নওয়াপাড়ায় রেস্তোরায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ: মানা হচ্ছেনা ভোক্তা আইন

0
187

অভয়নগর প্রতিনিধি:
শিল্প, বাণিজ্য ও বন্দর নগরী যশোরের নওয়াপাড়া বাজারে খাবার হোটেলগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার ও মিষ্টি তৈরি হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার আইন মানা হচ্ছেনা কোথাও। নওয়াপাড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন হোটেলের কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই, মিষ্টি, রসমালাই, সন্দেশ সহ নানা খাদ্য সামগ্রি তৈরি হচ্ছে। কারখানার শ্রমিকেরাও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থেকে খাবার তৈরি করছে। নোংরা পরিবেশে এসব খাবার তৈরি হলেও স্থানীয় প্রশাসনের নেই কোন নজরদারী। নওয়াপাড়া বাজারে ২০-২৫ টি মিষ্টির হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে ঘোষ ডেয়ারী, নিউ ঘোষ ডেয়ারী, নড়াইল মিষ্টান্ন ভান্ডার, সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারী, সাতক্ষীরা প্লাস, ভাই ভাই মিষ্টান্ন ভান্ডার সহ কয়েকটি বে-নামের হোটেলের কারখানায় দেখা যায়, সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা খালি গায়ে, অপরিস্কার, স্যাঁতসেতে দুর্গন্ধময় স্থানে দই, মিষ্টি সহ নানান ধরনের মিষ্টান্ন তৈরি করছে। দই তৈরীর জন্য বহু আগে প্রস্তুতকৃত মাটির পাত্রে মাছি ভন ভন করছে। এর পাশে খোলা ঘরে দুর্গন্ধযুক্ত ড্রামে মজুদ করা হয়েছে ছানা (সন্দেশ)। সেখানে মশা-মাছি মরে রয়েছে। কারখানায় কর্মরত শ্রমিক কারীগরদের পরনে রয়েছে নোংরা পোশাক। তাদের হ্যান্ডগøাবস, মাস্ক ও হেডক্যাপ নেই।
হোটেল মালিকের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানা যায়, প্রতি কেজি মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টকা থেকে ৩৫০ টাকা, সন্দেশ প্রতি কেজি ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত, রসমালাই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৬০ টাকা। কথা হয় ক্রেতা সুমন হোসেনের সাথে। তিনি জানান, নওয়াপাড়া বাজার থেকে চমচম কিনে বাড়ীতে যেয়ে দেখি অর্ধেক নষ্ট। পরে সে গুলি ফেরত দেওয়া হয়। তিনি আরো বলেন, নূরবাগ হাসপাতাল রোডের কয়েকটি মিষ্টির হোটেল আছে ওই সব হোটেলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরি হচ্ছে। সে সব পরিবেশ দেখে হোটেলে ঢুকতে মন চায় না। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, দই বিক্রির জন্য মাটির পাত্র ব্যবহার করা হয়। বিক্রয়ের সময় ওই পাত্রের ওজন বাদ দেওয়া হয় না। তা ছাড়া মিষ্টি বিক্রি করার জন্য ভারী প্যাকেট ব্যবহার করা হচ্ছে। ওজন করে দেখা গেছে ওইসব প্যাকেটের ওজন প্রায় দুইশ গ্রাম। এক কেজি সন্দেশের দাম চার’শ টাকা হলে ওই প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। যা ভোক্তাদের সাথে প্রতারণার শামিল। সব কিছুতেই ভোক্তা অধিকার আইনের ল্ঘংন হচ্ছে। তাছাড়া মিষ্টির উৎপাদন তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ কোন হোটেলে ব্যবহার করা হয় না। দ্রব্য মূল্যের তালিকাও নেই কোন হোটেলে। ওজন করা বাটকারায় বিএসটিআইয়ের সীল নেই। হাসপাতাল রেডের নিউ ঘোষ ডেযারীর মালিক বাসুদেব ঘোষ বলেন, ‘আমার হোটেল পরিষ্কার আছে, কারখানা পরিষ্কার না থাকলেও চলবে। মূল্য তালিকা আমাদের লাগে না। বিএসটিআই সীলওয়ালা বাটকারা তো কোথাও দেখি না। তাই আমি ও তা তৈরি করার চেষ্টা করছি না’। নওয়াপাড়া পৌরসভার স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মো: জাহিদুর রহমান জানান, এক সপ্তাহ আগে হোটেল মালিকদের নবায়নকৃত লাইন্সেন দেওয়া হয়েছে। লাইন্সেন এর পেছনের পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে কর্মচারীদের হাতের নখ পরিষষ্কার, আলাদা পোশাক, মাথায় ক্যাপ সহ পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার তৈরি করতে হবে। কিন্তু হোটেল মালিকেরা তা মানছে না। এ ব্যপারে আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছি, শিঘ্রই ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান হবে।
উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করবো’।