লজ্জার হারে খালি হাতে বিশ্বকাপ শেষ করলো বাংলাদেশ

0
247

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে ৯ উইকেটে হারের লজ্জা পেল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। যার ফলে লজ্জার হার দিয়ে খালি হাতে এবারের টি-২০ বিশ্বকাপ শেষ করলো সালমা খাতুনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের চার ম্যাচের সবগুলোতেই হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম তিন ম্যাচে যথাক্রমে ভারতের কাছে ১৮ , অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৮৬ ও নিউজিল্যান্ডের কাছে ১৭ রানে হারে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে ৪ খেলায় জয় ছাড়া শুন্য পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শেষ দল হিসেবে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করলো বাংলাদেশ। সমানসংখ্যক ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই একমাত্র জয় দিয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ টেবিলের তৃতীয়স্থানে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করলো শ্রীলংকা। এই গ্রুপে ৪ খেলায় সবগুলো জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে যাবার দৌঁড়ে আছে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড। ‘বি’ গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দু’য়ের মধ্যে থাকলেই সেমিফাইনাল খেলতে পারবে, কিন্তু প্রথম তিন ম্যাচ হেরেই সে আশা শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। এমনকি শ্রীলংকারও। তাই গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি ছিলো নিয়মরক্ষার, তবে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করতে মরিয়া ছিলো টাইগ্রেসরা। কেননা এ ম্যাচে জয় পেলে আগামী বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পেত বাংলাদেশ। এখন বাছাই পর্ব খেলেই আগামী বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে বাংলাদেশকে। পক্ষান্তরে আজকের ম্যাচের জয় পাওয়ায় সরাসরি আগামী বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাচ্ছে লংকা। মেলবোর্নে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। আগের তিন ম্যাচেই পরে ব্যাট করেছিলো তারা। এবার প্রথমে ব্যাট করে ভালো কিছুর ইচ্ছা ছিলো বাংলাদেশের। কিন্তু শ্রীলংকার বোলারদের সামনেও অসহায় মুরশিদা-আয়শা-সানজিদা-ফারজানারা। দলীয় ৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩ রান করে ফিরেন মুরশিদা। তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে রানের গতি সচল করেন সানজিদা ইসলাম। সাথে ছিলেন আরেক ওপেনার আয়শা রহমান। কিন্তু স্কোর বোর্ডে ২৪ রান উঠতেই বিচ্ছিন্ন হন তারা। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে সানজিদা ও পঞ্চম বলে আয়শা বিদায় নেন। সানজিদা ১৩ ও আয়শা ৬ রান করেন। ২৫ রানে ৩ উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেছিলেন উইকেটরক্ষক নিগার সুলতানা ও ফারজানা হক। দলের স্কোরকে হাফ-সেঞ্চুরিতে নিয়ে যান নিগার-ফারজানা। কিন্তু চতুর্থ উইকেটে ৩১ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি। ১৩ রান করা ফারজানার বিদায়ে ভাঙ্গে ঐ জুটি। দলীয় ৫৬ রানে ফারজানার আউটের পর লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কেউই দু’অংকের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। তবে এক প্রান্ত আগলে দলকে ভদ্রস্থ স্কোর এনে দেয়ার চেষ্টায় ছিলেন নিগার। শেষ পর্যন্ত পারেননি তিনি। অবশ্য ইনিংসে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করেছেন নিগার। নিগারের ৩৯ রানের লড়াকু ইনিংস বাংলাদেশকে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ৯১ রানের মামুলি পুঁজি এনে দেয়। নিগারের ৪৫ বলের ইনিংসে ৫টি চার ছিলো। শ্রীলংকার স্পিনার শশীকলা সিরিবর্ধনে ১৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন। ৯২ রানের সহজ লক্ষ্য টপকাতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি শ্রীলংকাকে। দুই ওপেনার ভালো সূচনা গড়ে জয়ের পথটা সহজ করে দেন। হাসিনি পেরেরা ও অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু ৫৩ বলে ৫১ রানের জুটি গড়েন। ২২ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩০ রান করা আতাপাত্তুকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে এবারের আসরে শ্রীলংকার প্রথম জয় নিশ্চিত করেন পেরেরা ও আনুস্কা সানজিওয়ানি। তখনও ম্যাচে ২৭ বল বাকী ছিলো। বাংলাদেশের নাহিদা ১৮ রানে ১ উইকেট নেন। শেষ ম্যাচ হেরেও ব্যাটসম্যানদের দায়ী করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সালমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘আজও আমাদের ব্যাটিং খারাপ ছিলো। ফিল্ডিংও ভালো হয়নি। আমি টুর্নামেন্টটি উপভোগ করেছি। এই কন্ডিশনে প্রতিটি ম্যাচই আমরা হেরেছি।’ টি-২০ বিশ্বকাপে চারবার অংশ নিয়েও প্রথম রাউন্ডের গন্ডি পেরোতে পারেনি বাংলাদেশ।