সাতক্ষীরা কালিগঞ্জের খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)ছিলেন বাংলার পূণর্জাগরণের এক সব্যসাচী কারিগর -১৪৬ তম জন্মবার্ষিকীর সেমিনারে বক্তরা

0
285

 

 

আব্দুর রন লিটু,দেবহাটা : সাতক্ষীরা কালিগঞ্জের খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন অবিভক্ত বাংলার পূণর্জাগরণের এক সব্যসাচী কারিগর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার অবদান ও সম্পৃক্ততা ছিল অনস্বীকার্য। ইতোমধ্যে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ওপর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনিস্টিটিউট গবেষণা শুরু করেছে। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন একজন শুদ্ধাচারী মানুষ। বাংলা সাহিত্যের উপর তার যে শতাধিক মুল্যবান গ্রন্থ সেখানে তাঁর শুদ্ধাচারের প্রমান পাওয়া যায়। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার মতে রুচি মার্জিত করাই সাহিত্যের কাজ, রুচি কলুষিত করা নয়। বাংলা একাডেমি ও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তা পেলে ইনিস্টিটিউটের উদ্যোগগুলো বাস্তব রূপ পাবে।নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের আয়োজনে শনিবার সকাল থেকে সাতক্ষীরার নলতা শরীফে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) ”র ১৪৬ তম জন্মবার্ষিকীর সেমিনার অনুষ্ঠানে বক্তরা এসব কথা বলেন। নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের সভাপতি,সাবেক সফল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী আলহাজ¦ প্রফেসর ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর রশিদ আসকারী। সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক ড. আবদুল মজিদ, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল, নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের প্রাক্তন সভাপতি আলহাজ্জ মুহাম্মদ সেলিমউল্লাহ, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ হাবিবুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মজিবর রহমান, কোলকাতা আহছানিয়া মিশনের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মহিউদ্দীন। উল্লেখ্য, হযরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা ছিলেন অবিভক্ত বাংলা ও আসামের শিক্ষা বিভাগের সহকারি পরিচালক, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষাবিজ্ঞানী, কবি ও সাহিত্যিক, দার্শনিক ও ছুফী সাধক। তিনি আহ্ছানিয়া মিশনের প্রতিষ্ঠাতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলা একাডেমির প্রথম ফেলো। ১৮৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসের শনিবারে তিনি সাতক্ষীরার নলতায় জন্মগ্রহণ করেন।লেখক ও খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনিস্টিটিউটের গবেষক মনিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, খানবাহদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এ.এফ.এম এনামুল হক, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ. এনামুল হক। বক্তরা আরও বলেন, অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার একবারে সূচনালগ্ন হতে প্রতিষ্ঠার দিন পর্যন্ত প্রত্যক্ষ, বলিষ্ঠ-সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা। তিনি ছিলেন ভারতবর্ষে মুসলিম জাগরণের অগ্রদূত। তিনি একাধারে ছিলেন পূর্ণ ধার্মিক আবার পূর্ণ আধুনিক। আধুনিকতা আর ধার্মিকতার সমন্বয় ঘটিয়ে তিন যে দর্শনের কথা বলে গেছেন তা কল্যাণের দর্শন। তাঁর জীবন, কর্ম ও সাহিত্যের ওপর খন্ডিত গবেষণা রয়েছে, আহ্ছানিয়া মিশন ও খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনিস্টিটিউটের উচিৎ সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করা।অনুষ্ঠান শেষে সেখানে ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদের লেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা পর্বে খানবাহাদুর আহছানউল্লার ভূমিকা এবং এ.এফ.এম এনামুল হকের লেখা খানবাহাদুর আহছানউল্লা রচনা অভিধান নামক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।