চুকনগরে সম্পাদকসহ দু’সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা

0
225

চুকনগর প্রতিনিধি:
রেজিষ্টেশনবিহীন ও ট্রেডলাইসেন্সবিহীন ভূয়া সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে শত শত গরীব, অসহায় নিরীহ ও খেটে মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয় জমা নেয়ার নামে প্রতারণা ও অর্থ আতœস্বাতের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গ্রাহকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকার করায় দৈনিক যশোর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নুর ইসলাম, চুকনগর প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি এবং দৈনিক প্রবাহ পত্রিকার চুকনগর প্রতিনিধি ও দৈনিক যশোর পত্রিকার ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি গাজী আব্দুল কুদ্দুস, দৈনিক সমাজের কথা পত্রিকার চুকনগর প্রতিনিধি মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান লিটন, যুবলীগ কর্মী রফিকুল ইসলাম ও আব্দুল হালিম এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগকারী গ্রাহক রানী বেগমের নামে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক ও হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে এলাকার মামলাবাজ নামে খ্যাত ও সুদে মাহাজন নামে পরিচিত বিল্লাল হোসেন বাদশা নামে এক ব্যক্তি। গত ১৩/১০/২০২০ইং তারিখ ও ১৫/১০/২০২০ইং তারিখ তিনি বিজ্ঞ চিপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত খ অঞ্চলে পৃথক পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলা দুটি অফিসার ইনচার্জ ডুমুরিয়া থানাকে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক সঠিক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
জানা যায়, গত ২৭/০৯/২০২০ইং তারিখ রানী বেগম ও ০৫/১০/২০২০ ইং তারিখ ফরিদা বেগম নামে দুই মহিলা ”বি-লাইফ সঞ্চয় এ্যান্ড ঋণদান সমিতি এবং বাদশা ট্রেডার্স সমিতির নাম ব্যবহার করে মানুষের সাথে প্রতারণা ও অর্থ আতœস্বাতের অভিযোগ” শিরোনামে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ২৭জন গ্রাহকের স্বাক্ষরিত এবং কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ৭২জন গ্রাহকের স্বাক্ষরিত দুটি পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দৈনিক সময়ের খবর, দৈনিক নওয়াপাড়া, সংযোগ বাংলাদেশ, প্রতিদিনের কথা, দৈনিক যশোর ও আমার একুশ পত্রিকাসহ একাধিক অনলাইন পোর্টালে সংবাদটি প্রকাশিত হয়। এই সংবাদের জের ধরেই পত্রিকার সম্পাদক সহ সাংদিকদের নামে ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গ্রাহকদের অভিযোগের পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ শাহানাজ বেগম তৎক্ষণাৎ উপজেলা সমবায় অফিসার এসএম সেলিম আক্তারকে বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিলেও অদ্যবধি তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। এদিকে চুকনগর প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি গাজী আব্দুল কুদ্দুস ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেনের নামে মিথ্যা,কাল্পনিক ও শত শত গ্রাহকের কষ্টার্জিত সঞ্চয়ের টাকা ফেরত না দেয়ার হীন মানুষিকতা এবং ভিত্তিহীন মামলা দায়ের ও বিভিন্ন মাধ্যমে সাংবাদিকদের হুমকী ধামকী প্রদান করায় গত ২১/১০/২০২০ ইং তারিখে ”বি-লাইফ সঞ্চয় এ্যান্ড ঋণদান সমিতি এবং বাদশা ট্রেডার্স সমিতির নাম ব্যবহার করে মানুষের সাথে প্রতারণা,অর্থ আতœস্বাতের অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ পরিবেশন করায় সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রসঙ্গ ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এবং মামলা দুটি সঠিক তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের দাবি জানিয়ে দু’সাংবাদিক খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা করায় চুকনগর প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ তৎক্ষনাৎ জরুরী মিটিং এর মাধ্যমে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে চুকনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি এম রুহুল আমীন, সাধারণ সম্পাদক শংকর ঘোষ, সিনিয়র সাংবাদিক ও কবি ইব্রাহিম রেজা, সাংবাদিক গৌতম রাহা, কোষাদক্ষ ডাঃ এম এ জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন, ইমরান হুসাইন, প্রভাষক আব্দুল রাজ্জাক, গাজী শামীম হোসেন মিঠু, বিএম ফিরোজ এক বিবৃতি দিয়েছেন। এছাড়া রেজিষ্ট্রেশনবিহীন ভূয়া সমিতির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডঃ প্রতাপ কুমার রায় বলেন, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয়ের নামে এভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া হবে ? আর আমি তাকে ট্রেড লাইসেন্স দিব এটা আমার দ্বারা সম্ভব না। এতবড় বিবেকহীন মানুষের পরিচয় আমি দিতে পারব না। এব্যাপারে উপজেলা সমবায় অফিসার এসএম সেলিম আক্তার বলেন, এটা যে রেজিষ্ট্রেশনবিহীন ভূয়া সমিতি সেটা প্রমানিত। আমি তদন্তেও সেটা পেয়েছি। কিন্তু সময়ের অভাবে আমি প্রতিবেদনটি দাখিল করতে পারছি না। তবে ১/২দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ শাহানাজ বেগম বলেন, গ্রাহকরা অভিযোগ করা মাত্রই আমি সমবায় কর্মকর্তাকে গত ০৬/১০/২০২০ইং তারিখের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও তিনি কেন প্রতিবেদন দিচ্ছে না সেই বিষয়টা আমি এখনি দেখছি। খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, আমরা খুলনা থেকে ম্যাজিষ্ট্রেট দিয়ে সকল বিষয় তদন্ত করব এবং কোন কারণে সাংবাদিকদের নামে মামলা হল সেটাও তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।