‘তুমি আকাশের বুকে সরলতার উপমা’ কন্ঠশিল্পী খালেদ আর ফিরবেনা

0
80

টাইমস ডেস্ক
কত আর বয়স হয়েছিল তার। এখনও ষাটের ঘরেই ছিলেন। এই বয়সেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন ‘সরলতার প্রতিমা’ খ্যাত গায়ক খালিদ। যে শহর এখনও বরেণ্যে রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের সেচ্ছামৃত্যুর শোকে আচ্ছন্ন। সেই সময়ে সংগীতাঙ্গনে বিষাদের মেঘ ছড়িয়ে চলে গেলেন তিনি।

সংগীতযাত্রা ও প্রথম অ্যালবাম…..
গোপালগঞ্জে জন্ম নেওয়া এই শিল্পী ১৯৮১ সাল থেকে গানের জগতে যাত্রা করেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ‘চাইম’ ব্যান্ডে যোগ দেন। খালিদ মূলত দুই সত্ত্বার। একজন চাইম ব্যান্ডের খালিদ, আর একটা হচ্ছে ব্যক্তি খালিদ। খালিদের প্রথম যে আ্যলবামটি বের হয়েছিল সেটি চাইম ব্যান্ডের আ্যলবামের হয়ে। নাম ছিল ‘চাইম’। তাতে গান ছিল, নাথি খাথি বেলা গেল, তুমি জানো নারে প্রিয়, কীর্তনখোলা নদীতে আমার, এক ঘরেতে বসত কইরা, ওই চোখ, সাতখানি মন বেজেছি আমরা, আমার জন্য রেখো একটা গান, সহ আরো দুইটি ইংলিশ গান। সেই অ্যালবামের নাথি খাতি বেলা গেল গানটি ছিল যশোরের একজন কবি হাফিজুর রহমানের লেখা। সুর সংগ্রহ করা হয়েছিল অন্য জায়গা থেকে। সে সময় গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। আর খালিদ হয়ে উঠেন তরুণ প্রাণের ক্রেজ।

শিল্পীর মুখে শুরুর গল্প…..
এক সাক্ষাৎকারে গানের শুরুর কথা জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, এটা যুদ্ধের আগের কথা। আমি তখন অনেক ছোট। ক্লাস ওয়ানে পড়ি। সাত ভাই বোনের মধ্যে আমি সবার ছোট। বাড়িতে ওস্তাদের কাছে গান শিখতো আমার বড় ভাই বোনে রা। আমি ছোট হওয়ায় আমাকে তাদের গান শেখার কাছে যেতে দিত না। হটাৎ একদিন আমার ভাই বোনদের গানের ক্লাস শেষ করে ওস্তাদ বেরিয়ে গেলেন। দরজা খোলা পেয়ে আমিও ভিতরে প্রবেশ করলাম। গিয়ে দেখলাম একটি হারমোনিয়াম। হারমোনিয়ামটার কাছে গিয়ে বেলো টান দিয়ে চাবি তে চাপ দিতেই দেখলাম বেজে উঠলো। বাসার সবাইকে গিয়ে বললাম আমি গান শিখতে চাই। আমি পারি, হারমোনিয়াম আমি বাজিয়েছি। সেইখান থেকেই গানের আগ্রহ জন্ম নেয়। মূলত আমি গান গাওয়া শুরু করি ১৯৮১ সালে। পুরোপুরি ভাবে শুরু হয় ৮৩ সালে চাইম ব্যান্ডের সঙ্গে।
শেষ সময়ে প্রবাসী জীবন….
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে একেবারেই গান থেকে যেনো দূরে সরেন। বেছে নেন প্রবাস জীবন। আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়ে নিউ ইয়র্কে বসবাস করতেন। তার এক ছেলে সেখানে পড়াশুনা করেন। খালিদ মাঝে মাঝে দেশে আসলেও একাই থাকতেন। নিজের গন্ডির বাইরে খুব একটা বের হতেন না। কিছুদিন থাকতেন ফের উড়াল দিতেন প্রবাসে। এবারও এলেন। কিন্তু আর প্রবাসে ফেরা হলো না। ফিরলেন অনন্তের পথে।