আশাশুনির কুল্যায় ভিজিডি কার্ডের নামে চাঁদাবাজি!

0
154

আশাশুনি প্রতিনিধি:
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ড করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আদায়ের প্রতিবাদে ও চাঁদাবাজীর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১ মার্চ) বিকালে গুনাকরকাটি ব্রীজের মুখে প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁদাবাজীর শিকার ভুক্তভোগী, ভুক্তভোগির পরিবার ও এলাকার প্রতিবাদী নারী পুরুষের অংশ গ্রহনে মানববন্ধন চলাকালে কুল্যা গ্রামের সিরাজুলের স্ত্রী পারভিন, শহিদের স্ত্রী মাছুরা, ছবুরের মেয়ে মাহমুদা জানান, তাদেরকে কার্ড করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ১ নং ওয়ার্ডের গ্রামপুলিশ নিজে ৬০০০ করে টাকা ঘুষ নিয়েছেন। ইউনুছের স্ত্রী আছিয়া জানান, তার কাছ থেকে ৫২০০ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তারা কার্ড পায়নি, টাকাও ফেরৎ দেয়নি। এছাড়া মোত্তাজুল মল্লিকের স্ত্রী রুমা ও সাদ্দামের স্ত্রী শাহিদা জানান, তাদেরকে কার্ড করে দেওয়ার নামে রাজ্জাক ঢালীর পুত্র লিটন ঢালী (৫০০০ ও ৬০০০) ১১ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। ইউপি সদস্য আলহাজ্ব আঃ মাজেদ তাকে মারপিট করলে তারা রবিবার রাতেইটাকা ফেরৎ দিয়েছে। এদিকে কার্ডের তালিকায় নাম উঠার পরে ছলেমান গাজীর স্ত্রীর নিকট থেকে ২০০০ টাকা, সন্যাসীর স্ত্রীর কাছ থেকে ৪০০০, রাম প্রসাদ সরদারের স্ত্রীর কাছ থেকে ৪০০০ ও আলমের স্ত্রীর কাছ থেকে ২০০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে। আবুল কাশেম সাহাজী জানান, তার স্ত্রী তৈয়েবার কার্ড করিয়ে দেওয়ার নাম করে গুনাকরকাটির আরিফুল ৪৫০০ টাকা আদায় করেছে। গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, কুল্যা গ্রামে অনেকের নিকট থেকে গ্রাম পুলিশসহ বেশ কয়েকজন যেভাবে টাকা আদায় করেছে, একই ভাবে ইউনিয়নের অন্যান্য ওয়ার্ডেও কার্ড দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে। তারা উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান ও মাননীয় সংসদ সদস্যর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, দ্রæত প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ইউনিয়নের অসহায় গরীব ভূমিহীন মানুষকে প্রতারনার মাধ্যমে চরম বিপাকে ফেলার পাশাপাশি সরকারি নির্দেশ অমান্য করে আওয়ামীলীগ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা বন্ধ হবে না। এব্যাপারে ইউপি সদস্য আলহাজ্ব আঃ মাজেদ বলেন, চেয়ারম্যান আমাদের দেওয়া তালিকা বাদ দিয়ে তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে কার্ডের তালিকা করিয়েছেন। গ্রাম পুলিশসহ ঐ চক্রটি নিঃস্ব ও গরীব মানুষদেরকে কার্ড দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদাবাজী ও অর্থ হাতিয়ে নিয়ে চলেছে। বারবার হুশিয়ারি করা হলেও তারা থেমে থাকেনি। রবিবার দুপুরে কার্ডের নামে অর্থ লুটপাটকারী লিটন গাজীকে চাঁদাবাজীর শিকার অসহায় মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে কার্ড করিয়ে দেওয়ার নামে চাঁদা/টাকা আদায় করেছিস কেন? জানতে চাইলে সে প্রথমে অস্বীকার করে, ‘প্রমান হলে ৫০ জুতার বাড়ি খাব’ বলে হুঙ্কার দেয়। পরে টাকা দিয়েছে এমন ভুক্তভোগিদের মুখোমুখি করে প্রমানিত হওয়ার পর তাকে প্রকাশ্যে জুতার পরিবর্তে থাপ্পড় মেরে সন্ধ্যার মধ্যে টাকা ফিরিয়ে দিতে বলি। এলাকাবাসী বলেন, টাকা ফেরৎ দেওয়াই অপরাধের প্রতিকার হবেনা। সাথে সাথে তাদেরকে আইনের মুখোমুখি করার জন্য জোর দাবী জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা বদলী হয়ে অন্যাত্র চলে যাওয়ার তদস্থলে এখনো নবাগত ইউএনও কর্মস্থলে না পৌছানোয় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।