গ্রেফতার অভিযান বন্ধের দাবিতে বিএনপি’র খোব গত রাতেও গ্রেফতার ৪

0
516

বিজ্ঞপ্তি : থেমে নেই খুলনায় পুলিশী নিপীড়ন ও গ্রেফতার অভিযান। নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি ও কর্মস্থলে তল্লাশি, পরিবারের সদস্যদের সাথে নিষ্ঠুর ব্যবহার, বয়োবৃদ্ধ পিতা-মাতা এবং স্ত্রী-পুত্র-কণ্যাদের সাথে অশালীন বাক্যালাপ থামছেই না। পুলিশ উপযাচক হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছে; বলছে আগামী নির্বাচনের আগে আর ফিরে না আসার। বহুল প্রত্যাশিত সংলাপের প্রথম দফার পর দ্বিতীয় দফার প্রস্ততিতে সবার নজর যখন সংকট উত্তরণের দিকে, সেই সময় দেশব্যাপি নেতাকর্মীদের পাইকারি হারে গ্রেফতারের ন্যায় চরম বৈপরিত্যমূলক দ্বিচারিতায় গভীর বিষ্ময়, উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খুলনা মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে মহানগর বিএনপি নেতারা বলেন, নজিরবিহীন পুলিশী নিপীড়নের প্রেক্ষিতে গত ৪ নভেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে বিগত দিনের নির্বিচার গ্রেফতার ও পুলিশী হয়রানির প্রতিবাদ করে এ ধরনের অহেতুক নিবর্তনমূলক তৎপরতা থেকে খুলনার পুলিশকে কাংখিত সুষ্ঠু অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে বিরত থাকার আহবান জানানো হয়েছিল। কিন্ত রাজনীতিতে নবাগত পারিবারিক প্রার্থীর ও পরিবার ঘনিষ্ঠ প্রার্থীদের বিজয়ী করার নির্লজ্জ অপচেষ্টার অংশ হিসেবে নির্বাচনী মাঠ ফাঁকা করতে খুলনার পুলিশ প্রশাসন দলীয় ক্যাডারদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
একদিকে প্রধানমন্ত্রী পদমর্যাদার ব্যক্তি তার সরকার কাউকে অত্যাচার করেনি বলে প্রকাশ্য জনসভায় ভাষণ প্রদান করছেন, ভালবাসা বিলিয়ে দেয়ার বাণী শোনাচ্ছেন- একই সাথে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অর্থবহ নির্বাচনের আশ্বাস দিচ্ছেন, আর অন্যদিকে নিত্য নতুন গায়েবী মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি ছাড়া এলাকা ছাড়া করছেন। এটা কেমন প্রতারণামূলক আচরণ তা এক বিরাট প্রশ্ন! গত ৩ নভেম্বর নগরীর দৌলতপুর থানায় খুলনা মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল হক নান্নু, শেখ গাউস হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন তোতন, এনামুল হক ডায়মন্ড, মোল্লা সোহেল, হাফিজুর রহমান পিন্টু, এস এম জসিম, নাজিম, রতন সরদার, শেখ ইমাম হোসেন সহ ২১ জন নেতা ও অজ্ঞাত ১৪০/১৫০ জন নেতাকর্মীর নামে কোন ঘটনা ছাড়াই আরেকটি গায়েবী মামলা দায়ের হয়েছে। গত সপ্তাহে নগরীর হরিণটানা ও সোনাডাঙ্গা থানায় অনুরূপ গায়েবী মামলা দায়ের করে গ্রেফতারি অভিযান চলছে। তারপূর্বে গত দেড় মাসে দায়েরকৃত ১৫ টি মামলায় জ্ঞাত-অজ্ঞাত মিলিয়ে প্রায় ২ সহ¯্রাধিক নেতাকর্মী পুলিশী অভিযানে বিপর্যস্ত জীবন যাপন করছে।
নির্বাচনের প্রাক্কালে যেখানে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির নির্বাচনী প্রস্ততিমূলক কাজে নিয়োজিত হওয়ার কথা, প্রস্ততি সভা, কেন্দ্র কমিটি গঠন, নির্বাচনী এজেন্ট নির্ধারণসহ জনসংযোগ- নির্বাচনের পূর্বে এ সকল কর্মকান্ড সরকারি দল দোর্দন্ড প্রতাপের সাথে কাজ করছে, পুলিশী প্রহরায় মটর সাইকেল মহড়া দিচ্ছে, প্রচারপত্র বিলি করছে, শহর জুড়ে প্যানা পোস্টার লাগাচ্ছে, মিছিল করছে- আর অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের কর্মীরা পুলিশের অত্যাচারে এক ভয়ার্ত জীবনযাপন করেছ। এটা কি লেভের প্লেয়িং ফিল্ড এর নমুনা?
বিবৃতিতে বিএনপি নেতারা বলেন, সংলাপের ফলে জনমনে উদিত সূর্যের আলোকরশ্মি পুলিশী অপতৎপরতায় অন্ধকার অমানিশার কালো চাদরে ঢেকে গেছে। একদিকে প্রধানমন্ত্রী গায়েবী মামলা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন, এমন মনোভাব ব্যক্ত করে মামলা ও গ্রেফতারের তালিকা চেয়েছেন। আর অন্যদিকে নিত্য নতুন মামলা, নির্বিচারে গ্রেফতার- প্রশ্ন সরকারের মধ্যে কি আর একটি সরকার বিদ্যমান, নাকি কোন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী স্যাবোটাজ বা বিভক্তি সৃষ্টিতে তৎপর? গতকাল রাতেও সোনাডাঙ্গা থানা থেকে আলমগীর হোসেন আলম, সজল, আব্দুল গফফার ও দৌলতপুর থেকে রফিকুল ইসলাম মিঠুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বিবৃতিতে অবিলম্বে নগরী জুড়ে গ্রেফতার অভিযান বন্ধের জোর দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিদাতারা হলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাই, সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, সৈয়দা নার্গিস আলী, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশারফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, জলিল খান কালাম, সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল আলম, এ্যাড. ফজলে হালিম লিটন, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আমজাদ হোসেন, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, ইকবাল হোসেন খোকন, আসাদুজ্জামান মুরাদ প্রমুখ।