দীর্ঘ ১৬ বছর নিরুদ্দেশের পর অবশেষে ফিরে এলো

0
543

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ যশোর উপ-শহর পাড়ার বাসিন্দা ও জাকের পার্টির যশোর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি মরহুম হাতেম আলীর পুত্র দীর্ঘ ১৬বছর নিরুদ্দেশ থাকার পর ফজলুল বারী ফজলু (৪২)অবশেষে ফিরে এলো মায়ের কাছে। ২০০২ সালে পরিবারের সাথে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয় ফাতেমা বেগমের একমাত্র পুত্র ফজলু । নিখোঁজের আগে সে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের এইচ.এস.সির ছাত্র ছিল। ষোলো বছর নিখোঁজের পর (২৮ সেপ্টেমবর) ইং রোজ শুক্রবার সকালে উপশহর পাড়ার এফ ব্লকের ৩৫ নাম্বার বাসায় অবসর প্রাপ্ত শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা মোঃ মাহামুদ পূর্ব পরিচিত তাহার বাসায় এসে হাজির হন ফজলু । পিতা হাতেম আলীর পরিবারের সাথে মাহামুদ সাহেবের সুসম্পর্ক্য থাকার কারনে ফজলু যশোর শহরে এসেই প্রথমে মায়ের খোজে মাহামুদ চাচার বাসায় গিয়ে মাকে খোঁজ করতে থাকেন। মাহামুদ সাহেবের স্ত্রী তখন ফজলু’র বড়বোনের মোবাইল নাম্বারে ফোন করে ঘটনা সর্ম্পকে অবহিত করেন।শ্রীমঙ্গল থেকে বড়বোন খবর পেয়ে তিনি তার মাতাকে মোবাইলে বলেন ফজলু যশোরে ফিরে এসেছে।খবর পেয়ে মা ফাতেমা বেগম তার একমাত্র ছেলে ফিরে পেতে সাথে সাথেই যশোর রওনা হন এবং সেখান থেকে ছেলেকে নিয়ে এসে বর্তমানে ঝিনাইদহে জামাই বাড়িতে আছেন।অনেক খোজা-খুজি করেও ছেলেকে না পেয়ে গত কয়েক বছর আগে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন মা ফাতেমা বেগম।
মা ফাতেমা তার পুত্র ফজলু’র কাছে ১৬ বছর নিরুদ্দেশ থাকার ঘটনা জানতে চাইলে তিনি জানান, বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রথমে মোংলা ইপিজেটে গিয়ে কিছুদিন কাজ করার পর ঢাকায় গিয়ে শিকিপুর বাজারের ডেকোরেটরের মালিক মোতালেবের কলোনীতে গিয়ে উঠে সেখানে একটি ফ্যাক্টরীতে কাজ করার পর কিভাবে এবং কেন আমি স্মৃতি হারা হলাম এবং আমার অতীত জীবনকে ভুলে গেলাম তা আর আমার জানা নেই।আমি কি কারনে স্মৃতি হারা হয়ে ছিলাম,কেউ আমাকে আঘাত বা কিছু করেছিল,কি ঘটনায় স্মৃতি হারালাম তা আমার কখনো মনে পড়েনি।আমার অতীত জীবন আমি ভুলে যায়।পিতা-মাতার নাম,বাড়ি সব কিছু আমার অতিত হয়ে যায়।সেই মহুর্তে ঢাকায় গার্মেন্স ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সুবাদে রামপালের ফয়লার শকুনা গ্রমের একটি মেয়ের সাথে ঢাকায় পরিচিত ঘটে এবং তাকেই বিয়ে করে ঢাকায় বসবাস করতে থাকি।
গত ২০১৭ সালে ইদের ছুটিতে রামপালে যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকা থেকে রওনা হয়।বাসের টিকেট পায় যশোর খাজুরা বাস ষ্টান্ড পর্যন্ত সেখানে নামার পর আমার যায়গাটি পরিচিত মনে হয় এবং আমি ঘুরাঘুরির একপর্যায়ে বাস ষ্টান্ড এর বিপরিত দিকে আমাদের বাড়ি কথা মনে পড়ে।তখন আমি সেক্টর-৭,বি-৬ তিনতলা ভবনে আমাদের বাড়িতে গিয়ে বাড়ির চারিপাস ঘোরাঘরির একপর্যায়ে গেটদিয়ে উঠি।বাড়িতে গিয়ে আমার মাকে খোঁজ করি,তখন তৃতীয় তলায় পাসের ফ্লাটে থাকা সৎ মাতা ও সৎ ভায়েরা বলে,তোর মা এখানে থাকে না,কোথায় থাকে আমরা জানিনা,মার কথা বলতেই ওরা আমাকে পারতে আছে এবং বলে আজ তোকে মেরে ফেলবো। তারা বলে তোর জন্য আমরা অনেক ঝামেলায় পড়েছি।কোন ভাবেই তারা আমাকে আমার মা,বোনদের মোবাইল নাম্বার ও ঠিকানা জেনেও দিল না।সেখান থেকে ফিরে আসার সময় আমার নিকট থেকে চাকুরির কর্মস্থানের ঠিকানা আমার দিয়ে লেখে নেন সৎ ভাই জাহিদ।পরবর্তিতে সৎ ভাই জাহিদ হোসেন গত২০১৮সালের জানুয়ারি মাসে সৎ ভাই জাহিদ আমার ঢাকার কর্ম¯থলে যায় এবং বলে যে তুই যদি পিতার বাড়ি উঠতে চাস তাহলে আমাকে আট লাখ টাকা দিতে হবে,নতুবা বাড়িতে উঠতে পারবা না। আমি তখন ফিরে যায় ফয়লার শকুনা গ্রামে পরে ঢাকায়।তারপর থেকে বিভিন্ন ভাবে আমার মা,বোনদের খোজাখুজি করতে থাকি।ধীরে ধীরে আমার মা,বাবা,বোনদের এবং বাড়ির কথা মনে পড়তে থাকে এবং গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ রোজ শুক্রবার শকুনা গ্রাম থেকে স্ত্রীর ছোট্র ভাইকে সাথে করে যশোর এসে পরিচিতদের খোঁজাখুজির একপযার্য়ে মাহামুদ চাচার বাসায় গিয়ে উঠি এবং বলি আমি হাতেম আলীর ছেলে সেই ফজলু।তারপর তারা মা,বোনকে ঘটনা জানায় এবং অবশেষে মা-ছেলের সাথে দীর্ঘ ১৬ বছর পর দেখা হয়।