তাজউদ্দীন আহমেদের জীবনের অজানা ৩টি ঘটনা

0
1251

অনলাইন ডেস্ক : মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় নেতা বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ । ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা, সততা ও আদর্শের অনন্য এক প্রতীক। আসুন তিনটি ঘটনা থেকে জেনে নেই স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম রূপকার তাজউদ্দিন আহমেদের কতবড় হৃদয়ের মানুষ ছিলেনথথ

১) ১৯৭০ সালে নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড়ের সময় (ডিসেম্বরে ছিল নির্বাচন) অনেক মানুষ তাজউদ্দিন আহমেদের বাসায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। এমন সময় তাঁর বাড়ির জানালায় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে একটা বুলবুলি পাখির মৃত্যু হয় । অন্ধকারে লুকিয়ে ক্রন্দনরত তাজউদ্দিন আহমেদকে তাঁর মেয়ে দেখে ফেলেন। ইহাহিয়ার বিরুদ্ধে সারাদিন আন্দোলনরত তাজউদ্দিন মেয়েকে কান্নাভেজা কন্ঠে বলেন, “আমার বাসায় এত মানুষের জায়গা হল, অথচ এই ছোট্ট বুলবুলি পাখিটার জায়গা হল না…”।

২) ১৯৭১ সালে যখন ভারতে বসে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এবং দেশের শাসনকার্য নিয়ে ব্যস্ত, তখনকার ঘটনা । ঙহ ঞরসব অফিসে আসা তাজউদ্দিন সাহেব এসে দেখলেন, তাঁর পিয়ন তখনো আসেনি। তিনি থিয়েটার রোডের পিয়নের সেই বাসায় চলে গেলেন। তাঁর অন্য এক কর্মচারী অফিসে এসে তাঁকে না পেয়ে সেই পিয়নের বাসায় গেলেন। গিয়ে দেখেন, বাসায় আর কেউ নেই শুধু প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন সাহেব জ্বরে আক্রান্ত পিয়নের মাথায় বদনা দিয়ে পানি ঢালছেন।

৩) ১৯৭১ সালে যখন ভারতে বসে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এবং দেশের শাসনকার্য নিয়ে ব্যস্ত, তখনকার ঘটনা। ডঃ আনিসুজ্জামান একদিন তাজউদ্দিন আহমেদের কাছে যান। তিনি গিয়ে দেখলেন, তাঁর চুল উস্কখুস্ক, চোখ লাল। বললেন, “আপনার শরীর খারাপ নাকি ?” তাজউদ্দিন সাহেব জবাব দিলেন, “গতরাতে শুতে যাওয়ার পর, হঠাত ঝড়ে আমার ঘরের জানালার একটা অংশ খুলে গেল, তখন মনে হল, এই ঝড়ে আমার ছেলেরা না খেয়ে না ঘুমিয়ে যদ্ধ করছে, আর আমি ঘুমাচ্ছি? আমি রাতে আর ঘুমাতে পারি নাই…”।

নি:সন্দেহে। বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতে পারতো যদি তাজউদ্দিন আহমেদকে তাঁর ইচ্ছেমতো কাজ করতে দেয়ার সুযোগ দেয়া হতো। তাঁকে যদি কারা প্রকোষ্টে নির্মমভাবে হত্যা করা না হতো।