পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীর আর নেই

0
577

টাইমস ডেস্ক : প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক শাহ আলমগীর আর নেই। রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মৃত্যুবরণ করেন সাংবাদিক শাহ আলমগীর। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। ২১ ফেব্র“য়ারি থেকে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত কয়েক দিন তাকে হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রাজধানীর গোড়ানে দুপুর দেড়টায় প্রথম জানাজা, দুপুর আড়াইটার দিকে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় জানাজা, বিকাল তিনটায় তার তৃতীয় জানাজা জাতীয় প্রেসক্লাবে, উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে বিকাল সাড়ে ৫টায় চতুর্থ জানাজা শেষে তাকে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে গণকবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
জানাজায় অংশ নেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মনজুরুল আহসান বুলবুল, চ্যানেল আইয়ের সাংবাদিক শাইখ সিরাজ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি আবু জাফর সূর্য, সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।
জানাজা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পিআইবিতে মরদেহ পৌঁছালে সেখানে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তথ্যসচিব আব্দুল মালেক ও পিআইবির ভারপ্রাপ্ত ডিজি মীর মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
পিআইবির প্রধানের দায়িত্ব ছাড়াও শাহ আলমগীর বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা শাহ আলমগীর ২০১৩ সালের ৭ জুলাই পিআইবির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার ২০০৬ ও চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক ২০০৫ সহ বেশকিছু সম্মাননা পেয়েছেন।
প্রায় ৪০ বছর সাংবাদিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শাহ আলমগীর। উপমহাদেশের প্রথম শিশু-কিশোর পত্রিকা সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় ১৯৮০ সালে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তিনি শুরু করেন। এরপর তিনি কাজ করেন দৈনিক জনতা, বাংলার বাণী, আজাদ ও সংবাদ পত্রিকায়। ১৯৯৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যুগ্ম বার্তা-সম্পাদক হিসেবে প্রথম আলোতে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর একুশে টেলিভিশনে হেড অব নিউজ, যমুনা টেলিভিশনে পরিচালক (বার্তা) এবং মাছরাঙা টেলিভিশনে বার্তা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শাহ আলমগীরের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। বাবার চাকরি সূত্রে বৃহত্তর ময়মনসিংহে জীবনের দীর্ঘ একটি সময় কাটে তার। ময়মনসিংহের গৌরীপুর কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাংলা সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স করেন। পারিবারিক জীবনে শাহ আলমগীর এক পুত্র ও কন্যা সন্তানের জনক।