খুলনায় দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু : মালিক-শ্রমিকের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

0
451

কামরুল হোসেন মনি:
খুলনায় বিভিন্ন রুটে পর্যাপ্ত বাস নেই, সীমিত আকারে চলছে বাস। বাস শ্রমিকদের রাস্তায় গাড়ি চালানোর জন্য অনুরোধ করলেও তারা অপারগতা প্রকাশ করছেন এমন বক্তব্য মালিক সমিতির। ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় মালিকরাই গাড়ি রাস্তায় নামাচ্ছেন না পাল্টা অভিযোগ শ্রমিক সংগঠনের। ফলে পরিবহণ সঙ্কট থাকায় সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
জানা যায়, খুলনার অধিকাংশই পরিবহণের ফিটনেস, রুট পারমিট ও কাগজপত্র ত্রুটি থাকার কারণে সড়কে মালিকরা বাস রাস্তায় নামাচ্ছেন না। আবার ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু হওয়ার কারণে কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় জরিমানা আতঙ্কে বাস নামানো হচ্ছে না সড়কে। যার কারণে নিরাপত্তার অজুহাত ও শ্রমিকদের বাস চালাতে অনীহা থাকায় সব রুটে বাস চলাচল সীমিত রয়েছে এমন অভিযোগ বাস মালিকদের। অন্যদিকে বাস শ্রমিকদের দাবি তাদের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে। বাসের কাগজপত্র আপডেট না থাকার কারণে মালিকরাই সড়কে বাস নামাচ্ছেন না।
খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক কোচ সমিতির আওতাধীন খুলনা-সাতক্ষীরা, খুলনা-পাইকগাছা, খুলনা-চালনা রুটে বাস চলাচল করে। এর বাইরে ওই সমিতি ও রূপসা-বাগেরহাট বাস-মিনিবাস যৌথভাবে সোনাডাঙ্গা থেকে ১২টি গাড়ি চলাচল করে। জেলা বাস-মিনিবাস মালিক কোচ সমিতির আওতাধীন সাতক্ষীরা রুটে ৭০টি, পাইকগাছায় ১৭৪টি ও খুলনা-চালনা রুটে ১২টি বাস চলাচল করে। এর বাইরে আন্তঃজেলা বাস-মিনিবাস কোচ সমিতি ও রূপসা-বাগেরহাট বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির ব্যানারে কয়েকশ পরিবহণ বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে।
খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ আনোয়ার হোসেন সোনা বলেন, কিছু রুটে কয়েকটি গাড়ি চলাচল শুরু করেছে। আজ থেকে গাড়ি সব রুটে চলাচল করবে। সব রুটে গাড়ি না চলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাত্রী কম পাওয়ায় গাড়ি ছাড়া হচ্ছে না আবার গাড়ির কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় কিছু রুটে গাড়ি কম চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, সব রুটে গাড়ি চলাচল করছে দাবি করে বলেন, ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু হওয়ার কারণে যে মালিকদের গাড়ির কাগজপত্র আপডেট নেই তারা রাস্তায় গাড়ি নামাচ্ছেন না। শ্রমিকরা গাড়ি চালাচ্ছেন মালিক সমিতির এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সব বাস চালকদের চালানোর লাইসেন্স রয়েছে। তাহলে কেন শ্রমিকরা গাড়ি চালাতে অনীহা প্রকাশ করবে।
খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক কোচ সমিতির নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, শ্রমিকরাই গাড়ি চালাতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। আমরা গাড়ি চালাতে শ্রমিকদের অনুরোধ করছি। কিন্তু শ্রমিকরা রাস্তায় গাড়ি চালাতে রিস্ক নিচ্ছেন না, সড়কে যান চলাচলের আইন শিথিল না হওয়ায়। তিনি বলেন, তাদের সমিতির আওতাধীন গাড়ি ছাড়ার কোন স্লীপ পাননি। যশোরে কিছু গাড়ি ও গোপালগঞ্জে রুটে কিছু গাড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে (র‌্যাডিসন হোটেলের উল্টোদিকে) বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতকরণসহ ৯ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এ সব দাবিতে খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। এরপর সড়কে গণপরিবহণ নামানো বন্ধ করে দেন মালিকরা। শিক্ষার্থীদের এসব দাবি সরকার মেনে নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শিথিল করেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত খুলনার বিভিন্ন রুটে স্বাভাবিকভাবে বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি।