সুন্দরবন সুরক্ষা নিশ্চিত করে ইকো ট্যুরিজম গড়ে তোলার দাবি

0
23

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুন্দরবনকে সুরক্ষিত করে পরিবেশবান্ধব ইকো ট্যুরিজম ও রিসোর্ট গড়ে তোলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণে অনেক বেশি উৎসাহিত হচ্ছে। বন সংলগ্ন ইকো ট্যুরিজম গড়ে উঠলেও সংরক্ষণের জন্য আলাদা কোনো নীতিমালা নেই। বন বিভাগের যে নীতিমালা আছে, তা দিয়ে এই শিল্পের ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব নয়। কারণ সুন্দরবন ও বন ঘেঁষা ইকো রিসোর্ট ও কটেজের প্রকৃতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই সুন্দরবন সুরক্ষার জন্য আলাদা নীতিমালা এবং পরিবেশবান্ধব ইকো ট্যুরিজম ও রিসোর্ট গতে তোলার দাবি জানানো হয়েছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে ইসলভ ইন্টারন্যাশাল লিমিটেডের অর্থায়নে কমিউনিটি বেইজড ইকো ট্যুরিজম (সিবিইটি) প্রকল্পের আওতায় বেইজলাইন সার্ভের ফাইন্ডিংস শেয়ারিয়ের লক্ষ্যে খুলনা নগরীর সিএসএস আভা সেন্টারে ওয়ার্কশপ অন বেইজলাইন স্ট্যাডি অন কমিউনিটি বেইজড ইকো ট্যুরিজম (সিবিইটি) এরাউন্ড সুন্দরবন শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

কর্মশালার মুক্ত আলোচনা সভায় বারবার উঠে আসে সুন্দরবন ঘিরে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা পর্যটনশিল্প বনের জন্য ক্রমান্বয়ে হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পর্যটকদের পদাচরণে শব্দ দূষণ, প্লাস্টিক দূষণ, বর্জ্য দূষণের মতো সব ঘটনাই ঘটাচ্ছে। ইকো ট্যুরিজম-ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলেও সেখানে পর্যটকদের কোনো নিরাপত্তার বালাই নেই। সভায় অংশগ্রহনকারীরা সুন্দরবন রক্ষায় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের আরও বেশি তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা-০১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনের সংসদ সদস্য ননীগোপাল মণ্ডল। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. ফিরোজ শাহ, খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো, খুলনা অঞ্চলের ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, খুলনার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন ও ইসলভ ইন্টারন্যাশাল লিমিটেডের ডাইরেক্টর অপারেশন্স বজলে কাদের চৌধুরী।

স্বাগত বক্তব্য দেন ইসলভ ইন্টারন্যাশাল লিমিটেডের হেড অব সোশিও ইকোনোমিক মো. মঞ্জরুল হুদা ও প্রকল্প সম্পর্কে উপস্থাপন করেন সিবিইটি প্রকল্পের টিমলীডার ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেষ্ট্রি অ্যাণ্ড উড টেকনোলোজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মো. ওয়াসিউল ইসলাম।

সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সম্প্রতি সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় ইকো-কটেজ ও রিসোর্ট সম্প্রসারিত হয়েছে। ইকো রিসোর্ট ও কটেজগুলোকে একটা গাইডলাইনের মধ্যে আনা হবে, ফলে এই বিষয়গুলো নিয়ে যে সকল সমস্যা রয়েছে, তার সমাধান হবে। তবে বিদ্যমান আইনের আওতায় কেউ যদি কোন অপরাধ করে, তা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। ইকো রিসোর্টগুলো যাতে পরিবেশবান্ধব হয়, সে বিষয়ে সকলের প্রতি আহবান জানান।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ননীগোপাল মণ্ডল বলেন, সুন্দরবন আজ অবক্ষয়ের পথে। সুন্দরবনে সুন্দরী গাছ কমে গেছে এবং বন তার প্রকৃতি হারাচ্ছে। তবে এই সুন্দরবনকে ঘিরে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। জীবিকার চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে সুন্দরবন আজ বিপর্যস্ত। প্রযুক্তি প্রসারের পাশাপাশি এলাকায় ইকো ট্যুরিজম প্রসারিত হয়েছে।

ননীগোপাল ইকো রিসোর্টের প্রসারকে স্বাগত জানিয়ে আরও বলেন, ইকো পদ্ধতির মাধ্যমে সুন্দরবনে পর্যটন প্রসারিত হচ্ছে। তিনি আয়োজক সংশ্লিষ্টদেরকে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করার আহ্বান জানান, যা তিনি সংসদে বিল হিসেবে উত্থাপনের ঘোষণা করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here