সার্ভার নিস্ক্রিয়তায় এবার অনলাইনে দাখিল করা যাবে না আয়কর রিটার্ন

0
200

টাইমস ডেস্ক:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিভিন্ন ধরনের ত্রুটির কারণে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করার সার্ভার নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে। ফলে
করদাতারা এবার অনলাইনে তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সুযোগ পাচ্ছে না। কারণ করদাতারা চেষ্টা করেও সার্ভারে প্রবেশ করতে পারছে না। এমন অবস্থায় সার্ভারের ত্রুটি খতিয়ে দেখতে এবং অনলাইন সেবা আরো সহজ করার উপায় খুঁজতে সিস্টেম অডিট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকার বিগত ২০১৬ সালের নভেম্বরে অনলাইন আয়কর রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু করে। অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু করতে ৫৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও নেয়া হয়। ভিয়েতনামভিত্তিক এফপিটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাটি চালু করে দেয়ার কাজ পায়। কিন্তু ২০১৮ সালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই সেবা মোটেই গ্রাহকবান্ধব নয় এবং বেশকিছু ত্রুটি রয়েছে বলে উল্লেখ করে।অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করার ব্যবস্থায় নানা ত্রুটি রয়েছে। ফলে করদাতারা ওই সার্ভারে গিয়ে রিটার্ন দাখিল করতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতে এনবিআর এ বছর অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করার ব্যবস্থা স্থগিত করেছে। যদিও এ ব্যবস্থায় উৎসাহ দিতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী প্রথমবার অনলাইনে রিটার্ন দাখিলকারীদের দুই হাজার টাকা কর ছাড় ঘোষণা করেছেন।
সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে ৫০ লাখ টিআইএন রয়েছে। তার মধ্যে ২২ লাখ টিআইএনের বিপরীতে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা হয়। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৭ হাজার ২০৯ জন করদাতা তাদের রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করে, যা মোট দাখিল করা রিটার্নের শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ। তার আগের চার বছরে ১৩ হাজার ৮৯৫ জন এই ব্যবস্থায় রিটার্ন দাখিল করে। অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে করদাতার নিজ নিজ কর অঞ্চলের সার্কেল অফিসে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদন করতে হয়। আবেদনপত্রের সঙ্গে ইটিআইএন সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিতে হয়। সার্কেল অফিস করদাতার নিবন্ধন করে একটি ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে দেয়। পাসওয়ার্ডটি পরে করদাতা নিজের মতো করে ঠিক করে নিতে পারে। তারপর ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে করদাতা তার রিটার্ন দাখিল করতে পারে।
সূত্র আরো জানায়, প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়কে আয়কর রিটার্ন দেয়ার জন্য নির্ধারিত। সাধারণত অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর মাসজুড়ে করদাতারা রিটার্ন দাখিল করে। ১০ বছর ধরে করদাতাদের সহযোগিতা করতে এনবিআর নভেম্বর মাসে দেশব্যাপী কর মেলার আয়োজন করে আসছে। করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর ওই মেলাও আয়োজন করছে না এনবিআর।
এদিকে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে যাদের টিআইএন আছে, তাদের সবার রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে এ বছর মোট রিটার্ন দাখিলের পরিমাণ বাড়বে। মেলায় ঝামেলাবিহীনভাবে করদাতা রিটার্ন দাখিল ও কর পরিশোধ করতে পারছিলেন। এ বছর সে সুযোগ না থাকায় করদাতাদের নিজস্ব কর অঞ্চলের সার্কেল অফিসে রিটার্ন দাখিল ও কর জমা দিতে হচ্ছে। করদাতাদের সহায়তা করতে কর অঞ্চলের অফিসগুলোতে সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে এনবিআরের সদস্য (কর তথ্য, ব্যবস্থাপনা ও সেবা) হাফিজ আহমেদ মুর্শেদ জানান, বিভিন্ন কারণে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করার সেবার ওপর সিস্টেম অডিট করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ কারণে বর্তমানে এই সেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে এ বছর করদাতারা অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সুযোগ নাও পেতে পারেন।