জটিল হলেও বিদেশে পাচারকৃত টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে দুদক

0
447

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ টাকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। পাচারকৃত টাকার পরিমাণ কত সে সংক্রান্ত কোথাও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে দেশ থেকে টাকা পাচারকারীর প্রকৃত সংখ্যা জানা না গেলেও বছরে কী পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে মার্কিন গবেষণা সংস্থাসহ কয়েকটি বিদেশী সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে তার ধারণা পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী গত ২০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৭ হাজার ২৮৩ কোটি ডলার পাচার হয়েছে, যা স্থানীয় মুদ্রায় ৬ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। আর সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০১৮’ শীর্ষক যে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় গত ১০ বছরে (২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশীদের জমা করা অর্থের পরিমাণ বাংলাদেশী টাকায় ৫ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা। বিদেশ পাচার হয়ে যাওয়া ওই অর্থ দেশে ফিরিয়ে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে বিদেশ থেকে টাকা দেশে ফিরিয়া আনার প্রক্রিয়াটি জটিল হলেও দুদক হাল ছাড়তে রাজি নয়। দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অর্থ পাচার বাংলাদেশের অন্যতম জটিল সমস্যা। দেশ থেকে প্রতিবছরই বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত দেশের নানা পেশার মানুষ। মূলত অবৈধ পথে উপার্জিত অথবা অপ্রদর্শিত অর্থই বিদেশে পাচার হয়। অবৈধ অর্থ দেশে বিনিয়োগ কিংবা সঞ্চয় নিরাপদ মনে না করায় তা বিদেশে পাচার হচ্ছে। আর তা হচ্ছে বাণিজ্য কারসাজি এবং হুন্ডির মাধ্যমে। এতোদিন অনেকটা নিরাপদ থাকায় দিন দিন অর্থ পাচারের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। ফলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে। সম্প্রতি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অর্থ পাচার রোধে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। তার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে দুদক বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে তৎপরতা শুরু করেছে। ওই লক্ষ্যে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াটি জটিল হলেও দুদক ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। অর্থ পাচারের তথ্য চেয়ে ইতিমধ্যে ৫০টি দেশের কাছে মিউচুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট-(এমএলএআর) পাঠানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুদকের এই উদ্যোগে একদিকে যেমন পাচারকৃত বিপুল অঙ্কের অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে, অন্যদিকে অবৈধ অর্থ পাচারও বন্ধ হবে । একই সঙ্গে কমে যাবে দুর্নীতি ও অবৈধ উপার্জনের প্রক্রিয়া। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সূত্র জানায়, অর্থনীতিবিদ এবং ব্যাংকারদের মতে কয়েকভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার হয়ে থাকে। তার একটি বড় উপায় হচ্ছে বাণিজ্য কারসাজি। বাণিজ্য কারসাজির মাধ্যমে কোন কম দামের পণ্যকে বেশি দাম দেখানোর ফলে অতিরিক্ত অর্থ দেশের বাইরে থেকে যায়। একইভাবে রফতানির ক্ষেত্রে বেশি দামের পণ্যকে কম দাম দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ দেশে আনা হয় না। এগুলো ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিং হিসেবে পরিচিত। টাকা পাচারের পুরো বিষয়টা যেহেতু অবৈধ পন্থায় হয়ে থাকে সেজন্য এর সঠিক তথ্য-উপাত্ত পাওয়া মুশকিল। তাছাড়া টাকা পাচারের খুব প্রচলিত মাধ্যম হচ্ছে হুন্ডি। আর আমদানির ক্ষেত্রে কোন একটি কম দামের পণ্যের বেশি দাম দেখিয়ে টাকা পাচার করে দেয়া হয়। পাচারকৃত ওসব অর্থ চিহ্নিত করা ও টাকা ফেরত আনার বিষয়টি অনেক জটিল প্রক্রিয়া। প্রথমে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক পাচারকৃত অর্থ চিহ্নিত করে তদন্তের পর মামলা করতে হয়। তারপর আদালত রায় দিলেই কেবল প্রক্রিয়া শুরু করা যায়। বিগত ২০১২ ও ২০১৩ সালে তিন দফায় আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক থেকে ২১ কোটি ৫৫ হাজার টাকা দেশে ফেরত আনা হয়। তার মধ্যে দুদক ২০১২ সালের নবেম্বরে প্রথম দফায় ২০ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৪ দশমিক ৮৮ সিঙ্গাপুরের ডলার দেশে ফেরত আনে। যা বাংলাদেশী টাকায় ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। তারপর দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারিতে আনে ২৩ হাজার ৮০০ সিঙ্গাপুরি ডলার, যা বাংলাদেশী প্রায় ১৫ লাখ টাকা। তারপর একই বছরের ১৩ আগস্ট সিঙ্গাপুর ওভারসিস ব্যাংক থেকে আরও ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮৭ মার্কিন ডলার বাংলাদেশে পাঠানো হয়। বাংলাদেশী টাকায় এর পরিমাণ ৭ কোটি ৪৩ লাখ ৬৯ হাজার ৪১৫ টাকা। ও অর্থ বহুজাতিক কোম্পানি সিমেন্স থেকে ঘুষ হিসেবে নেয়া হয়েছিল। কোকোর পাচারের টাকা ফেরত পেতে সরকারকে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর করা মামলার রায়ে পাচারের বিষয়টি উঠে আসে। তাছাড়া ফিলিপিন্স থেকে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের অর্থ ফেরত এসেছে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং শ্রীলঙ্কা থেকে এসেছে দুই কোটি ডলার। রিজার্ভ থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি হওয়ার পর ফেরত আনা অর্থ রিজার্ভেই রয়েছে। আর আরাফাত রহমান কোকোর পাচারের অর্থ ফেরত এনে অর্থ পাচার প্রতিরোধ কার্যক্রমে ব্যয় হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিভিন্ন ব্যক্তির অর্থ পাচারের তথ্য চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়াসহ ৫০টি দেশে মিউচুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট-(এমএলএআর) পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত ২২টি দেশ দুদকের পাঠানো চিঠির বিষয়ে সাড়া দিয়েছে। তাছাড়া অর্থপাচারের তথ্য জানতে চেয়ে বাংলাদেশেও এ ধরনের এমএলএআর এসে থাকে। কমিশন এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি এবং সেন্ট লুসিয়া থেকে পাওয়া ৭টি এমএলএআর’র জবাব দিয়েছে। সিঙ্গাপুরে এক বাংলাদেশীর নামে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় ওই অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু বিপুল পরিমাণ ওই অর্থের কোন দাবিদার নেই। বাংলাদেশ ওই টাকার মালিকানা দাবি করেছে। ওই টাকা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। তবে সিঙ্গাপুর থেকে অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সহজসাধ্য নয়, বরং যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। সাধারণত কেউ মারা গেলে তার নমিনিরা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের মালিক হয়। বাংলাদেশের মতো সিঙ্গাপুরের ব্যাংকগুলোরও একই নিয়ম। কিন্তু সিঙ্গাপুরের ওই এ্যাকাউন্টের কোন নমিনি নেই। ফলে এখনো কেউ দাবি না করায় টাকাটা আনা মুশকিল হয়েছে। সেজন্য বাংলাদেশের আইন, সিঙ্গাপুরের আইন ও মিউচুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স আইন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া মোরশেদ খান ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের তথ্য জানতে ২০০৯ সালে হংকংয়ে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। মিউচুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্টের (এমএলএআর) আওতায় দেয়া ওই চিঠির উত্তরে হংকংয়ের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা জমা ও উত্তোলনের তথ্য পাওয়া যায়। বাংলাদেশের এ্যাটর্নি জেনারেলকে দেয়া ওসব তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দায়েরকৃত মামলার এজাহারের তথ্যমতে, হংকং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে মোরশেদ খান, ছেলে ফয়সাল মোরশেদ খানসহ তাদের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর ১১টি ব্যাংক হিসাব পাওয়া যায়। ২০০১ সাল-পরবর্তী সময়ে ওসব ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। তার মধ্যে ৮টি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার ৩০৫ মার্কিন ডলার। হংকং ডলারের তিনটি হিসাবে জমা হয় বাকি অর্থ। যদিও জমাকৃত অর্থের বড় অংশই তারা বিভিন্ন সময় তুলে নিয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মোর্শেদ খান ও ও তার পরিবারের সদস্যদের হংকংয়ে পাচার করা ৩২১ কোটি টাকা ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। তার মধ্যে প্রথম ধাপে ১৬ কোটি টাকা ফেরত আনার জন্য হংকংয়ের এ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে মিউচুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তাছাড়া বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গিয়াসউদ্দিন আল মামুন এবং তার ভাই হাফিজ ইব্রাহিমের টাকাও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে দুদক। তাছাড়া আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারসহ ২৫ জন মিলে দেশের চারটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) থেকে প্রায় ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। বিভিন্ন সময়ে ওসব অর্থ লুট করে পাচার করা হয়েছে ভারত, কানাডা, সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পেয়ে ইতোমধ্যে ওসব অর্থ পাচারের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পিকে হালদার ফিরে না আসলে আইনগতভাবে তাকে ও তার পাচার করা অর্থ ফেরত আনা হবে।
এদিকে সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সরকার কানাডায় অর্থ পাচারের ২৮টি ঘটনার তথ্য পেয়েছে। পাচারকৃত ওসব অর্থ চিহ্নিত করা ও টাকা ফেরত আনার বিষয়টি অনেক জটিল হলেও অসম্ভব নয়। বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া এই টাকা ফিরিয়ে আনার নজিরও আছে। সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যক্তির অর্থ পাচারের তথ্য চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়াসহ ৫০টি দেশে মিউচুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট-(এমএলএআর) পাঠিয়েছি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অন্যদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকার চাইলেই পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা সম্ভব। কারণ এখন আর সুইস ব্যাংক আগের মতো গোপনীয়তা রক্ষা করে না। তারা অনেক কিছুই শেয়ার করে। ফলে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আসবে। আবার পাচারও অনেকাংশে কমে যাবে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফএফআই) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান জানান, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা দীর্ঘ ও জটিল বিষয়। অর্থ পাচারের ব্যাপারে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেতে হবে এবং তিনি যেখানে পাচার করেছেন সেখান থেকে যে কোন মাধ্যমে সঠিক তথ্যটি পেতে হবে। পাচার যে দেশে হয়েছে সেখানকার তথ্য পাওয়ার পর দুদেশের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট পারস্পারিক তথ্য বিনিময় করবে। কিন্তু এসব গোপন তথ্য আদালতে দেয়া যায় না। তাই মিউচুয়াল লিগ্যাল এ্যাসিসটেন্সের অনুরোধ করতে হয়। সেটা দিয়ে আদালতে উপস্থাপনের মতো করে তথ্য আনতে হয়। ওই অনুরোধের পর পাওয়া তথ্য আদালতে উপস্থাপন করে পাচার হওয়া অর্থ বা সম্পদ ফ্রিজ বা জব্দ করাতে হয় এবং সেটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে পাঠিয়ে সেখানকার আদালতেও ফ্রিজ বা জব্দ করাতে হয়। এ পর্যায় পর্যন্ত গেলে পাচার করা অর্থ আনার একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়। তবে তারপরেও দুদেশের মধ্যে সমঝোতা ও কিছু ক্ষেত্রে চুক্তির বিষয় আছে। যে দেশে টাকা পাচার হয়েছে তা আদালত পর্যন্ত এলে তারপর ওই দেশ সহযোগিতা করলে টাকা ফেরত আনার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এজন্য জাতিসংঘ কনভেনশনের আওতায় কিছু পথ আছে। তাছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (এফআইইউ) সঙ্গে ৭২ দেশের এফআইইউর সমঝোতা আছে। আর এগমন্ড গ্রুপের সদস্য হিসেবে ১৬৫টি দেশের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়। আবার ট্যাক্স রিকভারির জন্য রাজস্ব বোর্ডের কিছু চুক্তি আছে। সবকিছু কাজে লাগিয়ে দেশের আদালতে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার পক্ষে রায় পেলে তা যে দেশে পাচার হয়েছে সেদেশের এ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে পাঠানো হয়। ওই অর্থ ফেরত দেয়া যায় কিনা সেটি নিয়ে তারা সেখানে মামলা করতে পারে এবং এরপর ওই দেশ অর্থ ফেরত দিতে কোন আইনী সমস্যা আছে কিনা তা পর্যালোচনা করে। যদি পাচারকৃত অর্থ ফেরত দেয়ার ব্যাপারে আইনী জটিলতা না থাকে, সংশ্লিষ্ট দেশের আদালত থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত দেয়ার বিষয়ে রায় প্রদান করবে। তার পরেই কেবল পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।