সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও বাজারে সবজির দাম চড়া

0
332

খুলনাটাইমস: বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবারহ থাকা সত্তে¡ও সবজির দাম চড়া। ক্রেতাদের অভিযোগ, বিক্রেতার সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে দাম বেশি নিচ্ছে। অথচ সব সবজিই বাজারে রয়েছে। এমনকী শীতকালীন আগাম সবজিও বাজারে বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। রাজধানীর হাতিরপুল, কাঁঠালবাগান, কলাবাগান, সেগুনবাগিচা ও শান্তিনগর কাঁচাবাজারে এসব দৃশ্য দেখা যায়। ক্রেতারা বলছেন, শীতকাল না হলেও বর্তমান বাজারে রয়েছে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ। বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, শসা, টমেটো, বেগুনসহ আরও নানান সবজি দেদারসে বিক্রি হলেও দাম কমছে না মোটেও। প্রতিদিন বেড়েই চলেছে এসবের দাম। অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সা¤প্রতিক সময়ে উত্তরাঞ্চলে বন্যার কারণে পাইকারি বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজিসহ কাঁচা মালামালের সরবরাহ কমেছে। তাই দামও বেশি। অন্যদিকে কয়েকসপ্তাহ ধরেই বেশ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজ। তবে কিছুটা নিম্নমুখী রয়েছে মাংসের বাজার। অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল ও ডিমের দাম। বাজারভেদে প্রতিকেজি টমেটো প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া প্রতিকেজি পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, উস্তা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁডস ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ১২০ টাকা, কচুরছড়া ৬০ টাকা, কচুরলতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কলা ২৫ থেকে ৪০ টাকা হালি, লাউ প্রতিপিস ৫০ থেকে ৮০ টাকা, জালিকুমড়া প্রতিপিস ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের শাক। প্রতি আঁটি লালশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলার শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, লাউশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কুমড়ার শাক ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, পুঁইশাক ২০ থেকে ৩০ টাকা, কলমিশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। কাঁঠালবাগান বাজারের সুমন নামে এক সবজি বিক্রেতা বলেন, স¤প্রতি দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা হওয়ায় সবজি মাঠের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। পাইকারি বাজারে মালের সরবরাহ কম হওয়ায় আমাদের বাড়তি দাম দিয়ে কিনে আবার বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে তার যুক্তির সঙ্গে একমত না এ বাজারের নিয়মিত ক্রেতা জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, বন্যা এক অঞ্চলে হয়েছে। কিন্তু রাজধানীতে সবজি আসে সারাদেশ থেকে। আবার এখন শীতকাল না হলেও বাজারে শীতের সবজি রয়েছে। তবে কেন বন্যার অজুহাত, মূলত বেশি মুনাফার আশায় দাম বাড়ানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ব্যবসায়ীদের কারণেই প্রতি সপ্তাহে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। ক্রেতা জিয়াউর রহমানের কথার কিছুটা সত্যতাও পাওয়া গেল হাতিরপুল বাজারে গিয়ে। সেখানে প্রতিটি সবজিতে কেজিপ্রতি ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেশি দাম রাখা হচ্ছে। কাঁঠালবাগান বাজারে কাঁকরোল-বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা, সেই একই সবজি হাতিরপুলে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। মাত্র কয়েক কিলোমিটার ব্যবধানে এই দুই বাজারে দামের বেশ হেরফের লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়াও কলাবাগান, সেগুনবাগিচা ও শান্তিনগর বাজারেও দামের একই হেরফের লক্ষ্য করা গেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের বাজার স্থিতিশীল দেখা গেছে। যদিও বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেশি, তারপরও রুই-পাবদা-তেলাপিয়াসহ অন্যান্য মাছের দামে খুব বেশি পার্থক্য দেখ যায়নি। অন্যদিকে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, রসুন, আদা। দেশি রসুন প্রতিকেজি ১৭০ থেকে ২০০ টাকা, ইন্ডিয়ান ১৯০ টাকা থেকে ২০০, আদা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, পেঁয়াজ দেশি ৫৫ থেকে ৭০ টাকা, ইন্ডিয়ান ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে এসব বাজারে মাংসের দাম কিছুটা নিম্নমুখী রয়েছে। গরুর মাংস ঈদের আগে ৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে মহিষের মাংস। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। দেশি মুরগি ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতি পিস ২৩০ টাকা, সোনালি মুরগি ৫০০ গ্রাম প্রতি হালি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বয়লার প্রতিকেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে ঈদের পর থেকেই অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল ও ডিমের দাম।