মোটরযান বীমার কার্যকারিতা জানে না অধিকাংশ চালক

0
2589

বেল্লাল হোসেন সজলঃ

মোটর সাইকেল চালকেরা মোটরযান বীমা বা ইন্সুরেন্স কথাটির সাথে পরিচিত। তবে অধিকাংশ চালকেরই জানা নেই এর কার্যকারিতা। মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৮ মোতাবেক অপরাধ সমূহের ১৫৫ ধারায় অবীমাকৃত মোটরযান চালনায় দুই হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। জরিমানার অংক বড় হলেও বীমা করতে প্রয়োজন ২২৫ টাকা। অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনেকেই ট্রাফিক পুলিশের জরিমানার ভয়ে মোটরযান বীমা করে থাকেন। কিন্তু এই বীমা কেন, কি জন্য বা এর দ্বারা কি হয়, এই প্রশ্নের উত্তর জানে না তারা। প্রতিবছর বীমা রিনিউয়াল করতে হয়। ডেট ফেল হলে জরিমানা দিতে হয়। মোটরযান বীমা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারনে, এই বীমার উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হয় অনেকেই। বাংলাদেশে মোটরযান বীমাকে দুটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। ১) কমপিয়েনসিভ বা ফাস্ট পার্টি। কমপিয়েনসিভ বীমার প্রিমিয়াম মোটর সাইকেলের দাম এর উপর নির্ভর করে। মোটর সাইকেলের মূল্য ১লক্ষ টাকা হলে, প্রিমিয়াম দিতে হবে ৩হাজার টাকা। এর ফলে আপনি ৩টি সুবিধা পাবেন। ক) মোটর সাইকেল দূর-ঘটনায় মৃত্যুতে ৩০হাজার টাকা। খ) প্রতি অঙ্গহানীর জন্য ৫হাজার টাকা। গ) মোটর সাইকেল হারিয়ে গেলে মোটর সাইকেলের সম্পূর্ন মূল্য। ২) অ্যাক্ট লাইবেলিটি বা থার্ড পার্টি। যেখানে সাধারণত ২২৫ টাকা প্রিমিয়াম জমা দিতে হয়। এর ফলে আপনি ২টি সুবিধা পাবেন। ক) মোটর সাইকেল দূর ঘটনায় মৃত্যুতে ২০হাজার টাকা। খ) প্রতি অঙ্গহানীর জন্য ৫হাজার টাকা। আর এর ১টি সুবিধাও যদি আপনার কখনোই প্রয়োজন না পরে, তবে আপনি নো-ক্লেম বোনাস পাবেন। ১ম রিনিউয়াল ৫% ছাড়, ২য় রিনিউয়াল ১০% ছাড়, ৩য় রিনিউয়াল ১৫% ছাড়। বাংলাদেশে প্রায় ৭৩টি বীমা কোম্পানী রয়েছে। এর মধ্যে দুটি সরকারী। একটি জিবন বীমা ও অপরটি সাধারণ বীমা। সাধারণ বীমার অন্তঃভুক্ত মোটরযান বীমা। সাধারণ বীমা কর্পোরেশন খুলনা জোনাল অফিসে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রভাব সেখানেও পরেছে। আগে প্রতি মাসে প্রায় ৩’শ মোটর সাইকেল বীমা হলেও বর্তমানে ১১দিনে দু’শ ছাড়িয়ে গেছে। সাধারণ বীমা কর্পোরেশন খুলনা জোনের জুনিয়ার অফিসার শাকিল আহমেদ জানান, অনেকেই মোটরযান বীমা সম্পর্কে জানে না। কমপিয়েনসিভ বীমা সরকারী প্রতিষ্ঠান ও এনজিওর মোটর সাইকেল গুলো জন্য করে থাকে। ব্যাক্তি মালিকাধীন মোটর সাইকেল গুলোর ক্ষেত্রে মালিকগন এটিকে অপচয় মনে করেন। তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষদের জানাতে আমরা এপ্রিল মাসে সেবা সপ্তাহ পালন করেছি। তবে সাধারণ মানুষের তেমন সারা পাওয়া যায়নি। বহির বিশ্বে অ্যাক্ট লাইবেলিটি (২২৫টাকা) বীমার গ্রহন যোগ্যতা নেই। তবে বাংলাদেশে অ্যাক্ট লাইবেলিটি (২২৫টাকা) বীমা গ্রহন যোগ্যতা রয়েছে। এর ফলে মোটর সাইকেল চালকের অ্যাক্ট লাইবেলিটি (২২৫টাকা) বীমা করা থাকলেই তিনি জরিমানা মুক্ত। তবে মোটরযান বীমা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারনে, অনেকেই কমপিয়েনসিভ বা ফাস্ট পার্টি বীমা করে না।