দাকোপে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

0
517

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাটাইমস :
খুলনার দাকোপ উপজেলার তিলডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় কাজ করা উপকারভোগীর টাকা আত্মসাৎ ও সরকারের ২৫০০ টাকা করে বরাদ্দ প্রণোদনার তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এলাকাবাসি ওই অভিযোগ করেছেন। তিলডাঙা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সঞ্জয় কুমার সরদারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রাদুর্ভাবে এলাকার সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সে অনুসারে সারাদেশের ন্যায় তিলডাঙা এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সহায়তার জন্য সরকার থেকে ২৫০০ টাকা করে প্রণোদনা দিয়েছিল। সেই প্রণোদনার তালিকা তৈরিতে ইউপি সদস্য সঞ্জয় সরদার ব্যাপক অনিয়ম করে থাকে। সরকারি চাকুরীজীবি, প্রাক্তন শিক্ষক, ভিজিএফ ও ভিজিডি কার্ডধারী ব্যক্তির, এলাকায় না থাকা ব্যক্তি ও নিজের মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে আত্মীয়-স্বজনের নাম দিয়ে নিজের মতো তালিকা প্রস্তুত করে জমা দেয়।

প্রণোদনার ওই তালিকা যাচাই-বাছাই করে নয়জনের নাম এমনভাবে ব্যবহার করেছে বলে দেখা যায়। এসব নামের টাকা ইউপি সদস্য আত্মসাৎ করায় প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ করছেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে।

অভিযোগ রয়েছে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান (৪০ দিন) কর্মসূচির আওতায় কাজ করা উপকারভোগীর টাকা আত্মসাৎ করেছে ইউপি সদস্য সঞ্জয় সরদার। উপকারভোগীর একজন অনিতা সরদার। তিনি বললেন, ৪০ দিনের মধ্যে ৩৫ দিন কাজ করে হাতে পেয়েছেন মোট ৪ হাজার ৯৫০ টাকা। অনিতার হিসাব মতে, প্রতিদিন ২০০ টাকা করে ৩৫ দিনে পাবে ৭ হাজার টাকা। কিন্তু জবকার্ডে হিসাব দেখানো হয়েছে ৫ হাজার ৬০০ টাকার। বাকি টাকা ইউপি সদস্য আত্মসাৎ করে।

এলাকার কয়েকজন মানুষ জানান, ইউপি সদস্য সঞ্জয় সরদার ওয়ার্ডের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সঠিকমত না করে অনিয়ম করে থাকে। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নানান ধরণের হুমকি দিয়ে থাকে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সঞ্জয় কুমার সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে খুলনাটাইমসকে বলেন, প্রতিপক্ষরা নির্বাচন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। সাধারণ মানুষের কাছে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এসব মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ দায়ের করে থাকে। তিনি দাবি করেন, তড়িঘড়ি করে সরকারের প্রণোদনার তালিকা প্রস্তুত করায় কিছুটা এদিক-সেদিক হয়েছে।

অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির টাকা আত্মসাতের বিষয়ে সঞ্জয় সরদার বলেন, আমার ওয়ার্ডে ২৫ জন উপকারভোগী রয়েছে। তাদের কাছ থেকে কোনো সময় একটি টাকাও নেওয়া হয় না। কিছু উপকারভোগী সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলন করতে পারেনি, তবে তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বাকি টাকা জমা রয়েছে বলে জানান তিনি।

দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ মুঠোফোনে খুলনাটাইমসকে বলেন, ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা নোটিশ করে উভয় পক্ষকে ডাকবেন। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা যে প্রতিবেদন দেবেন, বাস্তবতার নিরিখে আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করবো।