খুলনায় ভ্যাকসিন নেওয়ার পর নেই করোনা সচেতনতা

0
154

খবর বিজ্ঞপ্তি:
মহামারির বছর ঘুরলেও নতুন বছরেও রেহাই নেই মরণ ব্যাধির থাবা থেকে। ভ্যাকসিন গ্রহন শুরু হলেও বেশীর ভাগ মানুষ মানছে না স্বাস্থবিধি। দেশজুড়ে আবার বাড়ছে করোনার সংখ্যা। প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর ফের শনাক্ত হচ্ছে করোনাভাইরাস। ভ্যাকসিন গ্রহন করলেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় করোনা নিয়ে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ২৭ জানুয়ারি গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এবং পরে ৭ ফেব্রæয়ারি থেকে দেশে গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর থেকেই যেন দেশ থেকে উধাও হয়ে গেছে স্বাস্থবিধি মেনে চলা। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ভ্যাকসিন গ্রহন করলেও যথাযথ স্বাস্থবিধি মেনে চলতে হবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। খুলনায় সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে। বাজার, শপিং মল জনসমাগম হয় এমন সব জায়গায় মাস্ক ছাড়াই মানুষ ঘুড়ে বেড়াচ্ছে।
তাছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অনেক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থবিধি না মেনেই শিক্ষা সফর, বনভোজন বা পিকনিক সম্পন্ন করছে। যা কিনা করোনা সংক্রমন ঝুকি বাড়াচ্ছে বলে মনে করে সচেতন নাগরিক। খুলনার নিউ মার্কেট এলাকা, সোনডাঙ্গা গল্লামারী এলাকার ফুড কোট, রূপসা ঘাট, নগরীর সাত রাস্তা মোড়, ৭নং ঘাট, রেলওয়ে মার্কেট, দৌলতপুর বাজার, চিত্রালীবাজার, সহ সকল জনসমাগমের জায়াতেই মানা হচ্ছে না স্বাস্থবিধি। কিছু কিছু অফিসসহ ব্যাংকগুলোতেই বিশেষ করে লক্ষ করা যায় স্বাস্থবিধি মেনে চলতে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভ্যাকসিন গ্রহনের পরও করোনাভাইরাস শনাক্তের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর ১২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই ১২ জনের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার পর টিকা নিয়েছেন এমন এক ব্যক্তির শরীরেও ফের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এমন আরো অনেক ঘটনা ঘটছে সারাদেশে। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সোমবার করোনায় আটজনের মৃত্যু হয়েছিল। আর শনাক্ত রোগী ছিলেন ৫৮৫ জন। খুলনায় মঙ্গলবার করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তিন হাজার ছয়শত ২০ জন। আর শনাক্ত রোগী ছিলেন দুই জন। যা কিনা আগে কয়েকদিন শুণ্যে ছিলো। দেড় মাসের মধ্যে গত সপ্তাহে বিশ্বে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছে। এমন তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও)। এক ব্রিফিংয়ে ডবিøউএইচওর কোভিড-১৯-বিষয়ক বিভাগের প্রধান মারিয়া ভান কারখোভে সতর্কতা জারি করে বলেন, ‘সতর্ক না হলে এই ভাইরাস আবার শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। আমরা তা হতে দিতে পারি না।’ ডবিøউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস জানান, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঘটনা হতাশাজনক। তবে বিস্ময়কর নয়। রোগ প্রতিরোধে বিধিনিষেধ শিথিল না করতে বিভিন্ন দেশের প্রতি আহŸান জানান তিনি। অন্যান্য সুরক্ষাব্যবস্থা বাদ দিয়ে শুধু টিকাদান কর্মসূচির ওপর নির্ভর না করতে দেশগুলোর প্রতি আহŸান জানিয়ে ডবিøউএইচওর মহাপরিচালক বলেন, ‘যদি দেশগুলো শুধু টিকাদান কর্মসূচির ওপর নির্ভর করে, তাহলে তারা ভুল করছে।’ আমেরিকার বিখ্যাত ফার্মাসিটিক্যালস এজেন্সি ইনটাস গ্রæপের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবিদুর রহমান এক সাক্ষাতকারে বলেন, করোনার ভ্যাকসিন আসাটা নিঃসন্দেহে স্বস্তির খবর। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এই ভ্যাকসিন আমাকে আপনাকে করোনার ঝুঁকিমুক্ত করবে না। ভ্যাকসিন নেয়ার পরও সবাইকেই পরবর্তী কিছু দিকনির্দেশনা মানতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে নির্দেশনা দিয়েছে সেই আলোকেই সবাইকে থাকতে হবে। আর এ জন্য বিধিবিধানগুলোর বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। জনগণকে সচেতন করতে হবে। খুলনা সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াজ মাহমুদ বলেন, আমরা প্রচারপ্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি মানুষকে সচেতন থাকার জন্য। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি এবং আগামী সপ্তাহে আমরা ডিসি মহোদয়ের সাথে একটি মিটিং করবো কিভাবে মানুষকে আরো বেশী সচেতন এবং খুলনায় আগের মত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যায় কি না সে ব্যাপারে অবহিত করবো। খুলনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ইউুসপ আলী বলেন, অন্যান্য এলাকার তুলনায় আমরা যে ভুমিকা রেখেছি গত নভেস্বর মাসে তা বেশ প্রশংশিত হয়েছে। বর্তমানে সারাদাশেরে সাথে তুলনা করে আমরা যদি মনে করি খুলনায় সংক্রমণের হার বাড়ছে। আমরা ব্যবস্থা নিবো।