খুলনা টাইমস :
কালো জামা এবং গোলাপি জুতোয় নুড়ি পাথরের রাস্তা দিয়ে বাঁচার আশায় দৌঁড়া”েছ দুটো মেয়ে। হঠাৎ করেই স্পেসশিপ থেকে শুরু হয়ে যায় আক্রমণ। বাঁচার আকুতি নিয়ে সামনে দৌঁড়ানোর চেষ্টা করলে দেখা হয় আরেক আগুন্তকের। যার হাতে দেখা যায় একটি খোলা তলোয়ার। উপরে বর্ণিত দৃশ্যটি ১০ জন তরুণের তৈরি শর্ট ফিল্ম ‘অ্যানাদার স্টার ওয়ার’ থেকে নেওয়া। নাইজেরিয়ার উত্তর কেদুনার এই নির্মাতা ও অভিনেতাদের বয়স ৭-২৭। দল হিসেবে তাদের নাম ‘দ্য ক্রিটিক্স’। এই চল”িচত্রটি নির্মাণ করে বিশ্বজুড়েই আলোচনার শীর্ষে এখন তারা। বিশেষ করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে তাদের নিয়ে মাতামাতি হ”েছ রীতিমত। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদন বলছে, কোনো উ”চমূল্যের ভালো সরঞ্জামাদি না পেয়েও শুধুমাত্র মোবাইল এবং ভিএফএক্সের ব্যবহারে সাইন্স ফিকশন সিনেমা বানানোর সাহস দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে নাইজেরিয়ার এই শিশু-কিশোররা। দলটির এডিটিং প্যানেলের দায়িত্বে থাকা ১৮ বছর বয়সী রেমেন্ড ইউসুফ জানান, ‘২০১৫ সাল থেকে আমাদের সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা শুরু। এর আগে গ্রিন পেপারের সঙ্গে পরিচয় থাকলেও এডিটিংয়ের কাজ শেখানোর মত কেউ ছিল না আমাদের। পরে নিজের উদ্যোগেই ইউটিউব এবং উইকিপিডিয়া থেকে শেখার চেষ্টা করেছি। চল”িচত্র তৈরি করার মত ক্যামেরা ছিল না আমাদের। শটগুলো তাই আমরা রাখতাম স্যামসাং মোবাইলে জমিয়ে রাখতাম।’ তিনি আরো বলেন, ‘একসময় বাবার একটি পুরানো ল্যাপটপ আমাদের ঘরেই ছিল। সেই ল্যাপটপ দিয়ে ভিডিও সফটওয়্যার ব্লেন্ডারের কাজ করা শিখেছি। এভাবেই ২০১৬ সালে মুক্তি পায় আমাদের প্রথম শর্ট ফিল্ম ‘রিডাম্পশন’। সেটি খুব একটা আলোচনায় আসেনি। তবে অনেক প্রশংসা পেয়েছিলাম।’ এখন পর্যন্ত ‘দ্য ক্রিটিকস’ ২০টির মত শর্টফিল্ম বানিয়েছে। ইলেকট্রিসিটি এবং ইন্টারনেট ডাটার অভাবে শর্টফিল্মের গন্ডি থেকে বের হতে পারছেন না তারা। তবে ক্রিটিকসের ভাগ্য খুলে যায় ২০১৯ সালের আগস্টে। অসাধারণ কাজ দিয়ে তারা আগেই নজর কাড়ে হলিউডের নির্মাতা ফ্রাঙ্কলিন লিওনার্ড, স্কট মায়ার্স এবং জেজরদের। ‘স্টার ওয়ার্স : দ্য রাইজ অফ স্কাইওয়াকার’খ্যাত পরিচালক জে জে আব্রামস পরবর্তীতে এক টুইটে লিখেন, ‘প্রথমে তোমাদের অভিনন্দন এত দুর্দান্ত কাজ করে যাওয়ার জন্য। আরো দুর্দান্ত কাজ করার জন্য ‘দ্য ক্রিটিকস’ টিমের কি কি প্রয়োজন? তাড়াতাড়ি হোয়াটসঅ্যাপে-এ আমাদের একটি তালিকা করে পাঠাও।’ এরপরের গল্প জানিয়ে হলিউড রিপোর্টারকে ‘দ্য ক্রিটিকস’- এর রেমেন্ড ইউসুফ ইউসুফ বলেন, ‘এর কিছুদিন পরই দারুণ দামি সব সরঞ্জামাদি আমাদের কাছে আসতে থাকে। পিসি, ক্যামেরা থেকে শুরু করে মোটামুটি সবকিছুই আমরা পেয়েছি। আমাদের লক্ষ্য বছর কয়েকের মধ্যেই পুরো আফ্রিকার সবচেয়ে শক্তিশালী মিডিয়া হয়ে উঠা। ক্রিটিকসকে এখন একটি কোম্পানি হিসেবে দেখতে চাই আমরা। সিনেমা নির্মাণে আফ্রিকাকে নিয়ে যেতে বিশ্বের দরবারে।’ দলটির বাকি সদস্যদের মধ্যে রয়েছে -রিজোয়েস (১৪), র্যাচেল (৭), গডউইন (২০), রোনাল্ড (১৬), ভিক্টর (১৬), লসন (১৮), রিচার্ড (১৫), রিদওয়ান আদেনিয়ি (২৭)।