তিন বছর প্রশাসনের কাছে ধর্না দিয়ে ফিরছে শরণখোলায় বেরী বাঁধে ক্ষতিগ্রস্থরা

0
505

শরণখোলা প্রতিনিধি: শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১পোল্ডারের বলেশ্বর নদীর প্রায় ছয় কিলোমিটার বেরী বাঁধের দুই পাশে সৃজিত বনায়নের ক্ষতিপূরণ পায়নি রক্ষনাবেক্ষণকারী ১৩টি হতদরিদ্র ইএস (ইম্ব্যাকমেন্ট শেল্টার) পরিবার। তিন বছর ধরে ক্ষতিপূরণের দাবীতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো পাউবোর উর্ধ্বতন মহলসহ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ধর্না দিয়ে ফিরছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ইএস পরিবারের মধ্যে চুক্তিনামা সূত্রে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০০২ সালের সৃজিত ওই বনায়ন ২৫ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি করে বাঁধের পাশে বসতি স্থাপনকারী ইএস পরিবারগুলোকে রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়। মেয়াদ শেষে গাছের সম্পূর্ণ মালিকানাও পাবেন রক্ষনাবেক্ষনকারীরা। ওই মেয়াদে নিয়মিত বাঁধ রক্ষনাবেক্ষণ, বনায়ন তৈরী ও রক্ষনাবেক্ষণ করবে ইএস পরিবারগুলো। রক্ষনাবেক্ষণ কাজের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে প্রথম বছর নয় হাজার টাকা, দ্বিতীয় বছর আট হাজার, তৃতীয় বছর সাত হাজার এবং চতুর্থ বছর ছয় হাজার ৫০০ টাকা করে পারিতোষিক ভাতা হিসেবে দেওয়া হয় তাদের।
২০১৬ সালে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পাউবোর ৩৫/১ পোল্ডারে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের কাজ শুরু হলে বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তৎকালিন নির্বাহী প্রকৌশলী খুশী মোহন সরকার ২০১৭ সালের ৫জানুয়ারি ৩৮ (৫) নম্বর স্মারকের এক আদেশে ইএস পরিবার গাছের সম্পূর্ণ মালিকানা এবং শতভাগ সুবিধা ভোগ করবে বলে উল্লেখ করে তাদের গাছ সরিয়ে নিতে বলেন। এর পর পূর্ণ মেয়াদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রত্যেক পরিবারকে পরিচয় পত্র প্রদান করে সিইআইপ-১ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। অথচ গাছ সরিয়ে নেওয়ার তিন বছর অতিবাহিত হলেও প্রতিশ্রæত ক্ষতিপূরণ না পেয়ে হতাশায় পড়েছেন তারা। ইএস পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মো. আঙ্গুর ফরাজী, সালেহা বেগম, আ. রউফ হাওলাদার জানান, রাজৈর মারকাজ মসজিদ থেকে কুমারখালী পর্যন্ত ৩৫/১ পোল্ডারের প্রায় ছয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধের দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা ২০০২ সালে রোপন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওই গাছ রক্ষনাবেক্ষনের জন্য তাদের ১৩ পরিবারকে দায়িত্ব দেয়। ২৫বছর পর ওই গাছের মালিক তারা হবেন। ২০১৬ সালে বাঁধ উন্নয়নের সার্থে সিইআইপি-১ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ তাদের গাছের পূর্ণাঙ্গ মেয়াদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলে সেই অপরিপক্ক গাছ কেটে নিতে বললে তারা তা সরিয়ে নেয়। কিন্তু তারা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেনা।
এব্যাপারে খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন বলেন, বাঁধের কাজ শুরু করার সময় গাছের সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল সিইআইপি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরবর্তীতে তারা ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে।
উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প, ফেজ-১ (সিইআইপি-১) এর খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, কাজ শুরুর তিন মাস আগেই ইএস পরিবারকে তাদের গাছ সরিয়ে নিতে বলা হয়। ওই গাছ বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থের মালিকও তারা। কিন্তু গাছের পূর্ণাঙ্গ মেয়াদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ছিলো কিনা সেটা তার জানা নেই।