খুলনার পূর্ব মশিয়ালীর আমবাগান যেন রাজশাহীর একখন্ড প্রতিচ্ছবি

0
844

কাজী মোতাহার রহমান:
ফুলতলা উপজেলার পূর্ব মশিয়ালী গ্রামে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে আম বাগান। মল্লিকা আর আ¤্রপলি নামের আমগাছ সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে এখানকার উর্বর মাটিতে। দেখে মনে হবে যেন রাজশাহীর একখন্ড প্রতিচ্ছবি। মশিয়ালীর ১৪ পরিবার আমের আবাদ করছে বছর পাঁচেক ধরে। নিজেদেও সংসারের চাহিদা মিটিয়ে ভাল দামে বিক্রি করে প্রতিবছর। অন্য ফসলের তুলনায় আমের আবাদে লাভ হচ্ছে ৪০ গুণ।
খুলনা-মংলা রেল লাইনের ফুলতলা অংশের পশ্চিম সীমানা জুড়ে পূর্ব মশিয়ালী গ্রাম। হর্টিকালচার ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গ্রামটিকে বেছে নেয় আম উৎপাদনের জন্য। বছর পাঁচেক আগে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয় আমের চারা। কুল, ছফেদা ও আম উৎপাদনের সহযোগী হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগীতায় এখানে গড়ে উঠেছে মশিয়ালী পূর্ব পাড়া আইপিএম ক্লাব। এই ক্লাবের উদ্যোগে নভেম্বও মাসের শেষ দিকে ৩০ জন ফল চাষীকে প্রশিক্ষন দেয়া হবে।
কৃষি বিভাগের বিনামূল্যেও পাওয়া চারা নিয়ে ইসা খাঁ, এস এম কামাল হোসেন, গোলাম সরোয়ার, আনছার মোড়ল, ডালিম শেখ, আলম মাস্টার, রবিউল ইসলাম, মুজিবর রহমান, আব্দুল গণি ফরাজি, মিজানুর রহমান, ফেরদৌস শেখ, শহিদুল ইসলাম, রায়হান উদ্দিন গাজী, খলিলুর রহমান ও আলম শেখ গড়ে তুলেছে আম বাগান। বাগানের পরিচর্যায় বছরে একবার কীটনাশক ও দু’দফা সার প্রয়োগ করতে হয়। নিত্য দিন শ্রম দানের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না পাহারা দেয়ার।
আম চাষী ইসা খাঁ উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। তারপর কৃষি কাজে জড়িয়ে পড়েন। হর্টিকালচারের দেওয়া চারায় এক একর জমির উপর দুইশ’ আমগাছ রোপন করেন। ২০১১ সালের কথা। কারিগরি দিক বিবেচনা করে বেশী উৎপাদনের আশায় প্রথম বছর আমের মুকুল ভেঙে দেয়। ২০১৩ সাল থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে। গেল মৌসুমে এ বাগানে উৎপাদিত ৩৬ মন আম ৭২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। বছরে একবার কীটনাশক স্প্রে, জৈষ্ঠ্য মাস শেষে এবং আশ্বিন মাসের শেষের দিকে আম গাছের গোড়ায় টিএসপি, এমওপি, জিংক, ইউরিয়া ও গোবর সার প্রয়োগ করতে হয়। খরচ স্বল্প বলে তিনি জানান।
অপর আমচাষী এস এম কামাল হোসেনের দেয়া তথ্য মতে, বাগানে তিন বছর ধওে আম উৎপাদন হচ্ছে। এখানে আমগাছের সংখ্যা ১৭০ টি। ৩২ টি গাছে উৎপাদন হয়েছে গেল বার। কীটনাশক ও সার প্রয়োগ কওে খরচ হয়েছে ২ হাজার টাকা। বিক্রি হয় ২৫ হাজার টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিনা খাতুন বলেছেন, পুষ্টির চাহিদা পুরন করতে মশিয়ালী গ্রামটাকে বেছে নেয়া হয় আম আবাদেও জন্য। এখানকার আম চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আগামী বছর নাগাদ আম চাষের পরিধি বাড়ানো হবে। হর্টিকালচারের সহযোগীতায় নড়াইল, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায় অনুরুপ আমবাগান গড়ে উঠেছে।