কেডিএর বরাদ্দকৃত প্রবাসীর প্লট দখলের অপচেষ্টা, চাঁদাদাবি ও জীবননাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

0
456

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা,
শ্রেণীভেদে প্রথমেই আমার সালাম ও আদাব গ্রহণ করুন। আমি ফেরদৌস আমিনুল হক একজন প্রবাসী। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ফ্রান্সে বসবাস করে আসছি। প্রবাসে থাকা অবস্থায় অনেক কষ্টে অর্জিত অর্থ দিয়ে কেডিএ’র কাছ থেকে খুলনা নগরীর ৪৭-এ, মজিদ স্মরনীর ৫.৩৩ কাঠার প্লটটি ক্রয় করে অবকাঠামো নির্মাণ করি। কিন্তু আমি প্রবাসে থাকা অবস্থায় গাড়ী পাকিং এর জন্য রাখা প্লটের একটি অংশ দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি কুচক্রি মহল। এই মহলটি স্থানীয় শিববাড়ী কালী মন্দির কমিটির একটি অংশের প্ররোচনায় আমার খালি জায়গায় ছোট ছোট ঘর নির্মাণ করেছে। আমার কাছে চাঁদাদাবি করেছে। আমার, আমার ভাই ও দারোয়ানের নামে মিথ্যা মামলা করেছে। আমার দারোয়ানকে মারধোর করেছে। কথায় কথায় আমাকে জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। এসব ঘটনায় মামলা দায়ের এবং একাধিক জিডি করেও প্রশাসনের কোন সহযোগীতা পাচ্ছিনা। ফলে আজ প্রতিকার পেতে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুদুর ফ্রান্স থেকে আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি।
জাতির বিবেক সাংবাদিক বন্ধুরা,
আপনারা জানেন প্রবাসীদের কষ্টের কথা। কত পরিশ্রম করে তারা টাকা আয় করে। রাস্তা ঝাড়– দেওয়া, থালাবাটি মাজা, মুটে বওয়া, ড্রেন পরিস্কার করা, ড্রাইভিংসহ অবর্ননীয় কষ্ট করে বিদেশ থেকে রেমিটেন্স এদেশে পাঠায়। সারাজীবনের অর্জিত অর্থদিয়ে এক টুকরো জমি ক্রয় করে। কিন্তু সেটিও যদি দখল হয়ে যায় তার থেকে কষ্টের আর কিছুই থাকেনা।
আমি ফ্রান্সে থাকা অবস্থায় অতিকষ্টে অর্জিত অর্থ দিয়ে কেডিএ’র কাছ থেকে ১৬/০২/৯৪ইং তারিখে খুলনা নগরীর ৪৭-এ, মজিদ স্মরনীর ৫.৩৩ কাঠার প্লটটি ক্রয় করি। প্লটটির আয়তন লম্বায় ৮০ ফুট এবং চওড়া ৪৮ ফুট। ১৬/০৮/৯৫ইং তারিখে কেডিএ আমাকে প্লটটি’র দলিল সম্পন্ন করে দেয় এবং ৩/১০/১৩ইং তারিখে আমাকে দখল বুঝিয়ে দেয়। এরপর ৩১/১২/১৩ইং তারিখে কেডিএ’র কাছ থেকে প্ল্যান পাওয়ার পর জমিতে চারতলা ভবন নির্মাণ করি। ভবনের পেছনের ২ কাঠা জমি গাড়ী পাকিং এর জন্য রেখে দেই। কিন্তু আমরা যেহেতু প্রবাসে বসবাস করি। এই সুযোগে ভবনের আশপাশের বস্তিবাসীদের দিয়ে আমার ওই ফাঁকা জায়গায় ঘর তুলে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল। আর প্রতিনিয়ত দখল করতে আসা মহলটিকে মদদ দিচ্ছে শিববাড়ী কালী মন্দির কমিটির একটি অংশের হিন্দু নেতারা। এসব হিন্দু নেতারা বিভিন্ন সময়ে আমার কাছে মোটা অংকের চাঁদাদাবি করে। তাদের দাবি আমি পূরণ করতে না পারায় তারা নেপথ্যে থেকে বস্তিবাসীদের উস্কানী দিচ্ছে। এসব ঘটনায় আমি বিভিন্ন সময়ে থানায় সাধারণ ডায়রী এবং লিখিত অভিযোগ করেছি। গত ০৪/০৮/১৮ইং তারিখে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় সাধারণ ডায়রী (নং১৯২) করি। একই থানায় গত ৩০/০৪/১৮ইং তারিখে সাধারণ ডায়রী (নং ১৪১৯) করি। এর আগে ২৫/১২/২০১৫ইং তারিরখে একই থানায় লিখিত অভিযোগ দেই। ১৯/০৪/১৬ইং তারিখে সোনাডাঙ্গা থানায় জিডি (নং৭৬৭) করি। ১৮/১২/১৭ইং তারিখে কেএমপির ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের (দক্ষিণ) বরাবর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করি। কিন্তু অদ্যাবধি আমি প্রতিকার পাইনি। এ অবস্থায় গত ০১/০৮/১৮ইং তারিখে বেলা ১১টার দিকে আমার ভবনের (ফেরদৌস প্লাজা) দারোয়ান খোকন ডিউটিরত অবস্থায় দেবাশীষ পাল, দোলন পাল, সমর পালসহ অজ্ঞতনামা ব্যাক্তিরা এসে আমার জায়গায় দেয়াল দেওয়ার চেষ্টা করে। তখন আমার দারোয়ান খোকন বাঁধা দিলে তারা খোকনকে হাতুরী দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। এঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে খোকন মামলা দায়ের করেন। সোনাডাঙ্গা মডেল থানার মামলা নং ০৪, তারিখ ০৩/০৮/১৮ইং, ধারা ৩২৩/৩২৪/৩০৭/৩৭৯/৫০৬/৩৪ পেনাল কোর্ট।
সত্য সাহসী কলম সৈনিক ভাইয়েরা,
এত কিছুর পরও আমি ন্যায় বিচার পাচ্ছিনা। ফলে বিচার চাইতে বাধ্য হয়েই পরিবার পরিজন নিয়ে সুদুর ফ্রান্স থেকে ছুটে এসেছি। এতক্ষণ ধরে আপনারা আমার উপর অত্যাচার নির্যাতনের কাহিনী শুনলেন। এখন আপনারাই বলেন প্রবাসে থাকার কারণে আমার জমি কি বে-দখল হয়ে যাবে? আমি আপনাদের মাধ্যমে এ অত্যাচার নির্যাতনের বিচার দাবি করছি। আমি বিশ্বাস করি আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের পর প্রশাসন আমার দিকে সহযোগীতার হাত বাড়াবেন। এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে আমার বক্তব্য শোনার জন্য আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেষ করছি। সকলকে ধন্যবাদ।