খুলনায় নতুন করে প্রতিদিন গড়ে ২৩ জন নারী-পুরুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে

0
314

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ্যাম্ব্যুলেন্স, রিক্সা ও ভ্যানযোগে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে স্থানীয় সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে। প্রতিদিন গড়ে ২৩ জন নারী-পুরুষ নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীর চাপ বেশী। ঢাকা থেকে আসা যাত্রীরাই বেশীর ভাগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। আগষ্ট মাসে জেলায় ৭৪৬ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। অধিকাংশই খুলনা জেলার অধিবাসী।
সিভিল সার্জন অফিস ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১৩ আগষ্ট থেকে ২৫ আগষ্ট পর্যন্ত ১৩৯ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। শুধু মাত্র গতকাল সোমবারই নতুন করে ১৮ জন আক্রান্ত হয়। তার মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬ জন ও জেনারেল হাসপাতালে ২ জন চিকিৎসা নিচ্ছে। চলতি আগষ্ট মাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৬২৯ জন চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ী ফিরেছে। ১১৭ জন খুলনা মেডিকেল, জেনারেল হাসপাতাল, সিটি মেডিকেল, গাজী মেডিকেল, আদদ্বীন মেডিকেলে ও ফুলতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। রোগীদের পরীক্ষানীরিক্ষা করার জন্য সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে ১হাজার ৯৪২টি কিট মজুদ রয়েছে। গণসচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিএমএ’র পক্ষ থেকে বিভিন্নস্থানে ব্যানার টানানো হয়েছে।
সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক মশক নিধনে জাতিসংঘ শিশু পার্ক ও নতুন বাজারে ফগার মেশিন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট বিতরণ করেন। নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান মনির নেতৃত্বে দলের একটি টিম সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করেছে।
২৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফকির মোহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম ও ২৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজমল আহমেদ তপন, ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শমশের আলী মিন্টু, ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান বিশ্বাস, সংরক্ষিত আসনের ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লুৎফুন নেছা লুৎফা ডেঙ্গু প্রতিরোধে নানা কর্মসূচি পরিচালনা করেছেন।
খুলনার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আতিয়ার রহমান শেখ জানান, পর্যায়ক্রমে এখানে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রনে আসবে। নিয়ম মেনে চললে রোগের বিস্তার কমবে। আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। সবাইকে সমান মর্যাদায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরিক্ষানীরিক্ষায় ফিস নেওয়া হচ্ছেনা।
২৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফকির মোহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম জানান, ছাদে ফুলের টবে জমে থাকা পানি থেকে এডিস মশা জন্ম নিচ্ছে। ভবনের ছাদে ফগার মেশিন ব্যবহার করা যাচ্ছেনা। ঙ্গেুর বিস্তার রোধে ভবন মালিকদের সচেতন হতে হবে।
কেসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ একেএম আব্দুল্লাহ জানান, লাল হাসপাতাল, কুলিবাগান, ২০নং ওয়ার্ডে নগর স্বাস্থ্য ভবন ও তালতলা হাসপাতাল থেকে সচেতনতা মুলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তার দেওয়া তথ্যমতে আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই ঢাকা থেকে আসা যাত্রী। নগরীর বিভিন্ন নর্দমা পরিস্কার ও মশক নিধন কার্যক্রম প্রতিদিন চলছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র জানান, এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তে মৃত্যু ব্যাক্তিরা হচ্ছেন- খুলনার রূপসা উপজেলার খাজাডাঙ্গা গ্রামের মিজান, স্কুল ছাত্র মঞ্জু, দিঘলিয়া উপজেলার গৃহবধু মর্জিনা বেগম, বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার উত্তর তাফালবাড়ী গ্রামের গৃহবধু খাদিজা বেগম এবং গোপালগঞ্জের নারকেলবাড়ীয়া গ্রামের রাসেল।