অবশেষে দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করলেন নোয়াখালীর সেই নারী

0
174

টাইমস ডেস্ক:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ও তার সহযোগী আবুল কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন নির্যাতনের শিকার সেই নারী (৩৭)। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই নারী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে নির্যাতনের শিকার ওই নারী অভিযোগ করেছেন, গত ২ সেপ্টেম্বর দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার আগে দেলোয়ার দু’বার তাকে ধর্ষণ করেছিলেন। এর মধ্যে একবার ধর্ষণ করা হয় প্রায় এক বছর আগে। আর দ্বিতীয়বার ধর্ষণ করা হয় রমজান মাসের কিছুদিন আগে। দ্বিতীয়বার ধর্ষণের ঘটনার দিন দেলোয়ারের সহযোগী কালামও তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বেগমগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ চৌধুরী ধর্ষণের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দেলোয়ার হোসেনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এ ছাড়া মামলার আরেক আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এর আগে গত মঙ্গলবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের কাছে নির্যাতনের শিকার ওই নারী এসব তথ্য জানান। তদন্ত দলের প্রধান মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মিলনায়তনে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ওই অভিযোগের কথা বলেন। নির্যাতনের শিকার নারীর বরাত দিয়ে ফায়জুল কবীর বলেন, ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন দেলোয়ার প্রায় সময় তাকে কুপ্রস্তাব দিতেন। কুপ্রস্তাবে সাড়া দিতে হুমকি-ধমকিও দেন দেলোয়ার। বছর খানেক আগে দেলোয়ার ওই নারীর ঘরে ঢুকে প্রথমবার ধর্ষণ করেন। গত রমজানের কিছুদিন আগে দেলোয়ার তার সহযোগী কালামের মাধ্যমে ওই নারীকে একটি নৌকায় ডেকে নেন। সেখানে দেলোয়ার ও কালাম দুজনই তাকে ধর্ষণ করতে চান। এ সময় দেলোয়ারের কাছে অনুনয়-বিনয় করলে কালামকে টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেন। এরপর নৌকায় দ্বিতীয়বার তাকে ধর্ষণ করেন দেলোয়ার। নির্যাতনের ঘটনার প্রথম দুটি মামলায় দেলোয়ারের নাম না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিরাপত্তাহীনতার কারণে ভুক্তভোগী নারী দেলোয়ারের নামে মামলা করেননি বলে আমাকে জানিয়েছেন। এমনকি ২২ ধারার জবানবন্দিতে দেলোয়ারের নাম না থাকার কারণ শুধু নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়। একই সঙ্গে ওই নারীকে ধর্ষণের ভিডিওগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।
আরও দু’জন গ্রেপ্তার: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার গত মঙ্গলবার গভীর রাতে সোহাগ ও নুর হোসেন নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আটকরা হলেন, একলাশপুর ইউনিয়ের পোড়া মুনসির ছেলে মো. সোহাগ ও সোলেমানের ছেলে নুর হোসেন। নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাদেরকে আটক করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনকে আদালতে সোর্পদ করলে আদালত পৃথকভাবে তাদের রিমান্ড মন্জুর করেন। এসপি আলমগীর হোসেন জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ টিমের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় অন্য আসামিদেরকেও আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, ৫ অক্টোবর রাত ১টায় নির্যাতিতা নারী বাদী হয়ে বাদলকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের বিরূদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেন।