খুলনার ৬টি আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইছেন আ’ লীগের একঝাঁক নতুন মুখ

0
139

নিজ নিজ সংসদীয় এলাকায় সরব সম্ভাব্য প্রার্থীরা


শেখ নাদীর শাহ্:

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খুলনার ছয়টি আসনে সরকার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী এক ঝাঁক নতুন মুখ নিজ নিজ এলাকায় ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রতিদিন এসকল সম্ভাব্য প্রাথীরা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি জাতীয় উৎসবে সামিল হচ্ছেন। নিজেদের প্রার্থীতা জানান দিতে পোষ্টার, প্যানা দিচ্ছেন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বার্তা জনগনের কাছে লিফলেট আকারে পৌঁছে দিচ্ছেন। খুলনা জেলা ও মহানগরে ৬টি আসন রয়েছে। এই ছয়টি আসনের মধ্যে বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচনে খুলনা-২ আসনটি বিএনপির দখলে থাকলেও পরবর্তী ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে খুলনার ছয়টি আসনই ক্ষমতাসীন আ’লীগের দখলে রয়েছে।

সম্ভাব্য প্রার্থীরা সরব। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আ’লীগে প্রতিটি আসনের বিপরীতে রীতিমতো প্রার্থী জট। একাধিক আসনে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে, আসতে পারে নতুন মুখ। বিগত ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা এবং দলীয় কর্মসূচিতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণা, প্যানা-ফেস্টুন দৃশ্যত চোখে পড়ার মতো।

সূত্রমতে, গেল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসনে আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে ৩৯ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী আবেদনপত্র গ্রহণ ও জমা দিয়েছিলেন। যার মধ্যে খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল একমাত্র মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি একক প্রার্থী এমন সম্ভাবনায় এ আসনে দৃশ্যত সম্ভাব্য প্রার্থীর প্রচারনা নেই। বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনে সর্বাধিক আবেদনপত্র জমা পড়েছিল খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে ১৪ জন। আগামী নির্বাচনেও খুলনার একাধিক আসনের প্রার্থী পরিবর্তনের গুঞ্জন উঠেছে।

বর্তমান একাধিক সংসদ সদস্য নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। ফলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও দলীয় প্রতিবেদনে উঠে আসা বিতর্কিত বর্তমান সংসদ সদস্যরা রিতীমত মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কায়ও রয়েছেন। ওই সকল আসনে ‘ক্লিন ইমেজ’র জনপ্রিয় প্রার্থীদেরকেও খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ এমনটাও শোনা যাচ্ছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এখন পর্যন্ত খুলনার প্রতিটি আসনেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি একঝাঁক নতুন নতুন মুখ।

খুলনার আসন গুলো থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন যারা:

খুলনা-১ (দাকোপ ও বটিয়াঘাটা) আসনে আ’লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দলীয় হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস, সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল, সংরক্ষিত সংসদ সদস্য এড. গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার ও জেলা আ’লীগ নেতা শ্রীমন্ত অধিকারী রাহুল। তবে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সোহেল দলীয় মনোনয়ন পেলে অবাক হবেন না দলীয় নেতা-কর্মীরা।

খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে একমাত্র প্রার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র বর্তমান সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল।

খুলনা-৩ (খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, আ’লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, নগর আ’লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক শেখ মোঃ ফারুক হাসান হিটলু এবং পাকিস্থান পার্লমেন্টের সাবেক সদস্য রুস্তম আলীর ছেলে শেখ মোঃ আজাদ করিম।

খুলনা-৪ (রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার শিল্পপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এখন প্রচার-প্রচারণা করছেন জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ সুজিত অধিকারী, যুগ্ম-সম্পাদক শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু ও জেলা আ’লীগের যুগ্ন- সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান জামাল, প্রয়াত সংসদ সদস্য ও সংসদের হুইপ এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার ছেলে ও জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম খালেদীন রশিদী সুকর্ণ এবং নগর যুবলীগের আহবায়ক শফিকুর রহমান পলাশ। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য জড়িয়ে পড়েছেন নানা বিতর্কে।

খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া ও ফুলতলা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, জেলা আ’লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অজয় সরকার, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতি ও সদর থানা আ’লীগের সভাপতি এ্যাডঃ সাইফুল ইসলাম এবং অর্থনীতিবিদ ড. মাহাবুব উল ইসলাম ও খুলনা জেলা আ’লীগের নির্বাহী সদস্য আবাসন ব্যাবসায়ী আজগর বিশ্বাস তারা মনোনয়ন প্রত্যাশী। এদিকে ইতোমধ্যে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্যানায় ডুমুরিয়া ও ফুলতলাবাসীর মাঝে উষ্ণতা ছড়িয়েছেন এ্যাডঃ সাইফুল ইসলাম।

খুলনা-৬ (কয়রা ও পাইকগাছা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্জ্ব আকতারুজ্জামান বাবু ছাড়াও এ আসনটিতে খুলনার সর্বাধিক প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. সোহরাব আলী সানা, জেলা আ’লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান জামাল, জেলা আ’লীগের কোষাধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার জি এম মাহবুবুল আলম, প্রয়াত সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হকের ছেলে ও জেলা আ’লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলাম রাসেল, জেলা সদস্য শেখ মনিরুল ইসলাম, জেলা আ’লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ মোহাঃ শেখ শহীদ উল্লাহ এবং ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডল। এছাড়াও পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুল হাসান টিপুসহ কয়রা উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম সাইফুল্লাহ আল মামুনও ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন।