সরকার ও বিত্তবানদের সাহায্যে বাঁচতে চায় তাঁরা

0
1247

নিজস্ব প্রতিবেদক,খুলনাটাইমস :
খুলনার দাকোপ উপজেলার পানখালি ইউনিয়নের খাটাইল গ্রামের শিবপদ মণ্ডল(৩৯)। জন্মের তিনবছর পর তাঁর শরীরে টিউমারের চিহ্নি দেখা দেয়। অর্থের অভাবে স্থানীয় হোমিও প্যাথিক চিকিৎসকের নিকট থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসএসসি পরিক্ষায় অংশ নেন তিনি।

পরিবারে অভাব থাকায় লেখাপড়া না করে সংসার জীবনে চলে যান তিনি। বিয়ের পরে স্ত্রী রিতা মণ্ডলের গর্ভে সেজ্যোতি মণ্ডল নামে তাঁদের একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেন। জন্মের চার থেকে পাঁচ মাস বয়সে সেজ্যোতির কোমরে বাবার মত একই অবস্থা দেখা দেয়। সে এখন পঞ্চম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। এরপর ওই দম্পত্তি আরও একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। তাঁর নাম রেখেছে সেতু মণ্ডল(৮)। সেতু জন্মের দুইমাস পর সেও একই রোগে আক্রান্ত হয়। নিউরোফাইব্রোমেটোসিস নামক রোগটি এখন তাঁদের সর্বাঙ্গ জুড়ে ফেলেছে।

পাঁচ সদস্যের অতিদরিদ্র পরিবারের পিতা ও দুই সন্তান একই দূরারোগ্যব্যাধীতে আক্রান্ত হয়ে এখন মৃত্যু পথযাত্রী। টাকার অভাবে বিনাচিকিৎসায় প্রতিবন্ধী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে তাঁরা। জীবন বাঁচাতে তাঁরা সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য কামনা করেছেন।

শিবপদ মণ্ডল জানান, তিনবছর বয়সে পিঠে টিউমারের মতো দেখা দেয়। ধীরে ধীরে ক্ষতটি বড় হওয়ায় স্থানীয় চিকিৎসকের সেবায় সুফল না পেয়ে ভারতের কলকাতার আর্জিকল হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। দীর্ঘ পাঁচ বছর সেখানে চিকিৎসা নিয়ে সর্বশেষ কলকাতার পি ব্যানার্জির হোমিও চিকিৎসা নিয়ে ভাল না হওয়ায় হতাশ হয়ে দেশে আসেন। এরমধ্যে স্ত্রী দুই সন্তানকে এমন অবস্থা দেখে পরিবার ছেড়ে তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। তিনি আরও জানান, বর্তমানে সারা শরীরের টিউমারগুলো মাঝেমধ্যে নদীর ঢেউয়ের মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়। শরীরের সমস্ত শিরাকষে আসে। সঠিকভাবে চলাফেরাও করতে পারছি না। লাঠিতে ভর দিয়ে অনেক কষ্টে চলতে হয়। এমন অবস্থাও পরিণত হচ্ছে তাঁর ওই দুই সন্তানের।

শিবপদ মণ্ডলের বৃদ্ধ বাবা ঠাকুর দাস মণ্ডল বলেন, সহায়সম্পত্তি বলতে ভিটেবাড়ী ছাড়া আর কিছুই নাই। যেটুকু ছিল আর সঙ্গে ধারদেনা হয়ে এ পর্যন্ত তাদের চিকিৎসা চালিয়ে আসছি। এখন আমার বয়স হওয়ায় ভ্যানগাড়ি চালিয়ে ঠিকমত রোজগার না করতে পেরে পরিবারের ব্যয়বহন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাছাড়া তাঁদের চিকিৎসার জন্য আমার কাছে আর কিছু নেই। এখন তারা অর্থের অভাবে বিনাচিকিৎসায় ঘরে পড়ে আছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক জানান, শিবপদ নিউরোফাইব্রোমেটোসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাকে খুলনা শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগে রেফার করা হয়েছে। এ রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী হওয়ায় অনেক টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়বে।

সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৬২ ৮৬৫ ১৭০ মোবাইল নম্বরে (বিকাশ) অসহায় পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।