সাবেক এমপি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. এন্তাজ আলীর ২২ তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ

0
305

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাবেক সংসদ সদস্য ও সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এড. এ এফ এম এন্তাজ আলীর ২২তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৯৮ সালের ২৬ জানুয়ারী পবিত্র শবে কদরের রাতে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের ভিপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং ৭১ এর যুদ্ধকালীন সময় মুজিব বাহিনী সাতক্ষীরার (তৎকালীন সময় সাতক্ষীরা মহকুমা) প্রধান ছিলেন। এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী ঢাকায় ৬ দফা আন্দোলনের (প্রথম দিনের আন্দোলনে) রাজধানী ঢাকায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে আন্দোলন শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওই আন্দোলনে সাবেক কেন্দ্রীয় আ’লীগ নেতা ও সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী মরহুম আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক কেন্দ্রীয় আ’লীগ নেতা ও সাবেক অর্থ মন্ত্রী মরহুম শাহ এস এম কিবরিয়া, সাতক্ষীরার এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী ও মাখন মিয়া অন্যতম ছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশ ব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়ে এবং তা জোরদার করতে এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী তার নিজ জেলা সাতক্ষীয় চলে আসেন। এছাড়া তিনি ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির জেলার সভাপতি, স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের সময় ১৯৯০ সালে সর্ব দলীয় ও ১৯৯৬ সালে জেলার আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া তিনি সাতক্ষীরার সামাজিক, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। মরহুম এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ নেতা রাজনৈতিক জীবনে কখনও নীতিভ্রষ্ট হয়নি। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে আজীবন সেই নীতি ও আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করেছেন। এমনকি যেসব নেতারা তার হাত ধরে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন, আজ তারা মঞ্চে বক্তব্য দিতে গেলে তার নামটি পর্যন্ত উচ্চারণ করেন না। এড. এন্তাজ আলীর পারিবার অভিযোগ করে বলেন, তার মৃত্যুর পর প্রায় ১২ দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে তার বাস ভবনে আসেন পরিবারকে সান্তনা জানাতে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য প্রবীণ এ নেতার মৃত্যুর পর থেকে জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত সময় কোন শোক ও স্মরণ সভাও করেনা। এমনকি এ নেতার নামে আজ পর্যন্ত সাতক্ষীরার কোন সড়ক তার নামে নামকরণ করা হয়নি। শহরের বিভিন্ন অলিগলির বিভিন্ন সড়কগুলো বিভিন্ন নামে নাম করণ করা হয়েছে। এমনকি এক সময়কার মুসলিম লীগ নেতার নামে নামকরণ করা হয়। শহরের পলাশপোল প্রাণ সায়ের খালের পাশের রাস্তাটি (পাকাপোল থেকে কাটিয়া বাজার ব্রীজ) এড. এন্তাজ আলীর নামে নামকরণ করার কথা থাকলেও তা ওই মুসলিম লীগ নেতার নামে রাস্তার নামকরণ করে। যেখানে দেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের চিহৃ মূছে ফেলতে চাইলেও আজও পর্যন্ত শহরের এ সড়কটির মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণ করা হয়নি। এমনকি সাতক্ষীরা ষ্টেডিয়াম এড. এন্তাজ আলীর নামে বারবার নামকরণেরও দাবী জানানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহযোগী আ’লীগের সাবেক সাংসদ ও বীরমুক্তিযোদ্ধার নামে সড়ক ও ষ্টেডিয়াম নামকরণ করা কেন হবেনা এ আক্ষেপ আজও ওই পরিবারটিকে কুরে কুরে খায়। পরিবারের সদস্যরা আরো অভিযোগ করে বলেন, জেলা আ’লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের কোন সংগঠনের কেউ এ ব্যাপারে আজও পর্যন্ত প্রতিবাদ করেনি, করেও না। এব্যাপারে এড. এন্তাজ আলীর পরিবার জেলা আ’লীগ, সদর এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও পৌর মেয়রের বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও আজও পর্যন্ত কেউ কোন কর্ণপাত করেনি। তাই মুক্তিযুদ্ধের এ পরিবারটি প্রধানমন্ত্রীসহ সকল জনপ্রতিনিধি ও বর্তমান জেলা প্রশাসকসহ উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে, আজ বাদ আসর পলাশপোল তেতলতলা জামে মসজিদে মরহুমের মৃত্য বার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত মিলাদ মাহফিলে সকলকে উপস্থিত হওয়ার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।