শীতে যেভাবে নিবেন সোনামণির যত্ন

0
299

খুলনাটাইমস স্বাস্থ্য: শীতে প্রকৃতিতে যে পরিবর্তন আসে তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিশুর একটু কষ্টই হয়। এ ক্ষেত্রে তাই মা-বাবাকে সতর্ক হতে হবে। শিশুর ত্বক ও শ্বাসতন্ত্র নাজুক এবং অপরিণত। তাই শিশু তাপ ধরে রাখতে পারে না, সহজে ঠান্ডা হয়ে যায়। এজন্য তাকে পর্যাপ্ত শীতের কাপড় পরাতে হবে। তবে এর মানে এই নয় যে, শিশুকে নাক মুখ বন্ধ করে শক্ত করে মুড়িয়ে দিতে হবে। শীতের কাপড় যে আরামদায়ক হয়। সেদিকে খেয়াল রাখার পাশাপাশি খুব সকালে এবং রাতে যখন বেশি শীত পড়ে কিংবা যখন বাইরে বের হবে, তখনই বেশি সতর্কতা জরুরি। অন্য সময় হালকা মোটা কাপড় পরালেই হলো। শীতে ঘাম কম হওয়ার কারণে শিশুর প্রস্রাব বেশি হয়। এজন্য নবজাতকের কাঁথা ভিজে যাচ্ছে কিনা বা একটু বড় শিশুর প্যান্ট ভিজেছে কিনা তা সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। অনেকে বেশি প্রস্রাব করছে দেখে শিশুকে বুকের দুধ ও তরল খাবার কমিয়ে দিন। এটি খুবই মারাত্মক একটি পদক্ষেপ, যা কখনই করা উচিত নয়। এতে কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। শীতে সোনামণিদের কোমল ত্বকের যত্নে অবশ্যই ভালো মানের লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। শুধু মুখে নয়, সারা শরীরে। শিশুকে পর্যাপ্ত সময় রোদে রাখতেও ভুলবেন না। শীতে গোসল করতে কিন্তু বাধা নেই। কুসুম গরম পানি দিয়ে শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে পারেন। তবে গোসল করানোর সময় কানে যাতে পানি না ঢোকে, সেদিক খেয়াল রাখতে হবে। আর শরীর ভালোভাবে মুছতে ভুলবেন না। শীতে শিশুর এক ধরনের ডায়রিয়া হয়। এতে রক্তও যেতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত এ ডায়রিয়া দেখে ভয় পাবেন না। স্যালাইন, বুকের দুধ ও পর্যাপ্ত তরল জিনিস খাওয়াতে থাকুন। ডাক্তারের পরামর্শে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক দিলে এ ডায়রিয়া সেরে যায়। শীতে শিশুর সর্দি কাশির বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত। এগুলোয় অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো দরকার পড়ে না। জ¦র, নাকে পানি পড়া কিংবা কাশির জন্য সাধারণ কিছু ওষুধেই এসব ভালো হয়ে যায়। অনেকের আবার তাও লাগে না। লবণ পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার এবং বুকের দুধ ও পর্যাপ্ত তরল খাবার খাওয়ালেই ভালো হয়ে যায়। তবে শিশু দ্রম্নত শ্বাস নিলে বুক নিচের দিকে দেবে গেলে বা টানা কয়েক দিন জ¦র থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। শিশু অচেতন হয়ে গেলে, খিঁচুনি হলে, কিছুই খাওয়ানো না গেলে অথবা সবকিছুই বমি করে ফেলে দিলে দ্রম্নত হাসপাতালে নিতে হবে। শিশুকে নিয়ে বেশি ভয় থেকে কিংবা বায়োজ্যেষ্ঠদের পরামর্শে শীতে অনেক মা খাওয়া-দাওয়া ও জীবনাচরণে খুবই কঠোরতা অবলম্বন করেন। বিশেষ করে নবজাতকের মায়েরা এসব বেশি করেন। অনেকে নিজের সর্দি কাশি হলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেন। গ্রামাঞ্চলের মতো শহরেও এসব ঘটনা বিরল নয়। এসবে শিশুর তো লাভ হয়ই না বরং ক্ষতি হতে পারে। আসলে বিভিন্ন ঋতুর মতো শীতেও শিশুর নানা রোগ হতে পারে, এজন্য দুশ্চিন্তার কারণ নেই। প্রয়োজনে তারা একজন শিশু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসকের কাছে গেলেই যে তিনি দামি ওষুধ লিখে দেবেন তা কিন্তু নয়। ওষুধের চেয়ে পরামর্শ ও নির্দেশনা মেনে চলাটা জরুরি। আসলে এ শীতে শিশুকে নিয়ে অহেতুক উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং সতর্কতা অবলম্বন করলে তবেই আপনার সোনামণি থাকবে রোগমুক্ত।