নকল-ভেজাল ঔষধ কোনক্রমেই বিক্রি করা যাবে না : ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক

0
396

নিজস্ব প্রতিবেদক
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেছেন, যে ওষুধ নিজে বা পরিবারের সদস্যদের খাওয়াবো না, সে ওষুধ অন্যদের কাছে বিক্রিও করবো না। এজন্য নিজেদের আগে সচেতন হতে হবে। সর্বোপরি ওষুধ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। মডেল ফার্মেসী আদলেই সবাইকে ওষুধের দোকান করতে হবে। কিছু কিছু ওষুধ যেমন ভ্যাকসিন, ইনসুলেন, নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সঠিক সময়ে সংরক্ষণ করা না গেলে, তার কার্যক্ষমতা হারায়। তাছাড়া মানুষ স্বভাবতই নিজের নিরাপত্তায় মডেল ফার্মেসী ও মডেল মেডিসিন শপ থেকে ওষুধ ক্রয় করবে। তখন সেই পিছিয়ে যাবে যিনি মডেল ফার্মেসী করবেন না। এজন্যই মডেল ফার্মেসী করার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

 

শুক্রবার সকাল ১০টায় নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি খুলনা জেলা শাখা আয়োজিত ‘বাংলাদেশ মডেল ফার্মেসী ও মডেল মেডিসিন শপ এর প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি খুলনা ড্রাগ সুপারকে কঠোর নির্দেশ দেন, লাইসেন্স বিহীন দোকান বন্ধ করতে হবে। এরপর তারা প্রয়োজনীয় বিধি মেনে আবেদন করলে সর্বোচ্চ একমাসের মধ্যে লাইসেন্স প্রদান করা হবে। লাইসেন্সবিহীন কেউ ওষুধ ব্যবসা করতে পারবেন না।
মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে উৎপাদিত ঔষধ বিশ্বমানের। কিন্তু কিছু অসাধু কোম্পানী মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নকল ও ভেজাল ঔষধ তৈরি করে বাজারে কম দামে ছড়িয়ে দিচ্ছে, এগুলো বিক্রি বন্ধ করতে হবে। যদি ফার্মেসীগুলো ভেজাল ও নকল ঔষধ বিক্রি না করে তবে এরা আর ভেজাল ঔষধ তৈরি করবে না। একই সাথে এসব ঔষধ বিক্রি বন্ধ করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে।’

 

তিনি আরও বলেন, বিদেশে গেলে দেখা যায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঔষধ ক্রয় করা যায় না। কিন্তু আমাদের দেশে এগুলো কেউই মানেন না। একজন বিশেষ চিকিৎসক তোর দূরে থাক, পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াও এন্টিবায়োটিক ঔষধ বিক্রি করা হয়। এজন্য কেমিস্টদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এন্টিবায়োটিক ঔষধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে। নকল ও ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি এবং সংরক্ষণ না করে মানসম্মত ঔষধ বিক্রি করার আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও খুলনা জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মোজাম্মেল হক। স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ইফতেখার হাসান খান।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ, খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোঃ সাইদুল ইসলাম, ঔষধ প্রশাসনের ড্রাগ সুপার মোহাম্মদ আব্দুর রশীদ, সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক ও খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম কবির উদ্দিন বাবলু।
আলোচনা সভা শেষে খুলনার ফার্মেসীগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ রাখার জন্য ঔষধ প্রশাসন প্রদত্ত ‘বিন’ বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। এর আগে সকালে সমিতির সদস্যদের অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের হয়।