পাইকগাছায় চিংড়ি ঘেরের লবণ পানিতে বোরো আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত

0
150

নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাইকগাছায় চিংড়ী ঘেরের লবণ পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বোরো ফসল। মৌসুমের শুরুতেই চিংড়ি ঘেরে লবণ পানি উত্তোলন করায় উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের চকহিতামপুর বিলের অন্তত ৫০ জন কৃষকের ৩০ একর জমির বোরো ধান চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবর সংশ্লিষ্ট ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বরাদ দিয়ে জানানো হয়, উপজেলার গদাইপুরের চকহিতামপুর বিলে দীর্ঘ দিন ধরে লবণ পানির চিংড়ী চাষ হয়ে আসছে। তবে গত ২ বছর ধরে এলাকার কৃষকরা বিলের একাংশে স্যালো মেশিন স্থাপন করে আলাদাভাবে বোরো আবাদ ও মিষ্টি পানির মাছ চাষ করছেন। চলতি বছরও চরমলই, মেলেক পুরাইকাটি, গদাইপুর ও হিতামপুর গ্রামের অন্তত ৫০-৬০ জন কৃষক চকহিতামপুর বিলের ৩০/৩৫ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ইতোমধ্যে ধান রোপনের কাজ সম্পন্ন করেছেন কৃষকরা। অধিকাংশ ক্ষেতের ধানের গোছ দাঁড়িয়ে গেছে। জানানো হয়, উপজেলার চরমলই গ্রামের আজিজুল হক সানা, সিরাজুল হক সানা ও বহিরাগত জৈনক সাইদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি লবণ পানির চিংড়ী চাষ করছেন। মৌসুমের শুরুতেই ঘেরে লবণ পানি উত্তোলন করায় লবণ পানি গিয়ে ঢুকছে বোরোর ক্ষেতে। এতে ফসলের মারাতœক ক্ষতি হওয়ায় ভূক্তভোগী কৃষকরা গত ১২ জানুয়ারী ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবুর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এমপি বিষয়টি তদন্তপূর্বক শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপর দায়িত্ব অর্পন করেন। ইতোমধ্যে ইউএনওর নির্দেশে সদ্যবদলী হয়ে যাওয়া এসিল্যান্ড মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করে গেলে বলেও জানানো হয়েছে। এব্যাপারে ভূক্তভোগী কৃষক হাফেজ মতিয়ার রহমান জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ২০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। বর্গা চাষি কাজী মূকুল জানান, তিনি ১৫ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। গত বছরও লবণ পানির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তারা। আব্দুল মান্নান গাজী জানান, গত বছরের ন্যায় এ বছরও ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা কৃষকরা নিঃশ্ব হয়ে যাবেন বলেও দাবি তার। ঘের মালিক আজিজুল হক সানা জানান, এ বছর বোরো ফসলের পাশে তার কোন ঘের নেই। চলতি ওয়াপদার পাশে তার একটি ঘের আছে যা থেকে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে অপর ঘের মালিক সাইদুর রহমানের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, এসিল্যান্ডকে দিয়ে ইতোমধ্যে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে দিয়ে সরেজমিন তদন্ত করিয়েছেন। লবণ পানির কারণে বোরো ফসলের যাতে কোন প্রকার ক্ষতি না হয় এ জন্য ঘের মালিকদের লবণ পানি উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে মজবুত বাঁধ দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় পরিকল্পিত উপায়ে ঘের করার জন্য ঘের মালিকদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।