ভিয়েনায় ‘সন্ত্রাসী’ হামলা, নিহত ৪

0
174

টাইমস বিদেশ :
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার ছয় জায়গায় সশস্ত্র বন্দুকধারীরা গুলি চালিয়ে অন্তত চারজনকে হত্যা করেছে; আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। দেশটির চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুর্জ এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হামলাকারীদের একজনও এ ঘটনায় নিহত হয়েছে। হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত একজনকে এখনও ধরা যায়নি এবং পুলিশ তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে বলে অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল নেহামার জানিয়েছেন। বিবিসি লিখেছে, ভিয়েনায় সেন্ট্রাল সিনাগগের কাছেই গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটেছে। তবে ইহুদিদের ওই উপাসনালয় হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো শুরুতে দুইজনের মৃত্যুর খবর দিলেও পরে তা বেড়ে চারজন হয়। ভিয়েনার মেয়র মিখাইল লুডভিগ জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আরেকজন নারীর মৃত্যু হয় আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর।
একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও অন্তত ১৪ জনকে আহত অবস্থায়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে অস্ট্রিয়ায় নতুন করে বিধিনিষেধ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে হামলার এই ঘটনা ঘটল। ওই সময় বহু মানুষ ভিয়েনার বার ও রেস্তোরাঁগুলোতে ভিড় করেছিলেন, কারণ পুরো নভেম্বর মাস সেগুলো আর খুলবে না। ইউরোপের রাষ্ট্রনেতারা ভিয়েনায় এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ‘ভয়ঙ্কর’ ওই হামলায় তিনি হতবাক। পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, হামলার সূচনা হয় ভিয়েনায় ইহুদিদের প্রধান সিনাগগের কাছে। স্থানীয় ইহুদি সম্প্রদায়ের নেতা অসকার ডয়েশ এক টুইটে জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় সোমবার রাত ৮টার দিকে যখন হামলা শুরু হয়, সিনাগগ তখন বন্ধ ছিল। তবে সিনাগগের নিরাপত্তাকর্মীদের একজনও ওই হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে খবর দিয়েছে অস্ট্রিয়ার পত্রিকা ক্রোনেন সেইটুং। ঠিক কতজন অস্ত্রধারী ওই হামলায় অংশ নেয় তা প্রাথমিকভাবে স্পষ্ট হয়নি। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো অন্তত একজনকে গ্রেপ্তারের খবর দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, মানুষ রাস্তায় প্রাণভয়ে দৌঁড়াচ্ছে, শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ। গুলি যখন শুরু হল, কাছাকাছি একটি রেস্তোরাঁয় ছিলেন ক্রিস জাও নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে, “শব্দ শুনে প্রথমে মনে করেছিলাম আতশবাজি। ২০ থেকে ৩০টা আওয়াজ হল, তারপর বুঝলাম, এটা গুলির শব্দ। তারপর দেখলাম লাইন ধরে অ্যাম্বুলেন্স এলো। এখানে মানুষ হতাহতও হয়েছে; সামনেই রাস্তায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখেছি আমরা।” এদিকে হামলার পর বড় ধরনের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করেছে অস্ট্রিয়ার পুলিশ। শহরবাসীকে ওই এলাকা এড়িয়ে চলতে এবং আপাতত গণপরিবহন ব্যবহার না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভিয়েনার হামলাকারীরা সীমান্ত পেরিয়ে পালানোর চেষ্টা করতে পারে, এমন আশঙ্কায় পাশের দেশ দেশ চেক প্রজাতন্ত্রের পুলিশও তল্লাশি জোরদার করেছে।