দেবহাটার নাংলায় ভাঙ্গন কবলিত স্থান পরিদর্শন করলেন জেলা প্রশাসক ও- আওয়ামীলীগ

0
901

আব্দুর রব লিটু, দেবহাটা: দেবহাটা উপজেলার নাংলা-ছুটিপুর এলাকায় প্রবল ঘূর্নিঝড় আম্ফানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী নদী ইছামতি দক্ষিন নাংলা এলাকায় ভাঙ্গন কবলিত বেড়িবাধ পৃথক পৃথক ভাবে পরিদর্শন করেছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল,জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তি যোদ্ধা আলহাজ্ব মুনসুর আহম্মেদ, সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম। ঘূর্নিঝড় আম্ফানে এ ভেড়ীবাধটি ভেঙ্গে গিয়ে ঐ এলাকার ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়।এই ভাঙ্গনে দক্ষিন নাংলা, মাঝেরআটি, জোনাইপাড়া, মোল্লাপাড়া ও ছুটিপুর গ্রামের মানুষের জীবন একদিকে যেমন অচল হয়ে পড়েছে তেমনি অন্যদিকে তারা ছেলে মেয়ে, গবাদী পশুসহ জিনিষপত্র নিয়ে রয়েছেন হুমকির মুখে। অচিরের এর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ঝুঁকিতে পড়তে পারে পাশর্^বর্তী আরো কয়েকটি গ্রামের মানুষ। সহায় সম্পদ রক্ষার জন্য তাদের খাওয়া ঘুম প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু প্রায় সপ্তাহ পার হতে চললেও পাউবো বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ বাধ মেরামতে কোন পদক্ষেপ এখনো গ্রহন না করায় ঐ গ্রামগুলির মানুষ হতাশ। যার কারনে বুধবার দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল সরেজমিনে ভাঙ্গন কবলিত স্থানটি পরিদর্শন করেন। এসময় জেলা প্রশাসকের সাথে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন, দেবহাটা উপজেলা আঃলীগের সভাপতি নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মুজিবর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এসময় শতশত মানুষের পক্ষে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুজিবার রহমান এলাকার মানুষকে বাচাতে নতুন একটি রিংবাধ এবং যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দ্বারা ওয়াপদার বাধ কেটে নিচু করার ফলে জলোচ্ছাসে সহজে বাধ ভেঙ্গে যায় তাদের কাছ থেকে ক্ষতি পুরন চেয়ে মৌখিক এবং লিখিত ভাবে দাবী জানান হয়। তাৎক্ষনিক ভাবে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী আলহাজ্ব ডাঃ আফম রুহুল হক এমপি’র সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এসময় জেলা প্রশাসকের মোবাইল ফোনে সাবেক স্বাস্থ মন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব রুহুল হক এমপি উপস্থিত জনসাধারনের উদ্দেশ্য কথা বলেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক উপস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়েরকে দ্রুত ভাঙ্গন কবলিত স্থান ঠিক করার নির্দেশ দেন এবং জনসাধরনকে বিকল্প রিং বেড়ী বাধের আশ্বাস দেন। এরআগে একইদিন দুপুর ১ টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা আঃলীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ মুনসুর আহম্মেদ এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আঃলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম উক্ত ভাঙ্গন কবলিত ভেড়ীবাধটি পরিদর্শন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, দেবহাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ¦ আব্দুল গনি,উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকোশলী রাশেদুর রহমান,উপজেলা আঃলীগের সভাপতি নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মুজিবর রহমান, সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, জেলা পরিষদ সদস্য বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ¦ আল ফেরদাউস আলফা, পারুলিয়া ইউপি চেয়াম্যান সাইফুল ইসলামসহ স্থানীয় ইউপি সদস্য ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর দাবীর পক্ষে একটি দাবীনামা নেতৃবৃন্দের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে এলাকার সাধারন মানুষ নিজেদের শ্রমে ভাঙ্গন কবলিত স্থানটি কোনরকমে মেরামত করলেও তাদের মধ্যে এক অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। বড় ধরনের জোয়ার সৃষ্টি হলে ঐ বাধটি ভেঙ্গে পুনরায় প্লাবিত হতে পারে কয়েকটি গ্রাম। স্থানীয়রা জানান, আগামী ৩/৪ দিন পরে বড় ধরনের গোন উঠবে, আর সেসময় হয়তো আবারো তারা প্লাবিত হতে পারে। তাই এক অজানা আশঙ্খায় তারা দিনযাপন করছেন।উল্লেখ্য গত কয়েকমাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে উক্ত স্থানে ব্লক দেয়ার জন্য ১৬ কোটি টাকার বরাদ্দ করা হয়। কাজটি টেন্ডার পান ঢাকার এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কাজটি করছে সাতক্ষীরার এক ঠিকাদার। ঐ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রশাস্ত ভেড়ীবাধটি উপর থেকে মাটি কেটে নিচু করে ফেলে। যার ফলে ঝড়ের কবলে ভেড়ীবাধ সহজেই উপচে পানি গ্রামের মধ্যে ঢুকতে ঢুকতে বাধটি ভেঙ্গে যায়।তা ছাড়া অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নদীর পাড়ের সাথে মৎস্য ঘের গড়ে তোলার ফলে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব মৎস্য ঘের পরিচালনা করেন। যার ফলে স্থানীয়দের কোন কথায় তারা কর্ণাপাত করেননা। যে কারণে নদী ভাঙ্গন থামছে না। তবে বর্তমান নদীতে জোয়ারে পানি বেশি হওয়ায় উপজেলার অধিকাংশ বেড়িবাধ নাজুক হয়ে দাড়িয়েছে। এতে যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে হুমকির মুখে থাকা বিভিন্ন এলাকার ভেড়ীবাধ। তাই অবিলম্বে সংস্কার করার জন্য দাবী জানিয়েছে এলাকা বাসী।