শুধুমাত্র এসএমএস বা ইমেইল বার্তায় মিলবে খুলনা জেলা প্রশাসনের ত্রাণ সহায়তা

0
1066

ফারহা শেখ:
এখন থেকে শুধুমাত্র এসএমএস বা ইমেইল বার্তা দিয়ে মিলবে ত্রাণ সহায়তা। এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানায় খুলনা জেলা প্রশাসন। একইসাথে হটলাইনে ফোন করে এবং স্বশরীরে হাজির হয়ে ত্রাণ সহায়তার আবেদন না করার জন্যও অনুরোধ করা হয়। তবে যারা এখন ত্রাণ সহায়তা পাননি, তাদের জন্য নির্ধারিত ছকে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন স্বাক্ষরিত ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রামণ প্রতিরোধে চলমান ‘ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন’ এর কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ যারা জনসম্মুখে ত্রাণ নিতে সংকোচ বোধ করেন (মাসিক বেতন ভুক্ত ছোট চাকুরিজীবী পরিবার, ছোট পরিসরে দোকানদার ও ব্যবসায়ী, মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিম ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিয়োজিত ব্যাক্তিবর্গ, বিউটি পার্লার, জেন্টস পার্লার ও সেলুনে কর্মরত ব্যাক্তিবর্গ, যারা কোনো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসুচির আওতাভুক্ত নন), তাদের জন্য খুলনা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ‘বিশেষ বেসরকারি মানবিক সহায়তা সেল’ কর্তৃক উদ্ভাবনী উদ্যোগ door to door Essential goods distribution in corona crisis through digital survey’ কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে হটলাইন নম্বরসমূহে এসএমএস এবং ই-মেইল (covid19helpdeskkhulna@gmail.com) বার্তা প্রেরণ করার অনুরোধ করা হয়।
এসএমএস/টেক্সট মেসেজ/বার্তা পাঠানোর হটলাইন নম্বরসমূহ হচ্ছে, ০১৭৫৫৯৯২৫৫৫, ০১৭৭১৭২২৫৫৫, ০১৭৯৩১৯২৫৫৫, ০১৭৬৫৪৮২৫৫৫, ০১৭৫৩৬৩২৫৫৫। এসকল হটলাইন নম্বরসমূহে কোনো ফোন রিসিভ করা হয় না বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। একই সাথে হটলাইন নাম্বারসমুহে কল না করার জন্য এবং স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে খাদ্য সহায়তার আবেদন না করার জন্য অনুরোধ করা হয়। শুধুমাত্র এসএমএস ও ই-মেইল বার্তার মাধ্যমে উপরোল্লিখিত ছকে তথ্য প্রেরণের জন্য বলা হয়। ছকে ত্রাণ গ্রহীতার নাম, পিতার/স্বামীর নাম, পেশা, ওয়ার্ড, যে ঠিকানায় ত্রাণ পেতে ইচ্ছুক, মোবাইল ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর প্রদান করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, উদ্ভূত করোনা পরিস্থিতিতে সরকার থেকে প্রাপ্ত সকল সহায়তা জনপ্রতিনিধি তথা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং উপজেলা পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রদান অব্যাহত রয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ্য যে, যারা সরকারি খাদ্য সহায়তার অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তারা এই মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত হবেন না। প্রাপ্ত এসএমএস ও ই-মেইল বার্তাসমূহ যাচাই বাছাই করে প্রকৃত নিম্নমধ্যবিত্ত খাদ্য সহায়তা প্রার্থী যারা প্রকাশ্যে খাদ্য সহায়তা নিতে সংকোচ বোধ করেন, শুধুমাত্র তাদেরকে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে।
খুলনা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ জিয়াউর রহমান খুলনাটাইমসকে বলেন, ডোর টু ডোর কর্মসূচির আওতায় শুধুমাত্র খুলনা মহানগরীতে ১ হাজার ৬শ’ ৩৭ জনের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌছে দেয়া হয়। এক্ষেত্রে রেড ক্রিসেন্ট, ডু ফর বাংলাদেশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের প্রায় ৩শ’ স্বেচ্ছাসেবক সহযোগিতা দিচ্ছে। জেলা প্রশাসন বেসরকারি সহায়তা সেল কর্মসূচির আওতায় প্রাথমিকভাবে ৩০ হাজার মানুষের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে, প্রয়োজনে আরও বাড়বে। এই কর্মকান্ডে খুলনার আকাংখা গ্রুপ, অটোরাইচ মিল মালিক সমিতি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও সওজ এর পৃথক ঠিকাদার সমিতিগুলো এগিয়ে এসেছে বলে তিনি জানিয়েছে। এরমধ্যে অনেকেই নাম প্রকাশ করতে আপত্তি তুলেছেন। তিনি আরও জানান, এছাড়া সরকারের ত্রাণ তহবিল হতে ওয়ার্ড প্রতি ৩ মেট্রিক টন করে সর্বমোট ১৯৩ মেট্রিক টন চাল জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। এবং নগদ সহায়তা হিসেবে ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
হটলাইনে ফোন করলে কেউ রিসিভ করছে না এমন প্রশ্নে তিনি খুলনাটাইমসকে বলেন, পরিবেশ-পরিস্থিতি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। হটলাইনে অগণিত ফোন কল আসছে, এতে একদিকে কিছু ফোনকল আসতে পারছে না ব্যস্ততার জন্য, অপরদিকে ত্রাণ গ্রহীতার ফোনে প্রদত্ত ঠিকানার সাথে গরমিল হচ্ছে। এজন্য তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হতে হয়েছে।