সড়ক পথে সুন্দরবনে ‘আকাশলীনা

0
868

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি  : সড়ক পথে সুন্দরবনে ‘আকাশলীনা’  পাল্টে দিয়েছে কলবাড়ির চিত্র। বাংলাদেশের জন্য মডেল হতে পারে শ্যামনগরের এই ইকোট্যুরিজম সেন্টারটি। সুন্দরবনে মাছ ধরা, মধু সংগ্রহ, কাঠ এনে বিক্রি করা এসব নানান ‘জঙ্গুলে’ পেশায় নির্ভরশীল ছিল কলবাড়ির অধিকাংশ মানুষ। অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় দিন চলত অনেকের। আর্থিক দুরবস্থা এতোটাই সংকটাপন্ন ছিল যে, পুরো গ্রাম তন্নতন্ন করে খুঁজলেও দু’একটি মটরসাইকেল পাওয়া ছিল দুষ্কর। সুন্দরবনের বাঘের পাশাপাশি বনদস্যুদের আতংক নিয়েই রাত কাটত কলবাড়ির মানুষের। তাই সন্ধ্যার আগেই সবাইকে ঘরে ফিরতে হতো।


>
> কিন্তু আজ মধ্যরাত পর্যন্ত রাস্তা-ঘাটে থাকছে লোকজন। চলছে যানবাহনও। প্রত্যেক ঘরেই এখন মটরসাইকেল। বাইরের পর্যটকরাও এসে ঘুরছেন, দেখছেন প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য সুন্দরবনের দৃশ্য। কেউ কেউ রাতযাপন করেও রাতের সুন্দরবন অবলোকনের সুযোগ পাচ্ছেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এমন পরিবর্তন এনে দিয়েছে সড়ক পথে সুন্দরবনে  ‘আকাশলীনা’। হ্যা, বাংলা ভাষার শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাসের ঐতিহাসিক কবিতা ‘আকাশলীনা’। আজ থেকে শতবর্ষ আগে যে কবি লিখেছিলেন,
>
> ‘সুরঞ্জনা,
>
> ওইখানে যেও নাকো তুমি,
>
> বোলো নাকো কথা ওই যুবকের সাথে;
>
> ফিরে এসো সুরঞ্জনা।’
>
> কবি মনের কল্পিত চরিত্র হলেও যে সুরঞ্জনাকে নিয়ে কবিতাটি লেখা হয়েছিল তার বাস্তব রূপ দিতেই বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে সড়ক পথে  সুন্দরবনের কোলঘেঁষে গড়ে উঠেছে  ‘আকাশলীনা’ ইকোট্যুরিজম সেন্টার। দূরত্ব যতই হোক অন্তত সড়ক পথে গিয়ে সুন্দরবন দর্শনের সুযোগ এটি ছাড়া বাংলাদেশে দ্বিতীয়টি নেই। আর সেজন্যই ‘আকাশলীনা’ ইকোট্যুরিজম সেন্টারে প্রতিদিন আসছেন শত শত দর্শনার্থী। শুধুমাত্র গেল ঈদ-উল-আযহার ছুটিতেই প্রায় ১০ হাজার পর্যটক গিয়েছেন সেখানে। দিন যতই যাচ্ছে আকাশলীনা ইকোট্যুরিজম সেন্টারের পরিচয় ততই বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও প্রতিদিন যাচ্ছেন পর্যটকরা।