ট্রাংকুলাইজার সংক্রান্ত তথ্য অনেকেই জানেন না

0
2501

কামরুল হোসেন মনি : খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জেলা প্রশাসন আয়োজিত চতুর্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলার দ্বিতীয় দিনেও সাধারন মানুষ পাচ্ছে বিভিন্ন দপ্তরের সেবা। ১৫৬টি স্টলে ভীড় করছে উৎসাহী মানুষগুলো। বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে সেবা নিচ্ছেন আগত মানুষগুলো। শুক্রবার (৫ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিন হওয়ায় সকাল ১০টা থেকে এই মেলায় মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এখানে আসেন। খুলনা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের স্টলে আসা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ‘ট্রাংকুলাইজার’ সংক্রান্ত তথ্য সম্ববলিত একটি লিফলেট আকারে চোখ পড়ে। শিক্ষার্থীরা জানান, এ বিষয়ে আমরা অবগত নই। স্টলে সংস্থার উপ-পরিচালক মোঃ রাশেদুজ্জামান তাদেরকে সংক্ষিপ্ত আকারে এ বিষয়ে বুঝিয়ে দিয়ে এই বিভিন্ন লিফলেট শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।

ট্রাংকুলাইজার কি এমন প্রশ্ন করা হলে, সংস্থার ওই উপ-পরিচালক জানান, ট্রাংকুলাইজার হচ্ছে বিষণ্ণতা, উদ্বেগবোধ অথবা নিদ্রাহীনতা লাঘবে ব্যবহৃত কিছু মাদকদ্রব্য জাতীয় ওষুধ। এগুলো মস্তিষ্ক ও শরীরের ক্রিয়া ক্ষীন করে ও নিস্তেজ অবস্থার সৃষ্টি করে, তবে এতে ঘুমের ওষুধের মত ততটা তন্দ্রা ভাব সৃষ্টি হয় না। তবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা লোপ পেতে পারে। অন্যান্য মাদকদ্রব্যে’র মতই ট্রাংকুলাইজার ব্যবহারকালে গাড়ী অথবা মেশিন চালানোর মতো কাজ করা বিপজ্জনক। কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সেবনকারী চামড়ায় ফুসকুড়ি, বমি-বমি ভাব ও ঝিমুনির মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ বা প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোন ওষুধ দোকানীকে বিক্রি না করার অনুরোধ জানান। বর্তমানে এটি মাদক হিসেবে অনেকে সেবন করছেন।

মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, ট্রাংকুলাইজার সাধারণত ট্যাবলেট অথবা ক্যাপসুল আকারে পাওয়া যায়। এগুলো বিভিন্ন রংয়ের হয়ে থাকে। দেশে সুপরিচিত কয়েকটি ট্র্যাংকুলাইজার হচ্ছে ডায়াজিপাম যা ভ্যালিয়াম, রিলাক্সোন ও সেডিল নামে পরিচিত, লোরাজিপাম অথবা এ্যটিভান, ক্লোরাডায়াজিমপোক্সাইড অথবা লিব্রিয়াম। অপব্যবহারকারীদের মধ্যে এটা সেক্সী নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে এসব ব্যবহার করলে কোন কোন কোন ট্রাংকুলাইজার জীবনের সকল বিষয়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেলার মতো অবস্থা সৃষ্টি করে। মাথা ব্যথা, পাকস্থলির গোলযোগ, চামড়ার ফুসকুড়ি এবং ক্রোধ ও বিরক্তির অনুভুতি হতেও দেখা যায়। আসক্ত মায়েদের গর্ভস্থ সন্তানদের যকৃত, মস্তিষ্ক হৃদপিন্ড ও ফুসফুসে ডায়াজিপাম জমা হতে দেখা গেছে। জন্মের পর এসব শিশুর মধ্যে পরিহারজনিত লক্ষনসমূহ দেখা দিতে পারে।

উন্নয়ন মেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের স্টলে মাদক বিষয়ে সচেতনতামুলক লিফলেট, সেলফি বক্স, মাদক বিক্রির সংক্রান্ত অভিযোগ বক্স, গণস্বাক্ষর, সচেতনতামুলক পট গান ও মাদকের কুফলের সম্পর্কে বিভিন্ন র্দৈঘ্য প্রমান্যা চিত্র প্রদর্শন, শিক্ষার্থীদের মাঝে চকলেট বিতরণ করছেন।