কয়রায় করোনার কারণে কিস্তি আদায় বন্ধে প্রশাসনের চিঠি

0
318

কয়রা প্রতিনিধি: করোনায় ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ, নেই কোন কাজ কর্ম কিন্তু তাতেও থেমে নেই কয়রায় এনজিও কর্মীদের কিস্তির টাকা আদায়।
এদিকে এনজিও কর্মীরা তাদের কিস্তির টাকা নিতে বাড়িতে এসে বসে থাকে। তারা এখন টাকা কোথায় পাবে? এভাবে দুঃখের কথাগুলো বলেছেন কয়রা উপজেলার বেশকিছু গ্রামের হতদারিদ্র লোক। যারা দিনে এনে দিনে খায়। কাজ না করলে পেটে ভাত জোটে না। কিছুদিন আগে স্বাভাবিক থাকলেও বর্তমানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি গ্রামের রাস্তা ফাঁকা। রাস্তায় কোন লোকজন নাই। এক অটো ভ্যান চালক আমিরুল বলেন, প্রায় এক ঘন্টা রিক্সা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। এখনো একটা ভাড়াও পাইনি। লোকজন ঘর হতে বের না হওয়ার কারণে যাত্রী পাওয়া যায় না পেলেও খুব কম। আগে ৫শ’ টাকা ইনকাম করা গেলেও এখন ২শ’ টাকাও আয় করা যায় না। চিন্তা করছি কি খামু? কিভাবে কিস্তি পরিশোধ করমু? ঘর ভাড়া কই পামু?
স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল বলেন, এই সংকটের সময়ে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি উত্তোলন স্থগিত করা হোক। না হয় মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আরও অতিষ্ঠ হবে প্রান্তিক জনজীবন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মাঠ পর্যায়ের এনজিও কর্মী জানান, ঋণ বিতরণ করার পর উত্তোলন করার দায়িত্ব আমাদের। কেউ কিস্তি না দিলে পকেট থেকে অফিসকে দিতে হয়। আমাদেরও চাকরি বাঁচাতে হবে। সরকার কিস্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত দিলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। চাকরি করতে হলে অফিস যা বলবে আমাদের তাই করতে হবে।
করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এনজিওদের ঋনের কিস্তি জনগণ স্বেচ্ছায় দেয়া ছাড়া বন্ধ রাখতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন স্যারকে চিঠি প্রদান করা হয়েছে বলে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেন কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহা । তিনি আরও বলেন এ ব্যাপারে স্থানীয় এনজিও সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে বিষয়টি নিয়ে ২৪ মার্চ সন্ধ্যায় বসার কথা আছে বলে জানান।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটারী অথরিটি কতৃক প্রেরিত সূত্রোক্ত স্মারকে বর্তমানে করোনা ভাইরাস জনিত কারণে বিশ্ব বাণিজ্যের পাশাপাশি দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাবে প্রতিষ্ঠানের ঋণ শ্রেণীকরণ ও ঋণ আদায় সংক্রান্ত নির্দেশনা মোতাবেক আগামী ৩ জুন ২০২০ পর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণ এর কিস্তি আদায় কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছ। তবে কেউ স্বেচ্ছায় ঋণ পরিশোধ করলে তা গ্রহণ করা যাবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সবশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ৩৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, আরা মারা গেছেন চারজন।
করোনার বিস্তার রোধে এরই মধ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সেনা মোতায়ন করা হয়েছে, সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এমনকি খুলনা জেলাকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।