ত্রাণ নয় টেকসই বেড়িবাঁধ যেন উপকূলীয় জনপদের মানুষদের প্রাণের দাবি!

0
184

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঘুর্ণিঝড় ইয়াস ও পুর্ণিমার প্রবল জোয়ারে অস্বাভিক পানির চাপে উপকূলীয় জনপদ খুলনার পাইকগাছায় ২৭ কিলোমিটার ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সর্বশেষ ইয়াস পরবর্তী বৃহষ্পতিবার (২৭ মে) নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার ওয়াপদার বাঁধ উপচে ও বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, পানের বরজ, বিভিন্ন ফসল ও মৎস্যঘের ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে প্রায় ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এদিকে কোমর পানিতে দাঁড়িয়ে এক কিশোরের বুকে লেখা নিবেদন ‘ত্রাণ নয় টেকসই বেড়িবাঁধ চাই’ ইতোমধ্যে সকলের নজরে এসেছে।

জানাযায়, বুধবার (২৬ মে) দুপুরে ঘুর্ণিঝড় ইয়াস ও পুর্ণিমার প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রবল জোয়ারে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় ২৭ কিলোমিটার ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তদ্মধ্যে সোলাদানা, দেলুটি, গড়ইখালী, কপিলমুনি ও লতা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার সুরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ও ওয়াপদার বাঁধ উপচে লবনাক্ত পানি প্রবেশ করে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে । এর মধ্যে সোলাদানা ইউনিয়নে সর্বাধিক ৬ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস জানান, উপজেলায় প্রায় ৬৬০ হেক্টর চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়ে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার চিংড়ি ও মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, উপজেলায় তেমন কোন ফসল না থাকায় কৃষি ক্ষেত্রে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি, তবে দেলুটি ও গড়ইখালী ইউনিয়নে ১ হেক্টর জমিতে লবণ পানি উঠে আউস ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, টেকসই বেড়িবাঁধের জন্য দীর্ঘদিন আবেদন-নিবেদন করেও ওয়াপদার বাঁধ রক্ষায় অদ্যাবধি কার্যত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে এমনিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে জান-মাল ও সম্পদের। সে কারণেই কোমর পানিতে দাঁড়িয়ে এক কিশোরের বুকে লেখা নিবেদন ‘ত্রাণ নয় টেকসই বেড়িবাঁধ চাই’ লেখাটি সকলের নজরে এসেছে। মূলত নিবেদনটি ঐ কিশোরের একার নয়। এ দাবি এখন উপকূলীয় জনপদের লাখো মানুষের।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, পুর্ণিমায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, ইয়াস ও ইয়াস পরবর্তী দিনেও উপজেলার বিভিন্ন নতুন করে প্লাবিত হয়ে প্রায় ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সর্বসাধারণের স্বেচ্ছাশ্রমে ক্ষতিগ্রস্থ ও ঝুকিপূর্ন বেড়িবাঁধ রক্ষার কাজ চলমান রয়েছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরীর কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

খুলনা টাইমস/এমআইআর