সাতক্ষীরা উপক‚লে বাঁধ ভেঙে অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত

0
153

খুলনাটাইমস: ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের রেশ কাটতে না কাটতেই সাতক্ষীরার উপক‚লীয় বাঁধ ভেঙে লক্ষাধিক মানুষ আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদীর প্রবল জোয়ারের চাপে রিং বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে চারটি ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রাম। গতকাল শুক্রবার সকালে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের লেবুগুনিয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়। গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল ইসলাম জানান, কপোতাক্ষের প্রবল জোয়ারের তোড়ে লেবুগুনিয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে যায় সেই জায়গাটি এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করে আসার পর গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে তার পাশে দুটি স্থানে আবারও ভেঙে গেছে। লেবুগুনিয়া, চকবারা, গাবুরা ও খোলপেটুয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, বাঁধ মেরামতে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী নভেম্বরের কাজ শুরু করবে। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর গিফারী বলেন, গাবুরা এলাকার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জোয়ারের সময় পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। বাঁধ সংস্কারের জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে। পানিবন্দি হওয়ার খবর আমাকে কেউ এখনও জানায়নি। অন্যদিকে আশাশুনিতে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা বাঁশ দিয়ে রিং বাঁধ দিয়েছিলেন। সেই বাঁধ সবই ভেঙে গেছে জোয়ারের তোড়ে। কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে শ্রীউলা ও প্রতাপনগর ইউনিয়ন পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখোলা এলাকায় ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাওনিয়া, হিজলিয়া, কোলা, চাকলা, হরিশখালী এলাকার বাঁধ ভেঙে গোটা এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সময় এই বাঁধগুলো ভেঙে যায় আজও মেরামত করতে পারিনি। নদীর জোয়ারের পানিতে আবারও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে গোটা এলাকা। এ ছাড়া আশাশুনি সদরে দয়ারঘাট জেলেখালী এলাকায় বাঁধ ভেঙে সেখানেও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী (শ্যামনগর) আবুল খায়ের বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর লেবুগুনিয়ায় স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসন মিলে একটি রিং বাঁধ দিয়েছিল। সেটির ছয়টি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেগুলো মেরামতে কাজ চলছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরের দিকে আরও দুইটি পয়েন্টে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সংস্কারের জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী (আশাশুনি) সুধাংশু জানান, চাকলা, হিজলা, কোলাসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। চাকলা হিজলা ও কোলা এলাকায় বাঁধ সংস্কারের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যেহেতু বর্ষাকাল চলছে সেজন্য সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেনি। কাজের পরিবেশ পাওয়া মাত্রই তারা বাঁধ রক্ষার কাজ শুরু করবে। তিনি বলেন, বর্তমানে যেসব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে সেসব স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ড জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বাঁধ সংস্কারের কাজ অব্যাহত রেখেছে।