নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাটাইমস :
খুলনার দাকোপ উপজেলার নলিয়ানে বেড়িবাঁধ টেকসই ও উঁচুকরণ কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ‘চায়না প্রজেক্ট’ এ হামলা ভাঙচুর, চীনা ইঞ্জিনিয়ারদের মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ আ. হান্নান গাজী, মো. আনিস সানা, মো. আছাদুল সানা, সাহেব আলী গাজী ও মো. শরিফুলকে গ্রেফতার করেছে। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়ে পুলিশ তাদের চারদিনের রিমান্ড চেয়েছে।
মামলার অন্যান্য আসামী হলেন আব্দুর রাজ্জাক, আবু মুছা গাজী, আজিজ ফকির, আ. বারিক গাজী, গোলজার গাজী, মোস্ত, আবুল, আব্দুল্লাহ, কানাইসহ আরও অজ্ঞাত ১০/১৫জন।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ওই প্রকল্পের পাশে। পুলিশ আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে এ ঘটনায় জড়িত ও উস্কানীদাতা হিসেবে স্থানীয় সুতারখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম ফকির ও জেলা পরিষদ সদস্য কবির খানকে চিহ্নিত করেছে। এই ঘটনার পর প্রজেক্টের কাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাসিন্দা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মামলার এজাহার ও পুলিশ প্রতিবেদনে জানা যায়, বালু বিক্রির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটনার দিন বিকালে অভিযুক্তরা নলিয়ান কাচারি বাড়ি মসজিদের সামনে চায়না প্রজেক্ট এলাকায় প্রবেশ করে। এ সময় মামলার বাদী ও চায়না প্রজেক্টের দোভাষী মো. ইমামুল হোসেন ইমু বাধা দিলে তারা তাঁর (ইমু) উপর হামলা চালায়। হামলাকারীদের বাধা দিতে এগিয়ে এলে তারা প্রজেক্টের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মি. ঝাং, সাইড ইঞ্জিনিয়ার মি. চাইনের ওপরেও হামলা চালায়। হামলাকারীরা দেশী অন্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রজেক্টে কর্মরত বিভিন্ন ব্যক্তির নগদ অর্থ, একাধিক মোবাইল সেট নিয়ে যায়। বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করে।
বাদীর অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির ও কবির খান এই ঘটনার উস্কানীদাতা। বাঁধ নির্মাণের জন্য তাদের কাছ থেকে প্রথমে দু’কিলোমিটার রাস্তার জন্য বালু নেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে একই বালু আশরাফ নামে এক ব্যক্তি কমমূল্যে সরবরাহ করে। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। নিরাপত্তার কারণেই প্রজেক্টের কাজ বন্ধ রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দাকোপ থানার এসআই মো. শহীদুল ইসলাম খুলনাটাইমসকে বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। ২/১দিনের মধ্যে এ আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। অপর আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, মামলার প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনায় মাসুম ফকির ও কবির খানের সম্পৃক্ততা মিলেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, মাসুম ফকির ও কবির খান এলাকায় প্রভাবশালী। কেউ তাদের ভয়ে কিছু বলতে পারে না। ওই হামলার পর প্রজেক্টের কাজ বন্ধ রয়েছে। এটা দুঃখজনক।
