দাকোপে সড়ক ঘেঁষে করাতকল, চলাচলে দুর্ভোগ

0
58

আজিজুর রহমান, দাকোপ থেকে :
খুলনার দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়ক ঘেঁষে ১২টি করাতকল গড়ে উঠেছে। আইন অমান্য করে গড়ে ওঠা এসব করাতকল গত কয়েক বছরে উচ্ছেদ করা হয়নি। এ কারণে যানবাহনের চালক, যাত্রীসহ পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অথচ ২০১২ সালের করাতকল (লাইসেন্স) বিধিমালা অনুযায়ী, করাতকল স্থাপনে বন বিভাগে আবেদন করতে হবে। জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন জায়গায় করাতকল স্থাপন করা যাবে না। অভিযোগ রয়েছে, এসব অবৈধ করাতকলে সুন্দরবন থেকে পাচার হয়ে আসা বিভিন্ন প্রকারের সরকার নিষিদ্ধ গাছ চেরাই করে চালাচ্ছে জমজমাট ব্যবসা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে সুন্দরবনের বনজসম্পদ।

বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ১২টি করাতকল গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে পাঁচটি করাতকলের লাইসেন্স নেই। বনবিভাগের নীতিমালায় (সংরক্ষিত আইন) সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন সম্পর্ণ নিষিদ্ধ। তারপরেও নীতিমালা ভেঙে সরকার দলীয় স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় লাইসেন্সবিহীন গড়ে ওঠা এসব করাতকলে দিনরাত অবৈধভাবে নানা রকমের কাঠ চেরাই করে যাচ্ছে।

দাকোপ উপজেলা বন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মিজানুর রহমান বলেন, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা করাতকলগুলো উচ্ছেদ করার জন্য কাজ করতে চাই। উপজেলা প্রশাসন যদি সহায়তা করে তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে শুধু জরিমানা না করে উচ্ছেদ করা হবে।

সড়ক ঘেঁষে যেসব করাতকল রয়েছে এর মধ্যে চালনা-পোদ্দারগঞ্জ সড়কের আঁচাভূয়া বাজার সংলগ্ন, চালনা ওয়াপদার রাস্তার পাশে, পোদ্দারগঞ্জ-বাজুয়া সড়কের চড়ার বাঁধ, বাজুয়া বাজার সড়ক সংলগ্ন লাউডোব খেয়াঘাট, লাউডোব-ঠাকুরবাড়ি সড়কের ত্রিমোহনী এলাকায় এসব করাতকল স্থাপন করা হয়েছে।

চালনা এনসি ব্লুবার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পল্লব বিশ্বাস বলেন, রাস্তা দিয়ে চলার সময় বাতাসে কাঠের গুঁড়া উড়ে চোখে এসে পড়ে। মোটরসাইকেল নিয়ে সড়কে চলাচলের সময় কাঠের গুঁড়া চোখে এসে পড়ায় দুর্ঘটনাও ঘটেছে।

আঁছাভূয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খলিল শেখ বলেন, দিনরাত করাতকলে কাজ চলায় কাঠের গুঁড়া বাতাসে উড়ে চলন্ত যানবাহনের চালক ও পথচারীদের চোখে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। সেই সঙ্গে সড়ক ঘেঁষে করাতকলগুলোর কাঠ ও গাছের গুঁড়ি রাখায় সড়কগুলোও সংকুচিত হয়ে পড়ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, বনবিভাগের কাছে অবৈধ করাতকলের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পাওয়া গেলে নীতিমালা না মেনে পরিবেশের ক্ষতি করলে এসকল করাতকলের লাইসেন্স বাতিলসহ উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।