই প্রতি বছর বিউবি’কে হাজার হাজার কোটি গচ্চা দিতে হচ্ছে। এবার এ খাতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ ৯ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে। বিউবি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, তিন মাসে বিদ্যুতের যে লোকসান হয়েছে তাতে মাসওয়ারি লোকসানের খতিয়ানে দেখা যায়, মার্চ মাসে আইপিপি থেকে বিদ্যুৎ কেনায় লোকসান হয়েছে ৪৫৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা, ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনায় লোকসান ১৫২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করে ক্ষতি হয়েছে ৪৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। একইভাবে এপ্রিল মাসে লোকসানের পরিমাণ ওই তিন খাতে যথাক্রমে ৪২৩ কোটি ৮৮ লাখ, ১৩৫ কোটি ৬৮ লাখ এবং ৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং মে মাসে লোকসান হয়েছে যথাক্রমে ৫০১ কোটি ৪৩ লাখ, ১২৫ কোটি ৩২ লাখ এবং ৩১ কোটি টাকা। মূলত তিন খাত থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনার কারণেই বিউবির এই লোকসান হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় মূলত নির্ভর করে ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবহার, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন, স্থাপিত ক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি না পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তাতে লোকসানও বাড়ছে। আর যেসব খাতে বিউবির লোকসান হচ্ছে তার অন্যতম কারণ হচ্ছে আইপিপি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট), ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি। এর মধ্যে আইপিপি খাত থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য তিন মাসে পিডিবি’র লোকসান গুনতে হয়েছে এক হাজার ৩৭৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। একই সময়ে কুইক রেন্টাল থেকে বিদ্যুৎ কিনে লোকসান হয়েছে ৪১৪ কোটি টাকা। আর তিন মাসে ভারত থেকে বিদ্যুৎ কেনায় লোকসান হয়েছে আরো ১১১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ফলে তিন মাসে লোকসান হয়েছে এক হাজার ৮৬০ কোটি চার লাখ টাকা।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রতি তিন মাস অন্তর বিউবি’র পক্ষ থেকে ভর্তুকি অর্থ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়। আর ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। এর আগে চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল দুই মাসে ভর্তুকি বাবদ আরো এক হাজার ১৪৩ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বিউবি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, আইপিপি এবং ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসহ ভারত হতে ক্রয়কৃত বিদ্যুতের দাবিকৃত বিল নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর সরকারের আর্থিক সহায়তা পাবে বলে প্রতিষ্ঠানসমূহের দাবিকৃত বিল যথাসময়ে পরিশোধ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে।