শখের ছাদ বাগানে কোরআনে বর্ণিত “ত্বীণ” ফলের গাছ

0
290

শেখ নাদীর শাহ্: খুলনার পাইকগাছা পৌর সদরের হোটেল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের ছাদ বাগানে লাগানো কোরআনে বর্ণিত মরু অঞ্চলের ত্বীন গাছে অবশেষে ফল ধরেছে। বিষয়টি চাউর হওয়ায় প্রতিদিন ত্বীন গাছ ও তার ফল দেখতে অসংখ্য মানুষ ভীঁড় জমাচ্ছে আলমগীরের ছাদ বাগানে।
২০১৮ সালের শেষের দিকে ভারত থেকে খুলনার পাইকগাছা পৌর সদরে একটি ত্বীন ফলের গাছ এনেছিলেন খুলনার পাইকগাছা পৌর সদরের হোটেল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন। শখের বসে আনা সেই গাছটি তিনি তার পৌর সদরের কলাপাতা হোটেলের নিজ তৈরি ছাদ বাগানে টবে রোপন করেন। প্রথমত আলমগীরের লাগানো ত্বীন গাছটি রোপণের খবরে এলাকাবাসীর ধারণা ছিল, মরুভূমির এই গাছ সুন্দরবন উপকূলীয় পাইকগাছার লবনাক্ত মাটি ও আবহাওয়ায় হয়তো টিকবেনা।
কিন্তু হাল ছাড়েননি আলমগীর। বরং সকলের আশংকা, আলমগীরকে গাছটি বাঁচিয়ে রাখতে আরো আগ্রহী করে তোলে। নিরালস যত্ন ও পরিচর্যায় সবার ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে গত ২ বছরে বেড়ে উঠেছে গাছটি। আর এবার প্রথমবারের মত ফলও ধরেছে গাছে।
পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি জাফর আউলিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফেজ মাও: আব্দুস সাত্তারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ত্বীন গাছ যার নামে পবিত্র কোরানে একটি সূরাই নাযিল হয়েছে। এই তীনের নামে মহান আল্লাহ তায়ালা শপথও করেছেন। তাই ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই ত্বীন গাছ ও এর ফল ভিন্ন অর্থ বহন করে।
প্রসঙ্গত, কোরআনের ৩০ তম পারার ৯৫ নম্বর সূরার প্রথম আয়াত ‘ওয়াত্তীনি ওয়াযাইতূনি। বর্ণিত সূরায় আল্লাহতায়ালা ত্বীন গাছের নামে শপথ করেছেন। সূরার প্রথম শব্দ ত্বীন অনুসারে এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে- সূরা আত-ত্বীন। ত্বীনের বাংলা অর্থ আঞ্জীর বা ডুমুর।
এব্যাপারে পাইকগাছা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: আবুল কালাম খুলনা টাইমসকে বলেন, ত্বীন মূলত মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম এশিয়ায় এ ফলের উৎপাদন বাণিজ্যিকভাবে করা হয়। সৌদি,কুয়েত, মিসরসহ আফগানিস্তান থেকে পর্তুগাল পর্যন্ত এই ফলের বাণিজ্যিক চাষ হয়ে থাকে।
ত্বীন ফল দেখতে ডুমুরের চেয়ে খানিকটা বড়। ত্বীন ফলের বহু ওষুধি গুণ রয়েছে। বিশেষ করে এ ফলের নির্যাশ ডায়াবেটিস দূর করে,মহিলাদের অনিয়মিত ঋতু স্রাব নিয়মিত করে,দেহের বল-শক্তি বৃদ্ধি করে,কেষ্ঠকাঠিন্য দূর করে,রক্ত চাপ কমায়,দেহের ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে ও এসিড কমানোসহ নানা উপকারে ত্বীন ফল কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ত্বীন সব্জি হিসেবে খেতেও বেশ সুস্বাদু। বর্তমানে পাইকগাছার বিভিন্ন নার্সারীতে ত্বীন ফলের গাছের চারা উৎপাদন হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আলমগীর হোসেন বলেন, তিনি শখের বসে ২০১৭ সাল থেকে জায়গার অভাবে ছাদ বাগানের দিকে মন দেন। তিনি মূলত শখের বশেই তার ছাদ বাগানে দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছের আবাদ করছেন। এক পর্যায়ে ২০১৮ সালের দিকে ভারত থেকে ত্বীন গাছের চারাটি সংগ্রহ করেন।