আশাশুনিতে কালভার্ট দিয়ে লবনাক্ত পানি প্রবেশ করায় নষ্ট হচ্ছে কয়েক শত একর জমির ধান ও লাখ লাখ টাকার সাদা মাছ

0
399

মইনুল ইসলাম:
আশাশুনিতে অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মাণ করায় মৎস্য ঘেরের লবনাক্ত পানিতে নষ্ট হচ্ছে স্থানীয় খালের মিষ্টি পানির প্রায় ৫ লাখ টাকার সাদা মাছ ও খালের উভয় পাড়ের ফসলী জমি। কালভার্ট নির্মাণের আগে স্থানীয়রা পরিকল্পিত ভাবে পানি নিষ্কাশন করালেও কালভার্ট নির্মানের পর এবার সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন কৃষকরা। জানাগেছে, ব্লু-গোল্ড কর্তৃক ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের চিলেডাঙ্গা বিলের কলাতলী খালে অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মাণ করায় মৎস্য ঘেরের লবনাক্ত পানিতে নষ্ট হয়েছে মিষ্টি পানির সাদা মাছ ও খালের উভয় পাড়ের ফলদী গাছ গাছালী এবং চলতি মৌসুমের ধানের আবাদ। বর্তমানে লবনাক্ত ঘেরের চাষীরা নেট পাটাজাল দিয়ে কোন রকম মাছ ভেসে যাওয়া থেকে ধরে রাখলেও অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মানের ফলে লবনাক্ত পানির কারণে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন মিষ্টি পানির মাছ ও ধান চাষীরা। চিলেডাঙ্গা টু বেউলা সড়কের উভয় পাশে স্থানীয় মৎস্য চাষীরা পরিকল্পিত ভাবে মাছ চাষ করে আসছিলেন। সড়কের এক পাশের ঘের মালিকরা লবনাক্ত পানিতে চিংড়ী চাষ করেন এবং সড়কের অপর পাশের ঘের মালিকরা মিষ্টি পানিতে বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ চাষ করে থাকেন। এ সড়কের প্রতিমধ্যে ব্লু-গোল্ড কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট নির্মাণ করেন। কালভার্ট নির্মাণকালে লবনাক্ত পানি ও মিষ্টি পানি আলাদা ভাবে রাখার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসী কালভার্ট নির্মাণের সময় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। এসময় ব্লু-গোল্ড কর্তৃপক্ষ লবনাক্ত পানি এবং মিষ্টি পানি নিয়ন্ত্রণ কালভার্ট নির্মাণ করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন। কিন্তু ব্লু-গোল্ড কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তাড়াহুড়ো করে অপরিকল্পিত ভাবে কালভার্ট নির্মাণ করে চলে যান বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বর্তমানে লবনাক্ত পানির কারণে বুধহাটা ইউনিয়নের বেউলা, মহেশ্বকাটি, নওয়াপাড়া, শ্বেতপুর এলাকার সাদা মাছ ও ধানের আবাদ মরে নষ্ট হয়েছে বলে জানান গ্রামবাসী। উক্ত কলাতলী খালের চাষী জাকির গাজী বলেন আমরা সরকারের প্রায় ৩ লাখ টাকা রাজস্ব দিয়ে এ খালে মাছ চাষ করে আসছি। আমাদের খালে লবনাক্ত পানি প্রবেশ করায় আমাদের মাছ সব মরে ভেষে উঠেছে। আমাদের এখন পথে বসার উপক্রম। এব্যাপারে জানতে চাইলে বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ আ ব ম মোছাদ্দেক বলেন ব্লু-গোল্ড এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড এলজিইডি’র অনুমতি ছাড়া রাস্তা কেটে যখন কালভার্ট নির্মানের কাজ শুরু করেন তখন তারা কথা দিয়ে ছিলেন লবনাক্ত পানি এবং মিষ্টি পানি নিয়ন্ত্রন কালভার্ট নির্মান করবে। কিন্তু কাজ শেষ হলেও লবনাক্ত পানি এবং মিষ্টি পানি নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা না করায় ফসলী ক্ষেতে এবং মিষ্টি পানির ঘেরে লবনাক্ত পানি প্রবেশ করে সাদা মাছতো ধ্বংশ হয়েই গেছে এবং হাজার হাজার বিঘার ধান ধ্বংস হওয়ার পথে। প্রধান মন্ত্রীর যে স্বপ্ন খাদ্যে সয়ংসম্পন্ন হয়ে সোনার বাংলা গড়ার বর্তমানে সেটা হয়তো আর এখানে বাস্তবায়ন হবে না। আমি সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কালভার্টটিতে লবনাক্ত পানি এবং মিষ্টি পানি নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা করার জোর দাবী জানাচ্ছি।