খবর বিজ্ঞপ্তি:
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বিরাষ্ট্রীয়করণের সিদ্ধান্ত বাতিল, অবিলম্বে সকল পাটকল চালু, আধুনিকায়ন, বদলী, দৈনিকভিত্তিকসহ সকল শ্রমিকের বকেয়া সঠিক হিসাব অনুযায়ী অবিলম্বে পরিশোধ, আলীম জুট মিলের শ্রমিকদের ৬৪ সপ্তাহের বিলসহ বকেয়া সকল পাওনা, বকেয়া ৬ সপ্তাহের মজুরী, উৎসব বোনাস, ইনক্রিমেন্ট এবং ২০২০ সালের জুলাই মাসের ২ দিনের মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ ও পাটকল রক্ষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ ১৪ দফা দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বদলী-অস্থায়ী-দৈনিকভিত্তিক শ্রমিক ও (শ্রমিক হাজিরায় কর্মচারী) সমন্বয় আঞ্চলিক কমিটি, খুলনা-যশোর অঞ্চলের উদ্যোগে শুক্রবার ২৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেল ৫টায় খালিশপুরস্থ পিপলস গোলচত্বরে এক বিশাল শ্রমিক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন আঞ্চলিক কমিটির আহŸায়ক শ্রমিকনেতা মোঃ ইলিয়াস হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব শ্রমিকনেতা মোঃ আলতাফ হোসেন ও শ্রমিকনেতা নুরুল ইসলাম। জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের আহবায়ক এ্যাড. কুদরত-ই-খুদা। বক্তব্য রাখেনÑবাম গণতান্ত্রিক জোট ও গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল,পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সদস্য এস এ রশীদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) খুলনা জেলা সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত নান্টু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সদস্য ও খুলনা জেলা সভাপতি মোজাম্মেল হক খান, টিইউসি খুলনা জেলা সভাপতি এইচ এম শাহাদাৎ, শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় নেতা কাজী মোঃ রুহুল আমিন, শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য পরিষদ নেতা রুহুল আমিন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট খুলনা জেলা সভাপতি আবদুল করিম, টিইউসি খুলনা জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম চন্দন, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম খুলনা জেলা সভাপতি কোহিনুর আক্তার কণা, আয়োজক কমিটির উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, সিপিবি ফুলতলা উপজেলা নেতা গাজী আফজাল হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন খালিশপুর থানা আহবায়ক আলমগীর হোসেন লিটু, সিপিবি খালিশপুর থানা নেতা মিজানুর রহমান স্বপন, শ্রমিকনেতা সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসেদ আলম শমশের, মোঃ আলমগীর হোসেন, নূর মোহাম্মদ, মোশাররফ হোসেন, গাজী হামজা, শামস শারফিন শ্যামন, মিজানুর রহমান, গিয়াস উদ্দিন, বাচ্চুু বেপারী, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ। জনসভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, ২৫টি পাটকল বন্ধের রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের কারণে আজ ৫০ হাজার বদলী-স্থায়ী ও দৈনিকভিত্তিক শ্রমিক কর্মহীন। শ্রমিকদের পাওনা প্রদানের ক্ষেত্রেও সরকার প্রতারণামূলক ব্যবস্থা জারি রেখেছে। এখনো ১৮ হাজার ২ শত বদলী শ্রমিকের বকেয়া পাওনার কোন খবর নেই। ৭ হাজার দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক জানে না তারা আদৌ কোন অর্থ পাবে কি না। শঙ্কা, অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে কলোনী থেকে উচ্ছেদ হওয়া শ্রমিকেরা। নেতৃবৃন্দ বলেন, দৈনিক ভিত্তিক, বদলী, স্থায়ী শ্রমিক, পাটচাষী ও তাদের পরিবার অনেকাংশে জীবনমৃত। শ্রমিক পরিবারের জীবন ও জীবিকা চরম অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাদের সন্তানদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। হৃদরোগ, স্ট্রোক, হাঁপানী, এ্যাজমা, কিডনী রোগে আক্রান্ত সদস্যদের ওষুধ কিনে দেবার সামর্থ নেই। অথচ অনেক সময় দেশীয় প্রাইভেট চিকিৎসার ওপর আস্থা হারালে মন্ত্রী, সচিব, প্রভাবশালী সংসদ সদস্য, ক্ষমতাভোগী রাজনৈতিক ব্যক্তি সিঙ্গাপুরে ছুটে যায়। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীও যুক্ত। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সোনালী আঁশই পাটকল শ্রমিকদের এতোদিন বাঁচিয়ে রেখেছিল। শুধু তাই নয়, সোনালী আঁশের আয় রাষ্ট্রের জাতীয় অর্থনীতির মূলচালিকা শক্তিও। বিশ্বব্যাপী সোনালী আঁশের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যে মান ও মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিল তা আজ ভুলুণ্ঠিত হলো। যারা সোনালী আঁশের স্বপ্ন ও সম্ভাবনাকে ধ্বংস করতে তৎপর তারা ইতিহাসে নব্য মীরজাফর হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। তারা শ্রমিক-কৃষক-জনতার প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় মসনদ থেকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। আর যারা সোনালী আঁশের স্বপ্ন ও সম্ভাবনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সংগ্রাম করেছেন, কারাগারে গিয়েছেন তারা গৌরবোজ্জ্বল ভ‚মিকার জন্য ইতিহাসে স্থান পাবেন। জনসভা শেষে আগামী ৩ মার্চ খালিশপুরে, ৮ মার্চ পথেরবাজার দিঘলিয়া ও ২৮ মার্চ খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন এবং ১৫ মার্চ খালিশপুর শিল্পাঞ্চলে বিক্ষোভ মিছিলে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।