পাইকগাছায় করোনার প্রাদুর্ভাবে অনিশ্চিত আগামীর পথে দিশেহারা নিন্ম ও মধ্যবিত্তরা

0
310

শেখ নাদীর শাহ্ :
নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে অঘোষিত লকডাউনে গোটা দেশ। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে যখন সারাদেশ স্তব্ধ তখন অনিশ্চিত আগামীর চিন্তায় কোন রকমে দিন অতিবাহিত করছেন সুন্দরবন উপকূলীয় খুলনার পাইকগাছার নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরা।
সারা বছর উপার্জনের টাকায় বাড়ি ভাড়া, বাজার খরচ, চিকিৎসা খরচ, বাচ্চাদের স্কুল ফি দিয়ে বাড়তি কোন টাকাও থাকে না এ মানুষ গুলোর হাতে। তাদের কোন সঞ্চয়ও তাই নেই। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিরা ঘরবন্দি হয়ে পড়ায় যে ক’টা টাকা হাতে ধরার ছিল সংসার চালাতে তাও প্রায় শেষ হযে এসেছে ।
বর্তমান সঙ্কটকালীণ সময়ে সরকারি-বেসরকারি নানা সহায়তা দিচ্ছেন উপজেলার হতদরিদ্র নিন্ম আয়ের মানুষদেরকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা পৌঁছেও দেওয়া হচ্ছে তাদের বাসায় বাসায়। তবে  বিপাকে পড়েছেন উপজেলার মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। তারা না পারছেন কাউকে সহায়তার কথা বলতে, না পারছেন পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা পূরন করতে। কারণ তাদের অধিকাংশদেরই  কাজ বন্ধ থাকায় উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হওয়াতে হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই।
নিম্নমধ্যবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্তদের পরিবারের আয়ে মাস শেষে সকল হিসাব চুকিয়ে টাকার অবশিষ্ট কিছুই থাকে না । কৌশলে কোন মতে মাস পার করেন এ শ্রেণির মানুষ।
এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মধ্যবিত্ত পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিরা জানান,  আর্থিকভাবে পরিবার নিয়ে ভালোই ছিলেন তারা। করোনা পরিস্থিতিতে ঘরের চাল প্রায় শেষ হয়ে এসেছে । নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীও দু-এক দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। কাজ বন্ধ থাকায় হাতে কোন টাকাও নেই। এমন পরিস্থিতে আগামী দিনগুলো কিভাবে পার করবেন এসব চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেকেই।
এমন অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের  সাথে বিলাপ করা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই তাদের।
তাছাড়া সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার পাইকগাছা উপজেলার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে চিংড়ি চাষের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু চলতি মৌসুমের শুরুতেই চিংড়ি পোনার অতিরিক্তি মূল্য ও তীব্র সংকটের কারণে অধিকাংশ ঘের মালিকরা পোনা ছড়তে পারেনি। অধিকাংশ চাষী ঘের প্রস্তুত করে বসে আছেন। তাছাড়া গত মৌসুমে বছরজুড়ে চিংড়িতে ভাইরাসের প্রভাবে অনেকেইে  পুঁজি হারিয়ে চরম হতাশায় দিনাতিপাত করছেন।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে তাদের এমন অসহায় জীবনযাপনের কথা কাকে বলবেন ? তাহলে কি পরিবার- পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে ? এমন হাজারো প্রশ্ন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে চরম সংকটের মধ্যদিয়ে অনিশ্চিত আগামীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ।