পাইকগাছায় র‌্যাক সমিতির কার্যক্রম বন্ধ, কয়েক কোটি টাকা নিয়ে কর্মকর্তারা লাপাত্তা!

0
176

নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাইকগাছায় র‌্যাক সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির নামে কয়েক শ’ গ্রাহকের কোটি টাকা হাতিয়ে কর্মকর্তারা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে গাঢাকা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে কার্যক্রম বন্ধের খবরে সমিতির গ্রাহকরা তাদের লগ্নিকৃত টাকা ফিরে পাবার আশায় প্রতিনিয়ত কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষার পর অপেক্ষা করে ফিরে যাচ্ছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা জানানো হয় যে, ২০১১ সালে পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের দক্ষিণ সলুয়া গ্রামে গড়ে উঠে র‌্যাক সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ। গ্রাহকদের আকৃষ্ঠ করতে শুরুতেই পাইকগাছা-খুলনা প্রধান সড়কের পাশে নির্মিত হয় র‌্যাক টাওয়ার নামে একটি ভবন। মূলত এই ভবন থেকেই পরিচালিত হত তাদের সকল কার্যক্রম।
সমিতির সভাপতি উপজেলার নোয়াকাটি গ্রামের বরুন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রামনগর গ্রামের অবিরাম শর্মা দায়িত্বরত ছিলেন। সূত্র জানায়, সমিতির অনুকুলে সহ¯্রাধিক গ্রাহক ছিল। যার প্রায় তিন শ’রও বেশি সদস্য দিগুন টাকা প্রাপ্তির প্রলোভনে এসডিপিএস করেন। যাদের বেশিরভাগ সদস্য’র এসডিপিএস’র মেয়াদ চলতি বছরের অক্টোবরে শেষ হয়েছে। লভ্যাংশসহ যার প্রাপ্য দাড়িয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা।
সম্প্রতি র‌্যাকের সদস্যরা তাদের সঞ্চয় জমা দিতে গিয়ে অফিস বন্ধ পায়। এভাবে কয়েক দিন অফিস বন্ধের খবর ছড়িয়ে পড়লে মূলত তাদের কার্যক্রম বন্ধ ও লাপাত্তা হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়।
তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়, র‌্যাক’র নামে ভবনটির (র‌্যাক টাওয়ার) জমি র‌্যাক’র নামে খরিদ না করে সমিতির সভাপতি বরুন বিশ্বাস’র নামে খরিদ করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, সমিতির প্রায় তিন শতাধিক সদস্যর এসডিপিএস’র মেয়াদ গত অক্টোবরে শেষ হয়েছে। যাদের প্রাপ্ত টাকার পরিমাণ প্রায় দু’কোটি টাকা। মূলত: এবিষয়টিকে সামনে রেখেই তারা লাপাত্তা হয়েছে।
সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে র‌্যাক টাওয়ারের সামনে কথা হয় সমিতির সদস্য জরিনা খাতুনসহ ৪০/৫০ জন সদস্যর সাথে। তারা জানান, এর কর্মকর্তারা তাদের কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে সম্প্রতি উধাও হয়েছে। দীর্ঘ দিনের সঞ্চিত টাকা খুঁইয়ে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন অনেকে। স্বামী-সন্তানদের প্রশ্নবানে জর্জরিত অনেকেইে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এব্যাপারে সমিতির সভাপতি বরুন বিশ্বাস জানান, তারা ঢাকার র‌্যাক গ্রুপের অধিনে ছিলেন। কৌশলে তারা তাদের টাকা হাতিয়ে পরে ফেরৎ না দেওয়ায় মুলত তারা বিপদে পড়েছেন।
ভূক্তভোগীরা জানান, র‌্যাক’র কর্মীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে সদস্য সংগ্রহে বাহারী বিজ্ঞাপনে অধিক মুনাফাসহ এসডিপিএস’র বিপরীতে দ্বিগুণ মুনাফা অফার করেন। এছাড়া তারা আরো জানান যে, র‌্যাক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ও ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালিত একটি বিশ্বস্থ প্রতিষ্ঠান। এছাড়া র‌্যাক’র স্থানীয় ভবনটি গ্রহকদের মধ্যে বিশ্বস্থতা বাড়িয়ে দেয়।
এদিকে র‌্যাক’র স্থানীয় উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী গ্রাহকদের লগ্নিকৃত টাকা কি আদৌ ঢাকাস্থ র‌্যাকে জমা দিয়েছিলেন? নাকি অন্য কিছু? যদি তারা টাকা ঢাকায় জমা দেন তাহলে সমিতির সভাপতি বরুন বিশ্বাসের নামে খরিদকৃত জমিতে র‌্যাক টাওয়ারের নামে ভবন প্রতিষ্ঠা ও সেখান থেকে কার্যক্রম পরিচালনার হেতু কি? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর জানা নেই সংশ্লিষ্ট অনেকেরই। তবে কি সাধারণ মানুষের লগ্নিকৃত টাকা উদ্ধার হবেনা? নাকি ঢাকার দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা মার যাবে? এমন প্রশ্ন ভূক্তভোগী গ্রাহকদের পাশাপাশি সচেতন এলাকাবাসীর।