আশাশুনির গৃহিনীদের পশু পালন ও সবজী চাষে জীবন মান উন্নয়ন

0
199

মইনুল ইসলাম:
আশাশুনির গৃহিনীরা সংসারের কাজের ফাঁকে বাড়ির মধ্যে পশু পালন ও সবজী চাষ করে জীবন মান উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে সংসারে নিজের কর্মের গুরুত্ব অপরিহার্য ও সামাজিক ভাবে পরিবারকে দিন বদলের যাত্রায় সংযুক্ত করে সম্মানজনক পর্যায়ে নিতে সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
আশাশুনি উপজেলা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় লবণাক্ততায় ভরা। এখানের জীবন যাত্রা এখন লবণপানির মাছ চাষ ও কৃষি নির্ভর হলেও অনেক ভূমি এখনো পতিত থাকে। মানুষের একটি বড় অংশ কর্মহীন এবং অধিকাংশ গৃহিনীরা শুধুমাত্র গৃহস্থলী কাজ নিয়েই সময় কাটায়। এসব গৃহিনীদের মধ্যে প্রতাপনগর ইউনিয়নের নাকনা গ্রামের রঞ্জন মন্ডলের স্ত্রী মলিনা এনজিও ফ্রেন্ডশিপের সহযোগিতায় বাড়ির আঙিনায় সবজীচাষ করে সংসারের চাহিদা পুরণের পরও ৫/৬ হাজার টাকার সবজী বিক্রয় করেছেন। এই টাকা থেকে ১১টি হাঁসের বাচ্চা ও ২টি রাজ হাঁস কিনে ফার্ম করেছেন। ফ্রেন্ডশিপের দেওয়া ছাগল লালন পালন করছেন। খুব শীঘ্রই ছাগলের বাচ্চা হবে। সবজী ও হাঁসের ডিম বিক্রয় করে সংসার খরচ ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন। একই গ্রামের নিরঞ্জন মন্ডলের স্ত্রী তাপসী ফ্রেন্ডশিপের দেওয়া ছাগল পোষে ২ বাচ্চা পেয়েছেন। একটি বিক্রয় করে জামাইকে স্বর্ণের আংটি দিয়েছেন। সবজী বিক্রয় করে ৭ হাজর টাকা পেয়েছেন। টাকা দিয়ে ২৩টি হাঁস-মুরগি কিনেছেন। প্রতিদিন ৬টি করে ডিম দিচ্ছে, দ্রুত আরও ৬/৭টি ডিম বেশি আসবে। আনুলিয়া ইউনিয়নের ঘাসটিয়া গ্রামের রাজু রানী সবজী বিক্রয় করে ৯ হাজর টাকা পেয়েছেন। একটি ছাগলের ৪টি বাচ্চা হয়েছে। অনুপমা রানী হালদার ১টি ছাগলের ৫টি বাচ্চা পেয়েছে। একটি ছাগল ক্রয় করেছেন। সবজী বিক্রয় করে ৫ হাজর টাকা পেয়েছেন। গৃহিনীরা বলেন, আমরা সংসারে স্বামীর মুখাপেক্ষী ছিলাম। প্রয়োজনীয় কিছু পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। আজ নিজেরা আয় করছি, সংসার চালানোয় অংশীদার হয়েছি। নিজেদের প্রয়োজন মেটাচ্ছি, সন্তানদের লেখাপড়া শেখানোয় ব্যয় করছি। মেয়েরা এখন সংসারে বোঝা নয়, তারাও সংসারের হাল ধরতে পারে এ আত্মবিশ্বাস প্রমাণিত হয়েছে। এর মাধ্যমে এনজিও ফ্রেন্ডশিপ আনুলিয়া ও প্রতাপনগর ইউনিয়নে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট ৬টি ডিএমসি কমিটি গঠন করেছে। সকল সদস্যকে একটি করে ছাগী ছাগল বা ভেড়া এবং মৌসুম ভিত্তিক উন্নতমানের ২১ প্রকারের বীজ ও ঔষধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। সদস্যরা পারিবারিক শিক্ষা প্রহণ এবং পশু পালন ও সবজী চাষ করে নিজেদের খাদ্য চাহিদা ও পুষ্টি পুরণে সক্ষম হয়েছেন। সাথে সাথে আর্থিক লাভবান হয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তাদের দেখাদেখি এলাকার অনেক নারী স্বেচ্ছায় একাজে এগিয়ে এেেসছে। ফলে এলাকায় সংসার উন্নয়নে নারী জাগরণ ঘটেছে।